ETV Bharat / city

আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের ছবিতে ছেয়ে গেল সোশাল মিডিয়া

জরুরি ভিত্তিতে মামলার নিষ্পত্তি করে আপার প্রাইমারি স্তরে শিক্ষক নিয়োগ করা হোক। এই দাবি তুলে ধরতে 29 এপ্রিল বাড়িতে বসে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ উচ্চপ্রাথমিক চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের তরফ থেকে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আজ হাজার হাজার আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী নিজেদের বাড়িতে, মুখে মাস্ক পরে, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানালেন। সেই ছবিতে ছেয়ে গেল সোশাল মিডিয়া।

job seekers
চাকরিপ্রার্থী
author img

By

Published : Apr 29, 2020, 8:40 PM IST

কলকাতা, 29 এপ্রিল: দাবি একটাই। জরুরি ভিত্তিতে মামলার নিষ্পত্তি করে আপার প্রাইমারি স্তরে শিক্ষক নিয়োগ করা হোক। এই দাবি তুলে ধরতে 29 এপ্রিল বাড়িতে বসে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ উচ্চপ্রাথমিক চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের তরফ থেকে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আজ হাজার হাজার আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী নিজেদের বাড়িতে, মুখে মাস্ক পরে, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানালেন। সেই ছবিতে ছেয়ে গেল সোশাল মিডিয়া। শুধু চাকরিপ্রার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে নয়, শিক্ষামন্ত্রীর ফেসবুক প্রোফাইলেও বাড়িতে একা বসে দাবি জানানোর ছবি পোস্ট করলেন হাজারে হাজারে চাকরিপ্রার্থী।

ঘরে বসে দাবি জানানোর কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই ফেসবুকে দাবি জানিয়ে ছবি পোস্ট করা শুরু করে দিয়েছিলেন আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা। প্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে দাবি জানাতে দেখা গিয়েছিল অভিভাবকদেরও। তারপরে আজ কর্মসূচির ঘোষিত দিনে সকাল থেকেই 'প্রোটেস্ট ফ্রম হোম' হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে প্রতিবাদের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে চলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে শামিল হয়েছেন তাঁদের ছোটো ছেলে-মেয়েরাও। কেউ তাঁর মায়ের হয়ে, কেউ বাবার হয়ে শিক্ষামন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাতে মুখে মাস্ক পরে, হাতে প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেছে।

ছবির পাশাপাশি অনেক প্রার্থীই নিজেদের দাবি জানিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করছেন। নিজেদের দাবি নিয়ে এক আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী বলেন, "মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমার তথা সমগ্র আপার প্রাইমারির মেধাতালিকায় থাকা প্রার্থীদের করজোড়ে একটাই আবেদন যে, আমাদের আপার প্রাইমারির নিয়োগ প্রক্রিয়া মেধাতালিকায় ওয়েটেজ সংক্রান্ত ভুল-ত্রুটির জন্য আদালতের তত্ত্বাবধানে বিচারাধীন। প্রায় 7 বছর ধরে আমরা বেকারত্বের যন্ত্রণা নিয়ে দারিদ্র্যতার সঙ্গে লড়াই করে চলেছি। অভাবের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে চলেছি। যা এই লকডাউনে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তাই আপনাদের কাছে আমাদের সবিনয়ে একটাই নিবেদন যে, আপনারা আমাদের আপার প্রাইমারির মামলাটিকে জরুরি হিসেবে গণ্য করে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিগুলো সম্পূর্ণ করে নিয়োগ প্রক্রিয়াটিকে যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করে আমাদের 7 বছরের বঞ্চনা এবং বেকারত্বের জ্বালা থেকে মুক্তি দিন।"

2014 সালে প্রকাশিত হয়েছিল TET পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি। 2015 সালের অগাস্ট মাসে হয় TET পরীক্ষা। ফলাফল প্রকাশ হয় 2016 সালে৷ 2016 সালেই আপার প্রাইমারি স্তরে শিক্ষক নিয়োগের জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া হয়। কিন্তু, তারপরে বেশ কয়েক বছর থমকে থাকে নিয়োগ প্রক্রিয়া। অবশেষে 2019 সালে শুরু হয় যাচাই প্রক্রিয়া। আপার প্রাইমারি নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপের নথি যাচাই চলাকালীনও একাধিক মামলা হয় হাইকোর্টে। ওঠে দুর্নীতির অভিযোগ। সেইসব কাটিয়ে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়াও সম্পূর্ণ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন।

স্কুল সার্ভিস কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, আপার প্রাইমারির চূড়ান্ত শূন্যপদ মোট 14 হাজার 88 টি। কিন্তু, আবারও অনিয়মের অভিযোগ তুলে মামলা হয় হাইকোর্টে। সেই মামলা চলাকালীন হাইকোর্টের নির্দেশে একটি মেধাতালিকাও প্রকাশ করেছিল SSC। কিন্তু, সেই মেধাতালিকাতেও দেখা যায় অসঙ্গতি। আবারও হাইকোর্টে অজস্র মামলা। নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। এখনও বহাল রয়েছে সেই স্থগিতাদেশ।

