কলকাতা, 30 ডিসেম্বর: বছরের শেষ রাত মানেই হই-হুল্লোড়, পার্টি, উল্লাস । তবে এ বছর কোরোনার কারণে উৎসবে ছেদ পড়ছে । তবু বড়দিনে কলকাতা শহর দেখেছে রেকর্ড ভিড় ৷ যা দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে প্রশাসনের কপালে । তাদের চিন্তা, এই যদি 25 ডিসেম্বরের হাল হয়, তবে বছর শেষে কী হবে ? বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বর্ষবরণের রাতে যেন "মাস গ্যাদারিং" না হয় । কোভিড সতর্কতা যেন একইভাবে পালন করা হয় ৷ কারণ, সংক্রমণ কিছুটা কমলেও আমরা এখনও মহামারীর মধ্যেই রয়েছি ৷ বর্ষবরণের রাতে যেন বাড়তি জমায়েত না হয়, মঙ্গলবার এমন নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টও। তবে কোরোনাকালে অনেক ক্ষেত্রেই লাগাম টানা হচ্ছে উৎসবে । অনেক জায়াগায় নিউ ইয়ার ইভ-এর অনুষ্ঠান, পার্টি বাতিল হয়েছে । তাছা়ড়া বড়দিনের লাগাম ছাড়া ভিড় থেকে শিক্ষা নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশও । জানা গিয়েছে, পানশালা থেকে রেস্তরাঁ, নাইট ক্লাব থেকে কলকাতা শহরের হোটেলগুলিতে থাকবে পুলিশি নজরদারি ।
আলিপুর রোডের অভিজাত পাঁচতারা হোটেলের তরফে জানানো হয়েছে, নিউ ইয়ার ইভ-এ এ বছর আলাদা করে কিছু হচ্ছে না । তবে তাদের রেস্তরাঁগুলি মাঝরাত পর্যন্ত খোলা থাকবে । সেখানে আসতে হলে প্রিবুকিং করতে হবে ।
আরও পড়ুন: ক্যাথিড্রাল চার্চে ক্রিসমাস উদযাপন
ধর্মতলা চত্বরের একটি পাঁচতারা হোটেল-এর মার্কেটিং অ্যান্ড কমিউনিকেশনস ম্যানেজার মধুমিতা বসু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সাধারণত আমাদের গ্রেট বলরুমে প্রতি বছর 31 ডিসেম্বর রাতে বিশেষ পার্টির আয়োজন করা হয় । অন্যান্য বছর পার্টিতে 600 থেকে 700 জনের ভিড় হয় । এ বছর তা কাটছাঁট করে 200 জনে নামিয়ে আনা হয়েছে । বিকেল চারটে থেকে শুরু করে পার্টি, চলবে রাত একটা পর্যন্ত । এবার বলরুমে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি । বলরুমে বসার ক্ষেত্রে দুটি টেবিলের দূরত্ব প্রায় ছয় ফুট করা হয়েছে । টেবিল পেতে গেলে আগে থেকে বুক করতে হবে । অন্যান্য স্বাথ্যবিধিও মানা হবে ।"
আরও পড়ুন:ক্রিসমাস উপলক্ষে পাহাড় সেজে উঠলেও ভিড় নেই পর্যটকদের
হুল্লোড়ে সব ভুলে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বড় বিপদ ঘটে যাবে, বলছেন চিকিৎসকরা ৷ কলকাতা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের জেনেরাল মেডিসিন বিভাগের অধিকর্তা, চিকিৎসক বিশ্বজিৎ ঘোষদস্তিদার বলেন, "সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলির ক্ষেত্রে আমরা যেন রিলাক্সড না হই । উলটে উৎসবে বেশি সতর্ক হওয়া উচিত। আইন করে, গণমাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে নতুন বছরের উৎসবে শামিল হওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে মানুষকে ৷ হোটেল হোক বা পিকনিক স্পট, বাড়িতে, রাস্তাঘাটে মাস গ্যাদারিং বন্ধ করতে হবে । "
একটি বেসরকারি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের কনসালটেন্ট চিকিৎসক সৌতিক পান্ডা বলেন, "তথ্য অনুযায়ী কোভিড সংক্রমণ কমেছে । কিন্তু, আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই । হাইকোর্টের রায় মেনে দুর্গাপুজো, মহরম পালিত হয়েছিল । 25 ডিসেম্বরে রায় ছিল না । যে কারণে রাস্তায় মানুষের ঢল দেখেছি আমরা । এমন হলে হবে না । যতদিন না ভ্যাকসিন আসছে, ততদিন পর্যন্ত আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই ।"