কলকাতা, 2 ফেব্রুয়ারি : অবশেষে স্কুলে ফিরতে চলেছে পড়ুয়ারা। আজই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, 12 ফেব্রুয়ারি থেকে নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুলে দেওয়া হবে। বহুদিন ধরেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়াদের স্কুলে এনে অন্তত তাঁদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালুর দাবি তুলেছিল একাধিক শিক্ষক সংগঠন। অবশেষে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য স্কুল খোলার রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে প্রতিটি শিক্ষক সংগঠনই।
এদিন স্কুল খোলা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের সাধারণ সম্পাদক চন্দনকুমার মাইতি বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছিলাম। এটা শিক্ষামন্ত্রী শুনেছেন, মুখ্যমন্ত্রী বুঝেছেন, এটাতে আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি সরকারকে, শিক্ষা দপ্তরকে। পাশাপাশি, 100 শতাংশ শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের আসাকে যাতে সুনিশ্চিত করা হয়, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা দিতে হবে। 50 শতাংশ নয়, সরকারি কর্মচারীদের মতো 100 শতাংশ শিক্ষকদের স্কুলে আসা নিশ্চিত করতে হবে।"
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, "মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয় খোলার যে ঘোষণা আজকে করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে আমরা সেই ঘোষণাকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা বহুবার স্কুল শিক্ষা দপ্তর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছে এই দাবি জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে যে বিদ্যায়তন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবে কীভাবে স্কুলের ক্লাস চালু করা হবে। আমরা চাই, এব্যাপারে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি ব্লু-প্রিন্ট প্রকাশ করা হোক। সেই আদর্শ ব্লু-প্রিন্ট বিদ্যালয়গুলো অনুসরণ করবে।’’
তাঁর বক্তব্য, কীভাবে ক্লাস পরিচালনা হবে, কীভাবে শ্রেণির ছাত্রের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব-বিধি অনুসরণ করবে, এই ব্যপারগুলো স্কুল শিক্ষা দপ্তরের ব্লু-প্রিন্ট অনুসরণ করে করা হোক। যদি স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে কোনও ব্লু-প্রিন্ট প্রকাশ করা না হয় তাহলে এক বিদ্যালয়ের পদ্ধতির সঙ্গে অন্য বিদ্যালয় পদ্ধতির পার্থক্য তৈরি হবে। যেটা বিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের মধ্যে করোনা পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন বার্তা পাঠাবে। সেই কারণেই তিনি মনে করছেন বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর একটা ব্লু প্রিন্ট প্রকাশ করা ভীষণ জরুরি।
শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, "অবশেষে আগামী 12 ফেব্রুয়ারি থেকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন চালুর ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। বহুদিন থেকে আমরা এই দাবি জানিয়ে এসেছিলাম। শিক্ষামন্ত্রীর এই ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।"
আরও পড়ুন : 12 ফেব্রুয়ারি থেকে খুলতে পারে স্কুল, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন ধরেই চাইছিলাম স্কুল খোলা হোক। আমরা জানুয়ারি থেকেই খুলতে চাইছিলাম। দেরিতে হলেও অবশেষে সরকারের বোধোদয় হয়েছে, বিদ্যালয়গুলো যে খোলা হচ্ছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য সেই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা বিগত একমাস ধরে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি, বিদ্যালয় খুলুন, বিদ্যালয় খুলুন, না হলে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। এতে আমরা অত্যন্ত খুশি। শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীরা সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা ছাত্র ছাত্রীদের ক্লাস করাব। স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের কলতানে ভরে উঠবে। আমরা সকলেই খুব খুশি।"