কলকাতা, 6 অক্টোবর: লোকসভার খাদ্য এবং উপভোক্তা বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি (Lok Sabha Standing committee ) থেকে তাঁকে সরানো নিয়ে বিস্ফোরক তৃণমূল সংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, প্রতিহিংসার রাজনীতি করতেই সংসদের দু'কক্ষ মিলিয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী তৃণমূলকে কোনও স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হল না। এটা সংসদীয় ব্যবস্থায় একটা বিরল উদাহরণ হয়ে থাকবে (Sudip Banerjee slamed BJP)।
তিনি বলেন,"সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী নিজে আমায় বলেছেন, তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার রাজ্য বিধানসভায় (West Bengal State Assembly) এ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপিকে কোনও স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদ দেয়নি। পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির কথা মাথায় রেখেই তিনি একথা আমায় বলেছিলেন । আর তাই তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনও সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির পদে রাখা হবে না।" সুদীপের দাবি তিনি এনিয়ে রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন। স্পিকার তাঁকে জানিয়েছেন, এই ঘটনা সত্য নয়। রাজ্য বিধানসভায় বিজেপিকে পিএসসি থেকে শুরু করে মোট ৯টি স্ট্যান্ডিং কমিটির পদ দেওয়া হয়েছে। পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে তো বিজেপির নির্বাচিত বিধায়ক রয়েছেন। দায়িত্ব পাওয়ার পরে তিনি কোনও দলে থাকছেন, না চলে যাচ্ছেন সেটা দেখা স্পিকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। উত্তর কলকাতার সাংসদের আরও দাবি, বিধানসভায় বিজেপিকে ৯ টি ট্রেন্ডিং কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা বলেছে পিএসসি-র দায়িত্ব না পেলে কোনও কমিটির দায়িত্ব-ই নেবে না। আর সে কারণেই তারা কোনও কমিটিরই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেছে। কিন্তু সংসদে তৃণমূল কংগ্রেস তো এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। তাহলে তৃণমূলের সঙ্গে কেন এমন আচরণ করা হচ্ছে। সংসদের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী হয়েও তৃণমূলের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ সংসদীয় রীতিনীতি পরিপন্থী। তার মতে,তৃণমূলই একমাত্র দল যাদের লোকসভা, রাজ্যসভা মিলিয়ে ৩৫ জন সাংসদ রয়েছে। দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলের থেকে সুপরিকল্পিতভাবেই সমস্ত পদ কেড়ে নেওয়া হল।
আরও পড়ুন: পড়ুয়া বোঝাই বাসে দুর্ঘটনা, কেরলে মৃত কমপক্ষে 9
এদিকে সুদীপের এই বক্তব্যের পালটা দিয়েছে বিজেপিও। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র তথা প্রাক্তন বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেস এখন যে কথা বলছে এই কথা আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি। পরিষদীয় রাজনীতিতে কোনও রীতিনীতি ধার ধারে না তৃণমূল। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসাবে বিজেপির যেখানে পাবলিক অ্য়াকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া উচিত সেখানে এ রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস সেই চেয়ারম্যান পদটি নিজেদের হাতেই রেখেছে। এহেন অবস্থায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখে অন্তত এ ধরনের কথা মানায় না। মুখ্যমন্ত্রী জেলায় জেলায় গিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। অথচ বিরোধী বিধায়কেরা সেই বৈঠকে ডাক পান না। নিজের বিধানসভা ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ পর্যন্ত পান না বিজেপি বিধায়করা। বিজেপি সাংসদদের তহবিলের টাকা পুরসভা থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত গুলি খরচ পর্যন্ত করে না। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে ঠিকমতো কর্মসূচি পালন করতে পারেন না। এরপরেও তৃণমূলের মুখে এ ধরনের বক্তব্য শোভা পায় না। তবে একটা কথা বলতে পারি এই ঘটনার সঙ্গে সংসদের কোনও কমিটির চেয়ারম্যান পদে তৃণমূলকে না রাখার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা সম্পূর্ণভাবে অধ্যক্ষের বিষয়। আমার ধারণা যা করা হয়েছে রুলবুক মেনেই করা হয়েছে।"