কলকাতা, মে 1 : করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে খাস কলকাতায় । সেই সঙ্গে উঠে আসছে একের পর এক মৃত্যু পরবর্তী করুণ এবং মর্মান্তিক সব ছবি ৷ যা একেবারেই খাপ খায় না বাঙালির ভালবাসার শহর কলকাতার সঙ্গে । তেমনি দুই করুণ কাহিনীর কথা উঠে এল কলকাতার শনিবারের সকালে ।
এদিন রিজেন্ট পার্ক থানার অন্তর্গত পূর্ব পুঁটিয়ারিতে মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করলেন 81 বছরের এক বৃদ্ধ । শনিবার সকালে তাঁর শোয়ার ঘরের দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে লোকাল থানার পুলিশ । মৃতের আত্মীয়রা জানাচ্ছেন যে, গত 29 এপ্রিল তাঁর করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে এবং এর পরেই আতঙ্কিত এবং অবসাদে ভুগতে থাকেন তিনি ৷ পুলিশের ধারণা, সম্ভবত সেই অবসাদ থেকে বেঁচে থাকার ইচ্ছে চলে যায় বৃদ্ধের এবং অবশেষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
অপর মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট থানার অন্তর্গত ফার্ন রোডে । করোনাতে মৃত 49 বছর বয়সী সন্ধ্যা মাহাতোর দেহ ঘণ্টার পর ঘন্টা পরে থাকে তাঁর ফ্ল্যাটে । প্রতিবেশীরা অনেকক্ষণ কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে খবর দেন লোকাল থানায় । খবর পাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ ৷ মৃত্যুর প্রায় 6 ঘণ্টা পরে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে সন্ধ্যাদেবীর দেহ উদ্ধার করা হয় । ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্য এবং আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের কালে একের পর এক এইরকম মৃত্যু পরবর্তী মর্মান্তিক, অমানবিক এবং করুণ কাহিনীর কথা উঠে এসেছে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে থেকে । যেখান মৃত্যুর পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাড়িতেই পড়ে রয়েছে মৃতের নিথর দেহ । সাধারণ মানুষ থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাতত্ত্বের অধ্যাপক, কেউ বাদ পড়েননি এর থেকে । কখনও স্থানীয় প্রশাসন নিস্পৃহ থেকেছে । কখনও আবার প্রতিবেশী বা আত্মীয়রা বাড়িয়ে দেননি সহযোগিতার হাত ।
আরও পড়ুন : করোনায় মৃত্যু কোচবিহারের এক পুলিশ কর্মীর
কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে নাকি এখনও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছয়নি । তাতেই এতো অমানিবকতার ছবি চারধারে। তাই প্রশ্ন একটাই । প্রকোপ যখন সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছবে তখন না জানি আরও কত এইরকম অমানবিকতার মর্মান্তিক ছবি উঠে আসবে ।