কলকাতা, 23 ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন, 2019-র বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের দেওয়া বিজ্ঞাপন অবিলম্বে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । এই নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ মামলার পরবর্তী শুনানি 9 জানুয়ারি ৷
সোমবার মামলার শুনানির শুরুতেই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনেরাল (AG) কিশোর দত্ত বলেন, এখন গোটা রাজ্যের পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক । তাই মামলার শুনানি বড়দিনের ছুটির পরে করা হোক ।" সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক করা হয়েছে। কিন্তু মামলাকারী তরফের আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "রাজ্য সরকার নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে এখনও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।" তিনি রাজ্য পুলিশের ফেসবুক পেজ খুলে দেখান, সেখানে এখনও নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হচ্ছে । বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে, রাজ্যে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন লাগু করা হবে না ৷
তারপরই প্রধান বিচারপতি অ্যাডভোকেট জেনেরালকে নির্দেশ দেন, অবিলম্বে বিজ্ঞাপনগুলি প্রত্যাহার করতে হবে । যদিও অ্যাডভোকেট জেনেরাল বলেন, রাজ্য সরকার নিজের উদ্যোগে এই ধরনের প্রচার চালাতে পারে। সেটা তিনি পরবর্তী শুনানিতে এই ব্যাপারে আদালতে তাঁর বক্তব্য জানাবেন । তবে আপাতত আদালতের নির্দেশে রাজ্য সরকার সমস্ত বিজ্ঞাপন বন্ধ রাখবে।
রেলের তরফে আইনজীবী পার্থ ঘোষ বলেন, "এখনও পর্যন্ত পূর্ব রেলের প্রায় 73 কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হিসাব এখনও আমার কাছে নেই।" রেলের মোট কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেই সঙ্গে সেই ক্ষয়ক্ষতি আটকাতে রেলের কী ধরনের নিরাপত্তা ছিল সে ব্যাপারেও আগামী শুনানিতে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দেয় আদালত ৷
নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন,2019 পাশ হওয়ার পর গোটা রাজ্যে যে সন্ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার দায় রাজ্যের। রাজ্যের মানুষকে পরিকল্পিতভাবে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন নিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে । এই দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন সুরজিৎ সাহা নামে এক ব্যক্তি। এরপর এই সংক্রান্ত আরও একাধিক মামলা দায়ের হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেই সমস্ত মামলার শুনানি চলছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।