কলকাতা, 12 জানুয়ারি : স্বামী বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তী৷ আন্তর্জাতিক যুব দিবস৷ প্রতি বছরই এই দিনটি বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে সাড়ম্বরে পালন করা হয়৷ কিন্তু এবার এই দিনটি ঘিরে দেখা গেল রাজনৈতিক উত্তাপ৷ যা এর আগে কখনও বাঙালি প্রত্যক্ষ করেনি৷ মঙ্গলবার, 12 জানুয়ারি স্বামীজির জন্মজয়ন্তী পালনে দিনভর দড়ি টানাটানি চলল তৃণমূল কংগ্রেস ও ভারতীয় জনতা পার্টির মধ্যে৷ আর এই চাপানউতোর মূল আকর্ষণের কেন্দ্র ছিল সিমলা স্ট্রিট৷ কারণ, এই মুহূর্তে বাংলার সবেচেয়ে আলোচিত যুযুধান দুই নেতা হাজির হয়েছিলেন স্বামীজির জন্মভিটেতে৷
মঙ্গলবার সাতসকালে সেখানে হাজির হন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী৷ আর বেলার দিকে হাজির হন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এছাড়া দুজনেই এদিন নিজেদের দলের তরফে আয়োজিত পৃথক মিছিলে অংশগ্রহণ করেন৷ শুভেন্দু হাঁটেন শ্যামবাজার থেকে সিমলা স্ট্রিটে স্বামীজির বাড়ি পর্যন্ত৷ আর অভিষেক মিছিল শুরু করেন দক্ষিণ কলকাতায় গোলপার্ক থেকে৷ সেই মিছিল শেষ হয় হাজরায়৷
পরে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বেনাচিতির সভা থেকে স্বামীজির আদর্শের কথা তুলে ধরেন শুভেন্দু অধিকারী৷ পাশাপাশি আক্রমণ শানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে৷ অভিষেকও হাজরায় সভা করেন৷ সেই সভা থেকে তিনিই স্বামীজির আদর্শের কথা বলেন৷ আর সেই সূত্র ধরে তিনি বিজেপির সমালোচনা করেন৷ বাংলার মণীষীদের বিজেপি অপমান করছে বলেও তিনি এদিন অভিযোগ করেছেন৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে এই বছর বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে৷ সেই নির্বাচনে তৃণমূলকে হারিয়ে নবান্ন দখলে মরিয়া ভারতীয় জনতা পার্টি৷ এই পরিস্থিতিতে বাংলার মানুষের মনে জায়গা করে নিতে বিজেপি হাতিয়ার করেছে নেতাজি-স্বামীজি-বঙ্কিমচন্দ্র-রবীন্দ্রনাথের মতো বাংলার পথপদর্শকদের৷ আর তা করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে তথ্যগত ভুল করে ফেলছে গেরুয়া শিবির৷ তা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই হইচইও হয়েছে বিস্তর৷ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পথে নেমে আন্দোলনও করেছে তৃণমূল৷
আরও পড়ুন : বিজেপিকে জেতাতে বাম-কংগ্রেসের ভোট চাইলেন শুভেন্দু
এবার সেই লড়াই কার্যত চলল স্বামীজির জন্মজয়ন্তী পালনকে কেন্দ্র করে৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, এই লড়াই আগামিদিনে আরও বৃদ্ধি পাবে৷ সামনেই রয়েছে নেতাজি-জয়ন্তী৷ সেদিনও এমন রাজনৈতিক দড়িটানাটানি চলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