কলকাতা, 10 ফেব্রুয়ারি : ফের চর্চায় খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ড৷ কারণ, ওই ঘটনার মূল অভিযুক্ত কওসরের সাজা হয়েছে আজ, বুধবার৷ তাকে 29 বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে কলকাতা নগর দায়রা আদালতের বিশেষ এনআইএ আদালত৷ তাই এই প্রেক্ষাপটে একনজরে দেখে নেওয়া যাক যে বর্ধমানের উপকণ্ঠে ঘটে সেই বিস্ফোরণ কাণ্ডকে৷
2014 সালের বর্ধমান বিস্ফোরণ
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়৷ সেখানে একটি ভাড়াবাড়িতে 2014 সালের 2 অক্টোবর বোমা বিস্ফোরণ হয়৷ সেই বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল মারাত্মক৷ এনআইএ-র বিবৃতি অনুযায়ী, সেখানে জেএমবি জঙ্গিরা ঘাঁটি গেঁড়ে বসেছিল৷ আইইডি তৈরি করার সময় তাতে বিস্ফোরণ ঘটে৷ ওই ঘটনায় জেএমবির দু’জন জঙ্গি মারা যায় ওই বিস্ফোরণে৷ একজন আহত হয়৷ প্রথমে এই মামলা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল৷ পরে এনআইএ তদন্তভার নেয়৷
এনআইএ তদন্তে উঠে আসে যে জেএমবি তাদের ভারতে নিযুক্ত জঙ্গিদের অস্ত্র ও বিস্ফোরক সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল৷ এর মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলা করার পরিকল্পনা ছিল৷ এনআইএ বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল যে এই জঙ্গিরা ভারত ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাইছিল৷ তদন্তে আইইডি, বিস্ফোরক, হ্যান্ড গ্রেনেড, প্রশিক্ষণের ভিডিয়ো উদ্ধার হয়৷
এই ঘটনায় 33 জনকে অভিযুক্ত করা হয়৷ চার্জশিটে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়৷ 31 জনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ 2019 সালে 24 জনকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দেওয়া হয়৷
জেএমবি কী
জেএমবি 1998 সালে তৈরি করা হয়৷ তৈরি করে ইসলামিক মৌলবাদী আব্দুর রহমান৷ 2005 সালের অগস্টে বাংলাদেশে 300টি বিস্ফোরণের দায়িত্ব নেওয়ার আগে পর্যন্ত এই জঙ্গি সংগঠন সম্বন্ধে খুব বেশি তথ্য ছিল না৷ তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে ইসমালিক দেশ তৈরি করা৷ যেখানে শরিয়ত আইন চলবে৷ তারা আফগানিস্তানের তালিবানকে দেখেই এই সংগঠন তৈরি করেছিল বলে মনে করা হয়৷
আরও পড়ুন : খাগড়াগড় কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত কওসরকে 29 বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ
জেএমবি-র মূল লক্ষ্য ছিল মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া জেলায় 100 জন জঙ্গি তৈরি করা৷ 2014 সাালে জুলাই ও অগস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক মাদ্রাসায় জেএমবি নেতারা এসেছিলেন৷ বাংলাদেশের নবাবগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় এই নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷
জেএমবির ভারত যোগ
কয়েক বছর ধরেই গোয়েন্দারা মনে করছে যে দীর্ঘদিন ধরে জেএমবি পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি তৈরির কাজ করছে৷ এর জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ার মাদ্রাসাগুলি ব্যবহার করা হচ্ছিল৷ প্রথম লক্ষ্য ছিল টাকার যোগান দেওয়া এবং জঙ্গি নিয়োগ করা৷ সাতটি মাদ্রাসায় এই কাজ চলত বলেও সন্দেহ গোয়েন্দাদের৷