ETV Bharat / city

Illegal Weapon : পাচারে ঝুঁকি, বাড়িতে এসেই অস্ত্র বানিয়ে দিচ্ছে ভিনরাজ্যের কারিগররা

পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে এখন আর ভিনরাজ্য থেকে বেআইনি অস্ত্র বয়ে আনার ঝুঁকি নিচ্ছে না গ্রাহকরা ৷ বদলে তাদের বাড়িতে এসেই অস্ত্র তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছে ভিনরাজ্যের কারিগররা ৷ বেআইনি অস্ত্র কারবারের এমন ভোলবদলে মাথাব্যথা বাড়ছে পুলিশের ৷

smugglers from other states sending labours to customer house to make Illegal Weapon
Illegal Weapon : গ্য়ারাজে, চিলেকোঠায় বসে অস্ত্র বানিয়ে দিয়ে যাচ্ছে ভিনরাজ্যের কারিগররা !
author img

By

Published : Sep 16, 2021, 4:55 PM IST

কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর : সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি অস্ত্রব্যবসার ধরন ৷ আগে হয় ‘রেডিমেড’ অবৈধ অস্ত্র চোরাপথে অন্য রাজ্য থেকে ঢুকত এই রাজ্যে ৷ অথবা শহর বা জেলার কিছু কুখ্যাত অঞ্চলে লেদ কারখানার আড়ালে তৈরি হত বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ৷ কিন্তু একের পর এক পুলিশের অভিযান এবং ধরপাকড়ের ফলে এখন বেআইনি অস্ত্র সরবরাহের ধরনটাই বদলে ফেলেছে কারবারিরা ৷ সূত্রের খবর, ইদানীংকালে গ্রাহকের ঘরে এসেই তার ফরমায়েশ মাফিক অস্ত্র তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছে ভিনরাজ্যের কারিগররা ৷

আরও পড়ুন : Arms Dealer Arrested : আগ্নেয়াস্ত্র-সহ বনগাঁ থেকে গ্রেফতার অস্ত্র ব্যবসায়ী ও সঙ্গী

কীভাবে চলছে সেই ব্যবসা ? তথ্য বলছে, প্রথমেই গ্রাহকের কাছ থেকে একটা ফোন বা হোয়াটসআপ কল যায় ভিনরাজ্যে বসে থাকা কোনও অস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছে ৷ দু‘-তিন দিনের মধ্যে রীতিমতো শ্যুট, বুট পরে এবং অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে একেবারে গ্রাহকের দুয়ারে হাজির হয়ে যায় অস্ত্র তৈরির কারিগর ৷ তারপর গ্রাহকের বাড়ির মধ্যেই কোনও শেড বা গ্যারাজ বা এমনকী চিলেকোঠায় বসে চলে অস্ত্র তৈরি ৷ রীতিমতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অস্ত্র তৈরি করে তারা ! তারপর সেই অস্ত্র গ্রাহকের হাতে তুলে দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যায় কারিগররা ৷

এতে বেআইনি কারবারিদের ঝুঁকি কমলেও মাথাব্যথা বেড়েছে পুলিশের ৷ আসলে চোরাপথে অস্ত্র চালান করা হলে অনেক সময়েই সেই ‘কনসাইনমেন্ট’ পাকড়াও করে ফেলে পুলিশ ৷ সেই সূত্র ধরে অস্ত্রপাচারকারীদের কাছে পৌঁছতেও সমস্যা হয় না ৷ কিন্তু নয়া নিয়মে ঝুঁকি অনেক কম ৷ যেহেতু অস্ত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানোর কোনও ব্যবস্থাই নেই, ফলে মাঝপথে অস্ত্র-সহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ার কোনও সম্ভাবনাও নেই ৷ তাছাড়া, কোন এলাকায় কার বাড়িতে বাইরে থেকে লোক এসে গ্যারাজে বা চিলেকোঠায় ঠাঁই নিয়েছে, সেই খবর জোগাড় করা পুলিশের পক্ষেও খুব একটা সহজ নয় ৷ ফলে এক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই গ্রাহক এবং কারিগর, দু’পক্ষই থেকে যাচ্ছে আড়ালে ৷ আর অস্ত্র ব্যবসায়ী ভিনরাজ্যে তার নিরাপদ আশ্রয়ে থেকেই গোটা প্রক্রিয়াটা অবাধে পরিচালনা করে যাচ্ছে ৷

