কলকাতা,২৬ মার্চ : দাম বাড়বে দুধের। নিত্যপ্রয়োজনীয় দুধের ঘাটতি মিটতে সময় লাগবে প্রায় দু'বছর। এমনই আশঙ্কার কথা জানাচ্ছেন দুধ বিক্রেতা।কোরোনা আতঙ্কের জেরে বেসরকারি দুধ প্রস্তুতকারী সংস্থায় দুধ বিক্রি হচ্ছে না। লকডাউনের ফলে রাজ্যের প্রায় সমস্ত মিষ্টির দোকানও বন্ধ। দুধের জোগান থাকলেও, বন্টন নেই। ভয়ঙ্কর সমস্যায় দুধ বিক্রেতারা ৷
এক দুধ বিক্রেতা জানান, তাঁর খাটালে রয়েছে পঞ্চাশটি গোরু। প্রতিদিন প্রায় চারশো লিটারের বেশি দুধ উৎপাদন হয় তাঁর খাটালে। বেলগাছিয়ার মিষ্টির তৈরির বিভিন্ন কারখানায় তিনি দুধ জোগান দিতেন।লকডাউনের পরে মিষ্টির কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত তাঁর।আরও একজন দুধ বিক্রেতা জানান নিয়মিত উদ্বৃত্ত দুধ শুধু নষ্ট হচ্ছে এমন নয়, অনেক মিষ্টি কারখানার মালিক দু সপ্তাহের জোগানের টাকা না দিয়েই বন্ধ করে দিয়েছেন। এতেও আরও সমস্যা হচ্ছে । একথা জানাচ্ছেন দুধ বিক্রেতা মিঠুন ঘোষ।
খাটালের গোরুগুলির খাবারও প্রায় বন্ধের মুখে। গোরুর খাবার নিয়ে আসা ট্রাক রাস্তায় আটকে দিচ্ছে পুলিশ। কলকাতার এক খাটাল কর্মী জানালেন, গরুর খাবার শেষের দিকে। এবারে হয় গোরুগুলোকে বিক্রি করে দিতে হবে কসাইয়ের কাছে। না হলে না খেতে পেয়ে গোরুগুলো মরে পড়ে থাকবে। লকডাউন উঠে যাবে, করোনা ভাইরাসের দাপট শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আগামী দু-বছর পর্যন্ত দুধের বাজারে সংকট দেখা দেবে। জানাচ্ছেন দুধ বিক্রেতারা। বেসরকারি দুগ্ধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই বাইরে থেকে দুধ কেনা বন্ধ করে দিয়েছে।
দুধ বিক্রেতাদের দাবি, সরকার চাপ সৃষ্টি করলেই বেসরকারি দুধ সংস্থাগুলি তাঁদের কাছ থেকে দুধ কিনতে বাধ্য হবে। ট্রেড লাইসেন্স এবং ফুড সেফটি স্ট্যান্ডার্ড লাইসেন্স সরকার নবীকরণ না করলে বেসরকারি দুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি দুধ বিক্রেতাদের কাছ থেকে দুধ কিনতে বাধ্য হবে। সরকারকেও দুধ কেনার জন্য আবেদন জানিয়েছেন খাটাল মালিকরা ।
প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন, পুলিশের সঙ্গে কথা বলে খড়ের গাড়ি আটকাবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন তিনি। গোরুর খাবার নিত্যপ্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর মধ্যেই পড়ে। লকডাউনের আওতার বাইরে রাখতে হবে গোরুর খাবার। দুধ পর্যাপ্ত উৎপাদন হচ্ছে। চা এবং মিষ্টির দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুধ বিক্রেতাদের দুধ বিক্রি হচ্ছে না। মাদার ডেয়ারির উৎপাদন বেড়েছে। মিল্ক ফেডারেশন, মিল্ক কো-অপারেটিভ এবং মিল্ক ইউনিয়নের মাধ্যমে চাষিদের কাছ থেকে দুধ কেনে রাজ্য সরকার।