ETV Bharat / city

2021-এর মার্চে দেশে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াতে পারে 26 লাখ ! - নন্দদুলাল বৈরাগী

লকডাউন শিথিল হওয়ায় বদলেছে পরিস্থিতি ৷ বেড়েছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৷ এই অবস্থায় এপিডেমিক কার্ভ চলতি বছরের জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে শিখরে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক গবেষকরা ৷ গবেষকদের পূর্বাভাস, 2021 সালের ফেব্রুয়ারির শেষে বা মার্চের শুরুতে COVID-19 নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে । সেসময় দেশে আনুমানিক আক্রান্তের সংখ্যা 26 লাখ ছাড়িয়ে যাবে ৷

Jadavpur University Mathematics Research
কোরোনার পূর্বাভাস গবেষকদের
author img

By

Published : Jun 18, 2020, 5:19 AM IST

Updated : Jun 18, 2020, 2:34 PM IST

কলকাতা, 17 জুন: বেড়েই চলেছে কোরোনার প্রকোপ। বর্তমানে দেশে দিনে গড় আক্রান্তের সংখ্যা 11 হাজার৷ অন্যদিকে রাজ্যে একদিনে গড়ে প্রায় সাড়ে 400 জন কোরোনা সংক্রমিত হচ্ছেন। কিন্তু, কবে দেশ ও রাজ্যে কোরোনা সংক্রমণ শিখরে পৌঁছাবে? কবে বিদায় নেবে কোরোনা? মোট কতজন আক্রান্ত হতে পারেন? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক গবেষণায় । গবেষকদের পূর্বাভাস, 2021 সালের ফেব্রুয়ারির শেষে বা মার্চের শুরুতে দেশে COVID-19 ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসবে৷ সেই সময়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা 26 লাখ ছাড়িয়ে যাবে। দেশের তুলনায় রাজ্যে কিছুটা আগেই কোরোনা নিয়ন্ত্রণে আসার পূর্বাভাস দিয়েছেন গবেষকরা। তাঁরা জানান, নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে রাজ্যে কোরোনা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। সেই সময় রাজ্যে মোট কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 60 হাজারের আশপাশে থাকবে৷

COVID-19 মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে গাণিতিক গবেষণার ডাক দিয়েছিল কেন্দ্রের ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (DST) অধীনস্থ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ বোর্ড (SERB)। সেই ডাকে সাড় দিয়ে গবেষণার প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক তথা গণিত বিভাগের অধীনে থাকা সেন্টার ফর ম্যাথেমেটিকাল বায়োলজি অ্যান্ড ইকোনমির কো-অর্ডিনেটর নন্দদুলাল বৈরাগী। যে প্রস্তাব অনুমোদন করে SERB। তারপর থেকেই নন্দদুলাল বৈরাগীর নেতৃত্বে চলছে কোরোনার ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে গাণিতিক গবেষণা। প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষণার পর অধ্যাপক নন্দদুলাল বৈরাগী জানিয়েছিলেন, যে কোনও মহামারির ক্ষেত্রেই এপিডেমিক কার্ভ থাকে। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে তৈরি হয় এই কার্ভ। এপিডেমিক কার্ভের প্রথম দিকে আক্রান্তের সংখ্যা খুব কম থাকে। পরে আস্তে আস্তে বাড়তে বাড়তে সর্বাধিক সীমায় পৌঁছায়৷ একেই এপিডেমিক কার্ভের চূড়া বা শিখর বলা হয়। শিখরে পৌঁছানোর পরই ধীরে ধীরে আক্রান্তের সংখ্যা কমার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভারতবর্ষে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখনও শিখরে পৌঁছায়নি। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে শিখরে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। চতুর্থ দফার লকডাউনের তথ্যের ভিত্তিতে দ্বিতীয় ধাপের গবেষণায় এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল৷ পরে জানানো হয়, সংক্রমণ-শিখর জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে।

এই বিষয়ে নন্দদুলাল বৈরাগী জানান, দুটি গাণিতিক মডেল ব্যবহার করা হচ্ছে গবেষণার জন্য। এগুলি হল, SEIR (suspectable expose infected recovered) মডেল ও Stochastic মডেল। পাশাপাশি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণ করেও গবেষণা করা হচ্ছে।

