কলকাতা, 26 মার্চ : SSC চাকরিপ্রার্থীদের অনশন আজ 27 দিনে পড়ল। এখনও পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েছেন প্রায় 86 জন। আগামীকাল তাঁরা অভিযোগপত্র জমা দিতে যাবেন পাঁচ সদস্যের কমিটির কাছে। কিন্তু, সেখান থেকে কোনও সদুত্তর না মিললে অনশন কর্মসূচি আরও জোরদার করা হবে। এমনটাই জানাচ্ছেন SSC যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের সভাপতি ইনসান আলি।
আজ পাঁচ সদস্যের কমিটির কাছে জমা দেওয়ার জন্য অভিযোগপত্র তৈরি করছেন অনশনকারীরা।
কী কী অভিযোগ বা দাবি জানানো হচ্ছে অভিযোগপত্রে?
উত্তরে এক চাকরিপ্রার্থী তানিয়া শেঠ বলেন, “প্রথমত, আমদের দাবি মেরিট লিস্ট প্রকাশ করা হোক। ওঁদের গেজেট অনুযায়ী মেরিট লিস্ট মানে অ্যাকাডেমিক স্কোর, ভাইবা এবং লিখিত পরীক্ষার নম্বর যোগ করে টোটাল যে মার্কসটা প্রত্যেকটা প্রার্থীর ইন্ডিভিজুয়াল আলাদা আলাদা প্যানেল। আমরা সেটাই চাইছি যে আমাদের মেরিট লিস্টটা প্রকাশ করা হোক। দ্বিতীয়ত, আমরা দাবি জানাচ্ছি আপ-টু-ডেট ভ্যাকেন্সির। ওঁদের নোটিফিকেশনে অনুযায়ী ওঁরা বলছেন ওঁরা দু'রকমভাবে সিট আপডেট করবেন। একটা হচ্ছে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময়, আর একটা লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগে পর্যন্ত। দু'রকমভাবেই ভ্যাকেন্সি ওঁরা দিয়েছেন দেখতে পেয়েছি। কিন্তু, বিজ্ঞপ্তির সময়ে যে ভ্যাকেন্সি দিয়েছেন, আবার লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগে পর্যন্ত ভ্যাকেন্সিটা দিচ্ছেন। কিন্তু, ভ্যাকেন্সির কোনও পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু, আমরা জানি যত দিন যায় নতুন স্কুল তৈরি হয়। ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যাটাও বাড়ে। সেই অনুযায়ী ভ্যাকেন্সিটা বাড়ার কথা ছিল। কিন্তু, বাড়েনি। কোনও বিভাগের ক্ষেত্রেই ভ্যাকেন্সি বাড়েনি, উপরন্তু ইলেভেন-টুয়েলভের ক্ষেত্রে ভ্যাকেন্সিটা আরও কমে গেছে। তাই আমাদের দ্বিতীয় দাবি এটাই থাকছে যে গেজেট অনুযায়ী লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগে পর্যন্ত ভ্যাকেন্সিটা আপডেট করা হোক। তৃতীয়ত, আমরা দাবি রাখছি রেশিও মেইনটেইন করা হোক। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা দেখছি রেশিওটার ভায়োলেশন হয়েছে। রেশিও বলতে 100টা শূন্যপদে 40টা ওয়েটিং। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কখনও 40টার জায়গায় 400-500টা ওয়েটিং, কখনও বা 40টার জায়গায় 20-30টা ওয়েটিং। সুতরাং, এক্ষেত্রে রেশিওটা মেইনটেইন করা হয়নি। আমরা চাইছি প্রত্যেকটা বিষয় এবং ক্যাটাগরি অনুযায়ী রেশিও মেইনটেইন করা হোক। আর একটা জিনিস, ওঁদের গেজেটে ওঁরা বলছেন ওঁরা তিনটে লিস্ট পাবলিশ করবেন। একটা ইন্টারভিউ লিস্ট, একটা মেরিট লিস্ট ও একটা প্যানেল লিস্ট। কিন্তু, এক্ষেত্রে আমরা হাতে একটাই লিস্ট পেয়েছি। কখনও কোনও কিছু জিজ্ঞাসা করতে গেলে ওঁরা সেটাকে বলে ইন্টারভিউ লিস্ট। যদি আমরা জানতে চাই, মেরিট লিস্ট কোথায় বা প্যানেল লিস্ট কোথায়? যদি এটাকে বলা হয় প্যানেল, তাহলে আমরা জানতে চাই মেরিট লিস্ট আর ইন্টারভিউ লিস্ট কোথায়? আমাদের হাতে তিনটে লিস্ট আসার কথা। শেষে আসবে প্যানেল, যেটা মেনে ওঁরা কাউন্সেলিং করবে। আমাদের হাতে কিন্তু আগের দুটো লিস্ট নেই। আমদের যে তিনটি লিস্টের কথা বলা হয়েছে আমরা সেই তিনটি লিস্টই চাই।”
কবে জমা দেওয়া হবে এই অভিযোগপত্র?
তানিয়া শেঠ বলেন, "কাল-পরশুর মধ্যে মধ্যে আমরা অভিযোগ জানাতে যাবেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, অভিযোগ জমা দেওয়ার 15 দিনের মাথায় উত্তর দেবেন পাঁচ সদস্যের কমিটি।"
কমিটির কাছে ঠিক কী আশা করছেন?
SSC যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের সভাপতি ইনসান আলি বলেন, “উত্তর 8 দিন বা 15 দিনের মাথায় দেওয়া হবে বলেছেন। আমরা তো আরও 8 দিন অনশন করব, তাই চাইব দু'চারদিনের মধ্যে সমস্যাটার সমাধান হয়ে যাক।”
কী উত্তর পেলে অনশন তুলবেন?
ইনসান আলি বলেন, “একমাত্র আমাদের চাকরি। সেটা লিখিতভাবে হোক বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের যে নিয়ম সেই অনুযায়ী আমাদের প্যানেলভুক্ত করে হোক। যদি সেটা না হয় তাহলে অনশন আরও জোরদার হবে। যতক্ষণ গায়ের মাংস আছে, হাড় না বেরিয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে।”