কলকাতা, 5 মে: পাঠকের হাতে পছন্দের বই তুলে দিতে শুরু হল হোম ডেলিভারি। লকডাউনে পছন্দের বই বাড়ি বসে অর্ডার দিলেই পেয়ে যাবেন পাঠক। এবার এমন উদ্যোগই নিল বই প্রকাশক ও বেশ কিছু বইয়ের দোকান। যেহেতু কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে থাকা বই বিপনীতেও লকডাউনে মধ্যে পাঠকের পক্ষে আসা কঠিন, সে কথা ভেবেই বাড়িতে বই পৌঁছে দেওয়ার এই পরিকল্পনা।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যে কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে থাকা বইয়ের দোকানগুলি খোলা যাবে। তবে শপিংমলের ভেতরের বইয়ের দোকান বন্ধই থাকবে। এদিকে প্রায় দেড় মাস বন্ধ রয়েছে বইয়ের দোকানগুলি। যার ফলে লকডাউনে বড়সড় আর্থিক ধাক্কার মুখে পড়েছে রাজ্যের বইবাজার। এ অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ঘোষণায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছিল কলেজ স্ট্রিট। যদিও মঙ্গলবার সকালে কলেজ স্ট্রিটের কয়েকটি দোকান খোলা হলে পুলিশ এসে দোকানগুলি বন্ধ করে দেয়।
এমনিতে কলেজ স্ট্রিট চত্বরের বেশিরভাগ বইয়ের দোকান কলকাতা পৌরনিগমের 44 নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। বর্তমানে যে ওয়ার্ডটি কনটেনমেন্ট জোনের তালিকাভুক্ত নয়। যদিও এই ওয়ার্ড সংলগ্ন 48 নম্বর ওয়ার্ডটি কনটেমেন্ট জোনের আওতায় পরে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও বইয়ের দোকান খোলা রাখা নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে, পাশাপাশি দোকান খোলা থাকলেও গণপরিবহনের অভাবে বইপাড়ায় পাঠকের পক্ষে আসা কঠিন। এ অবস্থায় বইয়ের হোম ডেলিভারিতেই সমাধানের পথ খুঁজছে বই বিক্রেতারা।
এই প্রসঙ্গে আজ পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রকাশনা পত্রভারতীর কর্ণধার ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বেশ কয়েকটি বাংলা ও ইংরেজি প্রকাশনা তাদের ই-কমার্স সাইটে বই বিক্রি করছেন। আবার অনেকেই পাঠককে বাড়িতে বই পৌঁছে দিতে শুরু করেছেন। তবে, বইপাড়ার দোকান থেকে পাঠকরা ছাড়াও বই কেনেন রাজ্যের বিভিন্ন ছোটো-বড় বইয়ের দোকান। যারা এই মুহূর্তে বই কিনতে পারছেন না। পাশাপাশি ফুটপাতের ছোট দোকানগুলিও খোলা যাচ্ছে না।"
এই বিষয়ে মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্সের ইন্দ্রানী রায় বলেন, "আমাদের বইয়ের দোকানটি কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে। তা সত্ত্বেও দোকান খোলা হলে পুলিশ এসে বন্ধ করতে বলে। তাই আপাতত বই কুরিয়ার করছি আমরা। এছাড়াও কাছাকাছির মধ্যে হলে আমাদের কর্মীরাই পাঠকের বাড়িতে বই পৌঁছে দিচ্ছে।"
সিঙ্গুরের একটি বইয়ের দোকান গ্রন্থমিতা-র মালিক মিতালি চক্রবর্তী বলেন, "দেড় মাস হল দোকান বন্ধ রয়েছে। নতুন ঘোষণার পর কীভাবে দোকান খোলা হবে, কতক্ষণ খোলা থাকবে সেই বিষয়ে পরিকল্পনা করছি। তবে, সামাজিক দূরত্বের কারণে দোকান খোলা হলেও পাঠকরা কতখানি বই কিনতে আসবেন তা জানি না। তাই আমরাও পাঠকদের বাড়িতে বই পৌঁছে দেওয়ার চিন্তাভাবনাই করছি।"