এর মধ্যেই কোরোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে লকডাউন ঘোষণা হয় রাজ্যজুড়ে। বন্ধ হয়ে যায় হাইকোর্ট। একদিকে মামলা ও অন্যদিকে কোরোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে অনিশ্চিত হয়ে যায় আপার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের ভাগ্য। তারপরেই আন্দোলনের মাধ্যম হিসেবে সোশাল মিডিয়াকে বেছে নেন আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা।

কলকাতা, 29 এপ্রিল: দাবি একটাই। জরুরি ভিত্তিতে মামলার নিষ্পত্তি করে আপার প্রাইমারি স্তরে শিক্ষক নিয়োগ করা হোক। এই দাবি তুলে ধরতে 29 এপ্রিল বাড়িতে বসে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ উচ্চপ্রাথমিক চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের তরফ থেকে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আজ হাজার হাজার আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী নিজেদের বাড়িতে, মুখে মাস্ক পরে, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানালেন। সেই ছবিতে ছেয়ে গেল সোশাল মিডিয়া। শুধু চাকরিপ্রার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে নয়, শিক্ষামন্ত্রীর ফেসবুক প্রোফাইলেও বাড়িতে একা বসে দাবি জানানোর ছবি পোস্ট করলেন হাজারে হাজারে চাকরিপ্রার্থী।

ঘরে বসে দাবি জানানোর কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই ফেসবুকে দাবি জানিয়ে ছবি পোস্ট করা শুরু করে দিয়েছিলেন আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা। প্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে দাবি জানাতে দেখা গিয়েছিল অভিভাবকদেরও। তারপরে আজ কর্মসূচির ঘোষিত দিনে সকাল থেকেই 'প্রোটেস্ট ফ্রম হোম' হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে প্রতিবাদের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে চলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে শামিল হয়েছেন তাঁদের ছোটো ছেলে-মেয়েরাও। কেউ তাঁর মায়ের হয়ে, কেউ বাবার হয়ে শিক্ষামন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাতে মুখে মাস্ক পরে, হাতে প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেছে।

ছবির পাশাপাশি অনেক প্রার্থীই নিজেদের দাবি জানিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করছেন। নিজেদের দাবি নিয়ে এক আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী বলেন, "মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমার তথা সমগ্র আপার প্রাইমারির মেধাতালিকায় থাকা প্রার্থীদের করজোড়ে একটাই আবেদন যে, আমাদের আপার প্রাইমারির নিয়োগ প্রক্রিয়া মেধাতালিকায় ওয়েটেজ সংক্রান্ত ভুল-ত্রুটির জন্য আদালতের তত্ত্বাবধানে বিচারাধীন। প্রায় 7 বছর ধরে আমরা বেকারত্বের যন্ত্রণা নিয়ে দারিদ্র্যতার সঙ্গে লড়াই করে চলেছি। অভাবের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে চলেছি। যা এই লকডাউনে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তাই আপনাদের কাছে আমাদের সবিনয়ে একটাই নিবেদন যে, আপনারা আমাদের আপার প্রাইমারির মামলাটিকে জরুরি হিসেবে গণ্য করে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিগুলো সম্পূর্ণ করে নিয়োগ প্রক্রিয়াটিকে যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করে আমাদের 7 বছরের বঞ্চনা এবং বেকারত্বের জ্বালা থেকে মুক্তি দিন।"

2014 সালে প্রকাশিত হয়েছিল TET পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি। 2015 সালের অগাস্ট মাসে হয় TET পরীক্ষা। ফলাফল প্রকাশ হয় 2016 সালে৷ 2016 সালেই আপার প্রাইমারি স্তরে শিক্ষক নিয়োগের জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া হয়। কিন্তু, তারপরে বেশ কয়েক বছর থমকে থাকে নিয়োগ প্রক্রিয়া। অবশেষে 2019 সালে শুরু হয় যাচাই প্রক্রিয়া। আপার প্রাইমারি নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপের নথি যাচাই চলাকালীনও একাধিক মামলা হয় হাইকোর্টে। ওঠে দুর্নীতির অভিযোগ। সেইসব কাটিয়ে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়াও সম্পূর্ণ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন।

স্কুল সার্ভিস কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, আপার প্রাইমারির চূড়ান্ত শূন্যপদ মোট 14 হাজার 88 টি। কিন্তু, আবারও অনিয়মের অভিযোগ তুলে মামলা হয় হাইকোর্টে। সেই মামলা চলাকালীন হাইকোর্টের নির্দেশে একটি মেধাতালিকাও প্রকাশ করেছিল SSC। কিন্তু, সেই মেধাতালিকাতেও দেখা যায় অসঙ্গতি। আবারও হাইকোর্টে অজস্র মামলা। নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। এখনও বহাল রয়েছে সেই স্থগিতাদেশ।

এর মধ্যেই কোরোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে লকডাউন ঘোষণা হয় রাজ্যজুড়ে। বন্ধ হয়ে যায় হাইকোর্ট। একদিকে মামলা ও অন্যদিকে কোরোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে অনিশ্চিত হয়ে যায় আপার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের ভাগ্য। তারপরেই আন্দোলনের মাধ্যম হিসেবে সোশাল মিডিয়াকে বেছে নেন আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.