তবে, প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষণায় জুনের প্রথম সপ্তাহে দেশে কোরোনা সংক্রমণ শিখরে পৌঁছাবে বলে তথ্য উঠে আসলেও, তারপর পরিস্থিতির অনেক বদল হয়েছে। পরিস্থিতি বদলের সঙ্গে কোরোনার প্রকোপের পূর্বাভাসেরও বদল হয়েছে। 1 জুন থেকে দেশজুড়ে আনলক ওয়ান শুরু হয়েছে। 8 জুন থেকে বহু ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের তথ্যের ভিত্তিতে গাণিতিক গবেষণা করে চাঞ্চল্যকর পূর্বাভাস জানতে পেরেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক।

নন্দদুলাল বৈরাগী বলেন, "এর আগে আমরা যে পূর্বাভাস দিয়েছিলাম তাতে, অক্টোবর মাসের শেষের দিকে ভারতে কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে 2021-এর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ বা মার্চের প্রথম দিকে দেশে কোরোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা 13 লাখের কাছাকাছি অনুমান করা হয়েছিল। সেটা 2021-র মার্চ মাসে 26 লাখ হওয়ার সম্ভাবনা৷ কোনও সন্দেহ নেই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে এগোচ্ছে।"

তবে, যাদবপুরের গাণিতিক গবেষণার পূর্বাভাস অনুযায়ী গোটা দেশ এবং দেশের অন্য বেশ কয়েকটি রাজ্যের থেকে ভালো জায়গায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।

নন্দদুলাল বৈরাগী বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে কোরোনা সংক্রমণ জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষের দিকে শিখরে পৌঁছাতে পারে। চেন্নাই, মুম্বই, দিল্লির থেকে পশ্চিমবঙ্গ এবং কলকাতা তুলনামূলক ভালো জায়গায় রয়েছে। ভারতের থেকে পশ্চিমবঙ্গে আগেই কোরোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসছে। নভেম্বরের শেষ ডিসেম্বরের শুরুতেই COVID-19 নিয়ন্ত্রণে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সময় রাজ্যে মোট সংক্রামিতের সংখ্যা 60 হাজারের আশপাশে থাকতে পারে। যা এখন 11 হাজারের আশপাশে আছে।"

আনলক ওয়ানের পর এটাই গাণিতিক বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস৷

কলকাতা, 17 জুন: বেড়েই চলেছে কোরোনার প্রকোপ। বর্তমানে দেশে দিনে গড় আক্রান্তের সংখ্যা 11 হাজার৷ অন্যদিকে রাজ্যে একদিনে গড়ে প্রায় সাড়ে 400 জন কোরোনা সংক্রমিত হচ্ছেন। কিন্তু, কবে দেশ ও রাজ্যে কোরোনা সংক্রমণ শিখরে পৌঁছাবে? কবে বিদায় নেবে কোরোনা? মোট কতজন আক্রান্ত হতে পারেন? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক গবেষণায় । গবেষকদের পূর্বাভাস, 2021 সালের ফেব্রুয়ারির শেষে বা মার্চের শুরুতে দেশে COVID-19 ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসবে৷ সেই সময়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা 26 লাখ ছাড়িয়ে যাবে। দেশের তুলনায় রাজ্যে কিছুটা আগেই কোরোনা নিয়ন্ত্রণে আসার পূর্বাভাস দিয়েছেন গবেষকরা। তাঁরা জানান, নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে রাজ্যে কোরোনা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। সেই সময় রাজ্যে মোট কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 60 হাজারের আশপাশে থাকবে৷