রাজ্য পুলিশের সদর দফতর ভবানী ভবন সূত্রে খবর, সামান্য কয়েক হাজার টাকা খরচ করলেই পছন্দ মাফিক অস্ত্র হাতে পেয়ে যাচ্ছে ক্রেতারা ৷ বোমা, গুলি, আগ্নেয়াস্ত্রের যে দাম সামনে এসেছে, তা হল-

ওয়ান শটার (পাইপ গান) - 10 থেকে 12হাজার টাকা

সেভেন এমএম পিস্তল - 22 হাজার টাকা

নাইন এমএম পিস্তল - 27 হাজার টাকা

পাইপগানের গুলি (একটি) - 80 টাকা

সিক্স রাউন্ড রিভলবারের গুলি (12টি) - 1 হাজার 200 টাকা

সেভেন এমএম ও নাইন এমএম পিস্তলের গুলি (12টি) - 1 হাজার 500 টাকা

দিশি বোমা - 50 টাকা থেকে 5 হাজার টাকা

পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতা ও শহরতলীর কিছু দাগী অপরাধী বেআইনি অস্ত্র কারবারের সঙ্গে জড়িত ৷ নিজেদের মধ্যে এলাকা ভাগ করে অস্ত্র ব্যবসায় নেমেছে তারা ৷ কোথায়, কার কাছে টাকা পৌঁছে দিলে অস্ত্র মিলবে, ক্রেতাদের সেই খবর সরবরাহ করে তারা ৷ দুষ্কৃতীদের সঙ্গে খুব সহজেই যোগাযোগ তৈরি করে দেয় ৷ নতুন কোনও অস্ত্র বাজারে এলেই খবর পৌঁছে যায় তাদের কাছে ৷ তবে পুলিশ যাতে আসল খবর জানতে না পারে, তার জন্য অস্ত্র পেতে বা তৈরি করাতে কিছু সাঙ্কেতিক শব্দ বা কোড ব্যবহার করা হয় ৷

আরও পড়ুন : Illegal drugs and and weapons : ডায়মন্ড হারবারে বেআইনি মাদক ও অস্ত্র সহ ধৃত 2

সূত্রের খবর, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের রেষারেষি ও সংঘর্ষে এভাবেই অস্ত্রের জোগান বজায় রাখা হচ্ছে ৷ এলাকা দখলে রাখতে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে প্রতিযোগিতাও রয়েছে ভাল ৷ বেশ কিছু দুষ্কৃতী আবার নিজেদের বাড়িতেই পাইপগান তৈরির কাজ করছে ৷ ছোট গাড়ির স্টিয়ারিং বা জলের পাইপ কেটে এই ধরনের পাইপগান তৈরি করা হয় ৷ পিতল দিয়ে তৈরি করা হয় গুলি ৷ স্থানীয়ভাবে তৈরি হয় বলে এই আগ্নেয়াস্ত্রের দাম অনেকটা কম ৷ ফলে ‘মাল’ বিক্রিও হয় খুব সহজে ৷

কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর : সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি অস্ত্রব্যবসার ধরন ৷ আগে হয় ‘রেডিমেড’ অবৈধ অস্ত্র চোরাপথে অন্য রাজ্য থেকে ঢুকত এই রাজ্যে ৷ অথবা শহর বা জেলার কিছু কুখ্যাত অঞ্চলে লেদ কারখানার আড়ালে তৈরি হত বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ৷ কিন্তু একের পর এক পুলিশের অভিযান এবং ধরপাকড়ের ফলে এখন বেআইনি অস্ত্র সরবরাহের ধরনটাই বদলে ফেলেছে কারবারিরা ৷ সূত্রের খবর, ইদানীংকালে গ্রাহকের ঘরে এসেই তার ফরমায়েশ মাফিক অস্ত্র তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছে ভিনরাজ্যের কারিগররা ৷

আরও পড়ুন : Arms Dealer Arrested : আগ্নেয়াস্ত্র-সহ বনগাঁ থেকে গ্রেফতার অস্ত্র ব্যবসায়ী ও সঙ্গী

কীভাবে চলছে সেই ব্যবসা ? তথ্য বলছে, প্রথমেই গ্রাহকের কাছ থেকে একটা ফোন বা হোয়াটসআপ কল যায় ভিনরাজ্যে বসে থাকা কোনও অস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছে ৷ দু‘-তিন দিনের মধ্যে রীতিমতো শ্যুট, বুট পরে এবং অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে একেবারে গ্রাহকের দুয়ারে হাজির হয়ে যায় অস্ত্র তৈরির কারিগর ৷ তারপর গ্রাহকের বাড়ির মধ্যেই কোনও শেড বা গ্যারাজ বা এমনকী চিলেকোঠায় বসে চলে অস্ত্র তৈরি ৷ রীতিমতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অস্ত্র তৈরি করে তারা ! তারপর সেই অস্ত্র গ্রাহকের হাতে তুলে দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যায় কারিগররা ৷

