কলকাতা, 5 অগাস্ট : জম্মু ও কাশ্মীর 370 ধারার ফলে যে বিশেষ সুবিধা ভোগ করত সেটা কখনওই স্থায়ী ছিল না ৷ এটা নেহাতই অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক এক ব্যবস্থাপনা ৷ জম্মু ও কাশ্মীর থেকে এই ধারা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত একেবারেই অসাংবিধানিক নয় বলেই মন্তব্য করলেন প্রাক্তন বিচারপতি অশোককুমার গাঙ্গুলি ৷
আজ রাজ্যসভায় অমিত শাহ রাষ্ট্রপতির নির্দেশনামা পড়ে শোনানোর পরেই শুরু হয়ে যায় শোরগোল ৷ বিরোধীরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন ৷ এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন বিচারপতি অশোককুমার গাঙ্গুলি বলেন, "370 ধারা জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছিল ৷ 1947 সালের জম্মু ও কাশ্মীরের ভারতভুক্তির চুক্তির পর এটি লাগু হয়েছিল ৷ কিন্তু তারপর থেকেই এই বিশেষ সুবিধা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৷ 1954 সালে জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য সাংবিধানিক নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ পরে 1957 সালে জম্মু ও কাশ্মীর নিজস্ব সংবিধান পাশ করে ৷ আমার মনে হয়, এখন কেন্দ্রীয় সরকার এই বিশেষ সুবিধা তুলে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে ৷ আসলে এটা নেহাতই অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক এক ব্যবস্থাপনা ৷ এটা 70 বছর ধরে চলে এসেছে ৷ সরকার এখন এই ধারা প্রত্যাহারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে ৷"
রাষ্ট্রপতি কি একতরফাভাবে এই নির্দেশনামা জারি করতে পারেন? জবাবে প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, “রাষ্ট্রপতিকে এ বিষয়ে গণপরিষদের পরামর্শ নিতে পারেন ৷ কিন্তু জম্মু ও কাশ্মীরে গণপরিষদ অনেকদিন আগেই বিলুপ্ত হয়েছে ৷ এখন সেখানে বিধানসভা রয়েছে । যদিও সেই বিধানসভা বেশকিছু দিন হল ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৷ ফলে এই মুহূর্তে সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন চলছে ৷ রাষ্ট্রপতি শাসন চলাকালীন যে কোনও সাংবিধানিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী একমাত্র তিনি ৷ তাই প্রাথমিকভাবে এই 370 ধারা প্রত্যাহারের বিষয়টি অসাংবিধানিক পদ্ধতিতে হয়নি ৷"
একইসঙ্গে প্রাক্তন বিচারপতি জানান, দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল অন্যান্য রাজ্যের মতোই কাজ করবে ৷ সেখানে বিধানসভা কোনওভাবেই ভেঙে পড়বে না ৷ তবে এই বিষয়টি নিয়ে সংসদে নিশ্চয়ই আলোচনা হবে ৷ তিনিবলেন “জম্মু ও কাশ্মীর এখন থেকে আর পাঁচটা রাজ্যের মতোই আইনের ক্ষেত্রে সমান মর্যাদা পাবে ৷ যেটা আগে ছিল না ৷ নির্বাচিত রাজ্য সরকারই সেখানে উন্নয়নমূলক কাজ করবে ৷ যেমন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়েও দিল্লির বিধানসভা রয়েছে ৷ নির্বাচিত সরকার রয়েছে ৷ মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে ৷"