কলকাতা, 15 অক্টোবর: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য ফের ফাটল ধরেছে বউবাজারের একাধিক বাড়িতে ৷ ফলে ফের আতঙ্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে বউবাজারের নাম । এই নিয়ে তৃতীয়বার মেট্রোর কাজের জন্য ফাটল ধরল বউবাজার এলাকায় (Bowbazar Metro Disaster) ৷
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ চলাকালীন শুক্রবার ভোররাত থেকে আবারও বউবাজার এলাকায় একাধিক বাড়িতে প্রথমে চিড় ও তারপর বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে । এরপরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে ওই এলাকায় ৷ এবার মদন দত্ত লেনের প্রায় 14টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে । এখানকার একাধিক বাড়ি ও দোকানের দেওয়াল, ছাদ, মেঝে সর্বত্রই বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে । ফাটল দেখা দিয়েছে রাস্তাতেও । প্রাণ সংশয়ে প্রায় এক কাপড়ে হাতের কাছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা যা ছিল তা নিয়ে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় এসেছেন বাসিন্দারা ৷ এখন তাঁদের আশ্রয় আশপাশের পাঁচটি হোটেলে ।
আরও পড়ুন: বউবাজারে ফের বিপর্যয়, সাফাই দিল কেএমআরসিএল
এক রাতের মধ্যে মাথার উপরের ছাদ খুঁইয়ে এভাবে রাস্তায় এসে দাঁড়ানো তাদের কাছে একটা নতুন ও দুঃখের অভিজ্ঞতা বলা যায় ৷ তথ্য বলছে, 2019 সালে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর (Kolkata East West Metro) কাজের জন্য বিধ্বংসী ধস নেমে বউবাজারে যে একের পর এক বাড়ি মাটিতে মিশে গিয়েছিল সেগুলির বাসিন্দাদের আর নিজেদের ভিটেতে ফেরা হয়নি ৷ ফলে এই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে এই আতঙ্ক আর যন্ত্রণা নতুন নয়, তা বলা যায় ৷
গত কয়েক বছরে এই ধরণের বিপর্যয় এখানকার বাসিন্দাদের প্রায় গা সওয়া হয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্থরা এখনও দিন গুনছেন তাঁদের ভিটেতে ফেরার আসায় ৷ মেট্রোর কাজের জন্য 2019 সালে বউবাজার অঞ্চলে প্রথমবার ধস নামে । আর সেই ধসে প্রথম বলি হয়েছিল দুর্গা পিতুরি লেনের সোনালী সিলের বাড়ি । 13এ দুর্গা পিতুরি লেন (Bowbazar Metro Crisis) ৷
আজও সেই রাতের স্মৃতি মনে করে শিউরে ওঠেন সোনালী দেবী । তিনি বলেন,"মেট্রো কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা করে দেওয়া ফুলবাগানে একটি দু'কামরার ফ্ল্যাটে বর্তমানে আমরা থাকছি । একবার ভেবে দেখুন নিজেদের বিশাল চারতলা বাড়ি থেকে একেবারে একটা দু'কামরার ফ্ল্যাটে রীতিমতো ঠাসাঠাসি করে থাকছি আমরা ।" তাঁর দাবি, মেট্রোর পক্ষ থেকে 2024 সালের মধ্যে নতুন বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল । তবে যেভাবে বারবার এই বউবাজার এলাকায় মেট্রোর কাজের জেরে বিপত্তি দেখা দিচ্ছে তাতে মেট্রো নির্মাণের কাজ শেষ করে নতুন বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েই এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে 2019 সালের ক্ষতিগ্রস্তদের মনে ।