COVID-19 মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে গাণিতিক গবেষণার ডাক দিয়েছিল কেন্দ্রের ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (DST) অধীনস্থ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ বোর্ড (SERB)। সেই ডাকে সাড় দিয়ে গবেষণার প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক তথা গণিত বিভাগের অধীনে থাকা সেন্টার ফর ম্যাথেমেটিকাল বায়োলজি অ্যান্ড ইকোনমির কো-অর্ডিনেটর নন্দদুলাল বৈরাগী। যে প্রস্তাব অনুমোদন করে SERB। তারপর থেকেই নন্দদুলাল বৈরাগীর নেতৃত্বে চলছে কোরোনার ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে গাণিতিক গবেষণা। প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষণার পর অধ্যাপক নন্দদুলাল বৈরাগী জানিয়েছিলেন, যে কোনও মহামারির ক্ষেত্রেই এপিডেমিক কার্ভ থাকে। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে তৈরি হয় এই কার্ভ। এপিডেমিক কার্ভের প্রথম দিকে আক্রান্তের সংখ্যা খুব কম থাকে। পরে আস্তে আস্তে বাড়তে বাড়তে সর্বাধিক সীমায় পৌঁছায়৷ একেই এপিডেমিক কার্ভের চূড়া বা শিখর বলা হয়। শিখরে পৌঁছানোর পরই ধীরে ধীরে আক্রান্তের সংখ্যা কমার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভারতবর্ষে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখনও শিখরে পৌঁছায়নি। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে শিখরে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। চতুর্থ দফার লকডাউনের তথ্যের ভিত্তিতে দ্বিতীয় ধাপের গবেষণায় এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল৷ পরে জানানো হয়, সংক্রমণ-শিখর জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে।

এই বিষয়ে নন্দদুলাল বৈরাগী জানান, দুটি গাণিতিক মডেল ব্যবহার করা হচ্ছে গবেষণার জন্য। এগুলি হল, SEIR (suspectable expose infected recovered) মডেল ও Stochastic মডেল। পাশাপাশি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণ করেও গবেষণা করা হচ্ছে।

তবে, প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষণায় জুনের প্রথম সপ্তাহে দেশে কোরোনা সংক্রমণ শিখরে পৌঁছাবে বলে তথ্য উঠে আসলেও, তারপর পরিস্থিতির অনেক বদল হয়েছে। পরিস্থিতি বদলের সঙ্গে কোরোনার প্রকোপের পূর্বাভাসেরও বদল হয়েছে। 1 জুন থেকে দেশজুড়ে আনলক ওয়ান শুরু হয়েছে। 8 জুন থেকে বহু ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের তথ্যের ভিত্তিতে গাণিতিক গবেষণা করে চাঞ্চল্যকর পূর্বাভাস জানতে পেরেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক।

নন্দদুলাল বৈরাগী বলেন, "এর আগে আমরা যে পূর্বাভাস দিয়েছিলাম তাতে, অক্টোবর মাসের শেষের দিকে ভারতে কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে 2021-এর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ বা মার্চের প্রথম দিকে দেশে কোরোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা 13 লাখের কাছাকাছি অনুমান করা হয়েছিল। সেটা 2021-র মার্চ মাসে 26 লাখ হওয়ার সম্ভাবনা৷ কোনও সন্দেহ নেই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে এগোচ্ছে।"

তবে, যাদবপুরের গাণিতিক গবেষণার পূর্বাভাস অনুযায়ী গোটা দেশ এবং দেশের অন্য বেশ কয়েকটি রাজ্যের থেকে ভালো জায়গায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।

নন্দদুলাল বৈরাগী বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে কোরোনা সংক্রমণ জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষের দিকে শিখরে পৌঁছাতে পারে। চেন্নাই, মুম্বই, দিল্লির থেকে পশ্চিমবঙ্গ এবং কলকাতা তুলনামূলক ভালো জায়গায় রয়েছে। ভারতের থেকে পশ্চিমবঙ্গে আগেই কোরোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসছে। নভেম্বরের শেষ ডিসেম্বরের শুরুতেই COVID-19 নিয়ন্ত্রণে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সময় রাজ্যে মোট সংক্রামিতের সংখ্যা 60 হাজারের আশপাশে থাকতে পারে। যা এখন 11 হাজারের আশপাশে আছে।"

আনলক ওয়ানের পর এটাই গাণিতিক বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস৷

Last Updated : Jun 18, 2020, 2:34 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.