কলকাতা, 13 মে : 2011 সালের পরবর্তী বাংলা রাজনীতিতে 13 মে একটি ঐতিহাসিক দিন । 11 বছর আগে আজকের দিনেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাম সরকারকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল (Trinamool Congress) । তাই এই দিনটিকে ঘিরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস স্বাভাবিক৷ সোশ্যাল মিডিয়াতে তার প্রভাব চোখে পড়ছে শুক্রবার সকাল থেকেই ৷
তৃণমূলের এই সময়ে যাঁরা সরাসরি ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন, তাঁদের অনেকেই আজ নিজেদের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ৷ সেই তালিকায় অন্যতম তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (TMC Leader Kunal Ghosh) ৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘ঐতিহাসিক 2011... পরিবর্তন । ঘরের মেয়েকে বাংলার আশীর্বাদ । সামনে এখনও দীর্ঘ পথ চলা । দিদিই দল ও সরকারের প্রাণ, শক্তি, মুখ, শেষ কথা ।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Bengal CM Mamata Banerjee) সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chatterjee) এই দিনটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা যারা ডানপন্থী রাজনীতি করি, তাঁদের কাছে 13 মে-এর গুরুত্ব অপরিসীম । কারণ, একের পর এক নির্বাচনে যখন বামফ্রন্টকে অপরাজিত মনে হচ্ছিল, বাংলার মানুষ কিন্তু তখন নীরবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁদের ভাগ্যবিধাতা হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন । কাজেই এই দিনটা তৃণমূল কংগ্রেস তথা বাংলার মানুষের কাছে ছিল দ্বিতীয় স্বাধীনতা পাওয়ার মতো ।’’
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এক্ষেত্রে এই দিনটিতে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, তাই নয় । তারপর থেকেই শুরু হয়েছে একটু একটু করে বাংলাকে পিছিয়ে পড়া তৃতীয় শ্রেণীর রাজ্য থেকে প্রথম শ্রেণীর রাজ্য হিসাবে তুলে আনার লড়াই । আজ পশ্চিমবঙ্গ কোথায় তা বাংলার সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কার । উন্নয়নের মানচিত্রে একটা সময় একদম শেষের দিকে থাকা একটা রাজ্য আজ ঝকঝকে রাস্তা, চকচকে আলো, আর মাথা তুলে বাঁচার অধিকার পেয়েছে ।’’
তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘শুধু তাই নয় জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সামাজিক প্রকল্প মানুষকে দিয়েছে কঠিন সময়ে পরিত্রাণ । কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার মহিলাদের দিয়েছে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বীকৃতি । কাজেই আজকের দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম ।’’
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী, পালাবদলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সৈনিক তথা তৃণমূল খেতমজুর সংগঠনের সভাপতি পূর্ণেন্দু বসু বলছেন, ‘‘যারা আজকের প্রজন্ম, তাঁরা অনেকেই হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই, এই পালাবদলের দিনটির গুরুত্ব জানেন না । আজকের দিনে দাঁড়িয়ে হয়তো তাঁদের কাছে এটা নিছক সাধারণ একটা দিন । তবে আমরা যাঁরা নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর দেখেছি, আনন্দমার্গী, বা মরিচঝাঁপির ইতিহাস জানি- তাঁরা জানি আন্দোলনের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসক হিসাবে উত্থানের পিছনে কতটা পরিশ্রম ছিল । আর তাই এই দিনটার গুরুত্ব আমাদের প্রত্যেকটা তৃণমূল কর্মীর কাছে বিশেষ ।’’
তাঁর কথায়, ‘‘আজকে একটা বিশেষ দৌড় শুরু হয়েছে । যেখানে বিভেদকামী শক্তি আমাদেরকে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করছে । এই অবস্থায় আমাদের উচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত আরও শক্ত করা । যে লড়াইয়ের পর আজকের এই সোনালী দিন এসেছে, তা যেন এই বিভাজনকারী শক্তি নষ্ট করতে না পারে ।’’
আরও পড়ুন : Ratan Tata on Nano : তৃণমূলের জয়ের একাদশ বর্ষপূর্তির আগে রতন টাটার ন্যানো-স্মৃতিচারণের নিশানায় কি মমতা ?