কলকাতা, 13 জুন: রাজ্যপালের তলবে মন্ত্রী বা কলকাতা পৌরনিগমের প্রশাসকের নমনীয় মনোভাব দেখানো উচিত ছিল। এমনই মনে করছে রাজ্যের প্রধান দুই বিরোধী দল বাম এবং কংগ্রেস। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এবং গড়িয়া শ্মশানে বেওয়ারিশ মৃতদেহ নিয়ে যে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে তা দেখে উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজ্যপাল এরপর রাজ্যের মন্ত্রী এবং কলকাতা পৌরনিগমের প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমকে রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। তা নিয়ে চূড়ান্ত তরজা শুরু হওয়ায়, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের দুই বিরোধী দলের নেতারা।
বামপরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বিরক্তির সুরে জানিয়েছেন, সিমেন্ট-বালির বস্তার মতো করে মৃতদেহ আঁকশি দিয়ে টেনে তোলা এবং নামানো হচ্ছে। এই দৃশ্য ভয়ঙ্কর। কার মৃতদেহ, বেওয়ারিশ মৃতদেহ হলে তার কেস নম্বর কত? কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু গোপন করতেই কি সরকারের এহেন আচরণ, প্রশ্ন করেন সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন," তর্কযুদ্ধ না করে, মাথা নিচু করে সরকার বা কলকাতা পৌরনিগম জানাক ১৩টি মৃতদেহ কাদের? তাদের পরিচয় কী। যেকোনো ব্যাপারে রাজ্যপালের সঙ্গে মন্ত্রীদের তর্ক খুব কটূ দেখতে লাগে। এসবে কোনো লাভ নেই। হয় স্পষ্ট করুক, নাহলে আইনের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এইভাবে দেহ লোপাট করার অর্থ কী? মৃতদেহগুলি যে কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয় তার প্রমাণ কী? কে বিশ্বাস করবে এই সরকারকে? সরকার চলছে মানুষের জীবন এবং মৃতদেহ নিয়ে অসভ্যতা করে। সরকার বা কর্পোরেশন দ্রুত স্পর্শ করুক। তথ্য জানার অধিকার মানুষের রয়েছে।"
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন, "রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাজিয়া এবার বন্ধ হওয়া দরকার। রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী একে অপরকে এড়িয়ে চললে রাজ্যের পক্ষে তা চূড়ান্ত অমঙ্গল। রাজ্যপালকে এড়ানোর প্রবণতা মুখ্যমন্ত্রী সহ মন্ত্রিসভার সদস্যদের রয়েছে। যার ফলে রাজ্যপাল সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে খবর সংগ্রহ করছেন। মৃতদেহগুলি নিয়ে অমানবিক ঘটনা ঘটল। রাজ্যপাল প্রকৃত তথ্য জানতে চাইলেন। এমন সংকটময় মুহূর্তে পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ির বন্ধ করুন রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী।"
পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে আবদুল মান্নানের অভিযোগ, শিক্ষামন্ত্রীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা নিয়ে কিছু বলতে পারেন না। রাজ্যের যে শিক্ষা দপ্তর আছে, তা সকলেই ভুলে যাচ্ছেন। শিক্ষামন্ত্রী নিজেও দপ্তরের অনেক কিছু জানেন না। শিক্ষামন্ত্রী কোনো কিছু ঘোষণা করেন। ঠিক তার পরেই শিক্ষামন্ত্রীর অজান্তে রাজ্যের মুখ্যসচিব এমন কিছু ঘোষণা করেন যা শিক্ষামন্ত্রী জানেনই না। এমন ঘটনায় বারে বারে মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। বিভ্রান্ত হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা। বিভ্রান্তি থেকে যাচ্ছে সরকারের অভ্যন্তরে।