কলকাতা, 29 নভেম্বর : জাতীয়স্তরে সংগঠন বিস্তার করার লক্ষ্যে সংবিধানে বদল আনতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC to change party constitution for national expansion plan) ৷ সোমবার তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল (TMC Working Committee Meeting) ৷ পাশাপাশি জাতীয় স্তরে দলের সংগঠন বিস্তার সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষকথা বলবেন ৷ তাও এদিনের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়ে গেল ৷
তৃণমূলের সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, 1998 সালে দল তৈরি হওয়ার পর থেকে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য সংখ্যা 21 ৷ কিন্তু জাতীয় স্তরে সংগঠন বিস্তার করতে গেলে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন ৷ কারণ, বিভিন্ন রাজ্য থেকেই হেভিওয়েট নেতারা তৃণমূল যোগ দিচ্ছেন ৷ তাঁদের কাউকে কাউকে ওয়ার্কিং কমিটিতে জায়গা দেওয়া প্রয়োজন ৷ সেই কারণেই সংবিধান সংশোধন করা হবে বলে জানা গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন : TMC Working Committee Meeting : জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধিতার রূপরেখা তৈরিতে বৈঠক তৃণমূলের
এদিন সেই নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা হয় ৷ জানা গিয়েছে যে ধাপে ধাপে তৃণমূল কংগ্রেসকে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে উপস্থাপনের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্বে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে । কিভাবে এই পরিবর্তন আনা হবে, তাতে কী কী থাকবে তা নিয়ে এদিন ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা হয়েছে ।
এদিন কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে দলের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন এ রাজ্যের ওয়ার্কিং কমিটির 21 জন সদস্য । এছাড়া ছিলেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া দলের নেতা পবন বর্মা, মুকুল সাংমারা । বৈঠকের শুরুতেই সদ্য প্রয়াত রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয় । এরপর একে একে বক্তব্য রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরা ।
এদিনের এই বৈঠককে ঐতিহাসিক বলেছেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া পবন বর্মা । তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই মুখ । তাঁকে সামনে রেখেই 2024-এ লড়াই হবে । আজ দেশের যা অবস্থা তাতে এটা স্পষ্ট সারা দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে সবাইকে আন্দোলনে নামতে হবে । আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই এই দ্বায়িত্ব নিতে হবে ।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল একাই লড়াই করবে ৷ কংগ্রেসের অপেক্ষায় থাকবে না ৷ প্রসঙ্গত, গত কয়েকমাসে কংগ্রেস থেকে অনেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন ৷ তৃণমূলও আগামিদিনে যে বিজেপি বিরোধী পরিসরে কংগ্রেসের জায়গা নিতে চাইছে, সেটাও ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে ৷
এদিন ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে সেই সিদ্ধান্তই কার্যত নেওয়া হয়েছে ৷ তাছাড়া মনিপুরে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসা মুকুল সাংমা জানিয়েছেন যে কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ জি-23-র সদস্যরাও তৃণমূলে আসতে প্রস্তুত ৷ কিন্তু দল এখনও পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি ৷
সামগ্রিক পরিস্থিতিতে তৃণমূলও আগামী 2024-এ বিজেপিকে হারানোর বিষয়ে কনফিডেন্ট ৷ সেই আত্মবিশ্বাস এদিন শোনা গিয়েছে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের গলাতেও ৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলা ভারতবর্ষকে গত মে মাসেও পথ দেখিয়েছে । 2024 সালে সারা দেশকে পথ দেখাবে । দলের সংবিধান পরিবর্তন হবে । তবে তৃণমূল কংগ্রেসের ডিএনএ পরিবর্তন হচ্ছে না ।’’
আরও পড়ুন : TMC Jibe at Congress: কংগ্রেসের ব্যর্থতায় বিকল্প তৃণমূল, ‘জাগোবাংলা’য় সমালোচনার জবাব শাসকদলের
এদিকে এদিনের বৈঠকে ত্রিপুরা পৌরনির্বাচনের প্রসঙ্গও ওঠে ৷ সূত্রের খবর, ভোটের ফল নিয়ে সন্তোষপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মমতা ত্রিপুরায় যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ৷ অভিষেক চার মাসের পরিশ্রমে এই সাফল্যের প্রশংসা করেছেন ৷