কলকাতা, 10 সেপ্টেম্বর : মর্তে মা দুর্গার আগমনের সঙ্গে সরস্বতীর বিরাজমান হওয়ার রেওয়াজ বহুদিনের । অর্থাৎ দুর্গাপুজোর (Durga Puja) সঙ্গে শারদীয়া পত্রিকার সংযোগ অবিচ্ছেদ্য । শারদোৎসব শুরুর কয়েকমাস আগেই শুরু হয়ে যায় শারদীয়া সংখ্যার (Puja Magazine) প্রকাশ ৷ বিক্রিও হয় হু হু করে ৷ কিন্তু করোনাকালে (Covid Pandemic) বিক্রি অনেকটাই কমেছিল ৷ এবার পরিস্থিতি তার থেকে কিছুটা ভালো হলেও বিক্রি আগের মতো হয়নি বলেই ব্যবসায়ীদের দাবি ৷
বাংলা ভাষায় বহু পুজো বার্ষিকী প্রকাশিত হয় ৷ বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা যেমন শারদীয়া পত্রিকা প্রকাশিত করে ৷ পাশাপাশি বিভিন্ন সংবাদপত্রের শারদীয়া পত্রিকা রয়েছে ৷ কোনও পত্রিকায় ছোট-বড় সকলের জন্য লেখা থাকে ৷ আবার কোনও কোনও পত্রিকা শুধু ছোটদের জন্য, মহিলাদের জন্য প্রকাশিত হয় ৷
আর এর পাঠক সংখ্যাও নেহাত কম নয় ৷ পুজোর অনেক আগেই শেষ হয়ে যায় বিক্রি ৷ এবারও অধিকাংশ পুজো বার্ষিকী প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে ৷ যে ক’টি বাকি আছে,সেগুলি প্রকাশিত হবে মহালয়ার আগেই ৷ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গতবছর বাজার একবারে মন্দা ছিল ৷ এবার তেমনটা নয় । তবে 2020 সালে করোনা এবং আমফান ঝড়ের জেরে প্রকাশনী সংস্থা এবং প্রিন্টিং প্রেসগুলির ব্যাপক ক্ষতি হয় । তাই গতবার বাজারে বই আসতে কিছুটা দেরি হয়েছিল । তবে এই বছর সময় মতোই দোকানে দোকানে পৌঁছে গিয়েছে বাঙালির সাহিত্যের শারোদ সম্ভার ।
এক মহিলা দোকানি নমিতা দাস বলেন, "প্রায় সমস্ত বই চলে এসেছে । তবে বাজার তেমন ভালো নয় । আসা করি মহালয়ার পর বাজার কিছুটা উঠবে । গত দুই বছরের তুলনায় এ বছর নানা ধরনের সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে । গল্পের বৈচিত্র্যও অনেক বেশি ।"
তিনি আরও বলেন, "তবে এই বছর প্রায় সবকটি বইতেই 20 টাকা করে বেড়েছে । বহু বইপ্রেমী যারা বই কিনতে আসছেন দাম বাড়ার ক্ষেত্রে অসন্তোষ প্রকাশ করছে । আবার অনেকেই আবার একসঙ্গে অনেকগুলি করে বই কেনেন, তারা পাঁচটা বইয়ের জায়গায় তিনটি বা দু’টি বই কিনছেন ।"
দোকানিরা জানাচ্ছেন, অনলাইনের যুগে এখন বহু প্রকাশনী সংস্থার বই অনলাইনেই পড়া যাচ্ছে ৷ তাই অনলাইনের দৌরাত্ম্যের বই কিনে পড়ার চলটা এমনটাই অনেকটা লাটে উঠেছে । ফলে কমেছে বই কিনে বই ছুঁয়ে পড়ার রেওয়াজ ।
তবে আর এক দোকানি অজয় দাস কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন । তিনি বলেন, "শুধু শারদীয়া সংখ্যাই নয়, অনলাইনের দাপটে মাঝের একটা সময় এমনি বইয়ের বিক্রিও খুব মন্দা ছিল । তবে এবার বইপ্রেমীরা দোকানমুখী হচ্ছেন । কারণ, বইপ্রেমীরা বুঝছেন যে বই কিনে পড়ার যে মজা, তা অনলাইনে পাওয়া যায় না । তাই আমাদের আশা এবছর পুজো সংখ্যার কাটতি ভালোই হবে ।"
আর এক দোকানি নিতাই দাস বলেন, "হাতে বাকি আর ক’টা দিন । আগে এই সময়ের মধ্যে অনেক বই বিক্রি হয়ে যেত ঠিকই । তবে এবছর এখনও তেমন ভাবেই বাজার না উঠলেও আমাদের বিশ্বাস ব্যবসা মন্দ হবে না ।"
আরও পড়ুন : ঐতিহ্যের স্বীকৃতির কাহিনি ফুটে উঠেছে চালতা বাগান সার্বজনীনের মণ্ডপে