এতে বেআইনি কারবারিদের ঝুঁকি কমলেও মাথাব্যথা বেড়েছে পুলিশের ৷ আসলে চোরাপথে অস্ত্র চালান করা হলে অনেক সময়েই সেই ‘কনসাইনমেন্ট’ পাকড়াও করে ফেলে পুলিশ ৷ সেই সূত্র ধরে অস্ত্রপাচারকারীদের কাছে পৌঁছতেও সমস্যা হয় না ৷ কিন্তু নয়া নিয়মে ঝুঁকি অনেক কম ৷ যেহেতু অস্ত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানোর কোনও ব্যবস্থাই নেই, ফলে মাঝপথে অস্ত্র-সহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ার কোনও সম্ভাবনাও নেই ৷ তাছাড়া, কোন এলাকায় কার বাড়িতে বাইরে থেকে লোক এসে গ্যারাজে বা চিলেকোঠায় ঠাঁই নিয়েছে, সেই খবর জোগাড় করা পুলিশের পক্ষেও খুব একটা সহজ নয় ৷ ফলে এক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই গ্রাহক এবং কারিগর, দু’পক্ষই থেকে যাচ্ছে আড়ালে ৷ আর অস্ত্র ব্যবসায়ী ভিনরাজ্যে তার নিরাপদ আশ্রয়ে থেকেই গোটা প্রক্রিয়াটা অবাধে পরিচালনা করে যাচ্ছে ৷

রাজ্য পুলিশের সদর দফতর ভবানী ভবন সূত্রে খবর, সামান্য কয়েক হাজার টাকা খরচ করলেই পছন্দ মাফিক অস্ত্র হাতে পেয়ে যাচ্ছে ক্রেতারা ৷ বোমা, গুলি, আগ্নেয়াস্ত্রের যে দাম সামনে এসেছে, তা হল-

ওয়ান শটার (পাইপ গান) - 10 থেকে 12হাজার টাকা

সেভেন এমএম পিস্তল - 22 হাজার টাকা

নাইন এমএম পিস্তল - 27 হাজার টাকা

পাইপগানের গুলি (একটি) - 80 টাকা

সিক্স রাউন্ড রিভলবারের গুলি (12টি) - 1 হাজার 200 টাকা

সেভেন এমএম ও নাইন এমএম পিস্তলের গুলি (12টি) - 1 হাজার 500 টাকা

দিশি বোমা - 50 টাকা থেকে 5 হাজার টাকা

পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতা ও শহরতলীর কিছু দাগী অপরাধী বেআইনি অস্ত্র কারবারের সঙ্গে জড়িত ৷ নিজেদের মধ্যে এলাকা ভাগ করে অস্ত্র ব্যবসায় নেমেছে তারা ৷ কোথায়, কার কাছে টাকা পৌঁছে দিলে অস্ত্র মিলবে, ক্রেতাদের সেই খবর সরবরাহ করে তারা ৷ দুষ্কৃতীদের সঙ্গে খুব সহজেই যোগাযোগ তৈরি করে দেয় ৷ নতুন কোনও অস্ত্র বাজারে এলেই খবর পৌঁছে যায় তাদের কাছে ৷ তবে পুলিশ যাতে আসল খবর জানতে না পারে, তার জন্য অস্ত্র পেতে বা তৈরি করাতে কিছু সাঙ্কেতিক শব্দ বা কোড ব্যবহার করা হয় ৷

আরও পড়ুন : Illegal drugs and and weapons : ডায়মন্ড হারবারে বেআইনি মাদক ও অস্ত্র সহ ধৃত 2

সূত্রের খবর, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের রেষারেষি ও সংঘর্ষে এভাবেই অস্ত্রের জোগান বজায় রাখা হচ্ছে ৷ এলাকা দখলে রাখতে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে প্রতিযোগিতাও রয়েছে ভাল ৷ বেশ কিছু দুষ্কৃতী আবার নিজেদের বাড়িতেই পাইপগান তৈরির কাজ করছে ৷ ছোট গাড়ির স্টিয়ারিং বা জলের পাইপ কেটে এই ধরনের পাইপগান তৈরি করা হয় ৷ পিতল দিয়ে তৈরি করা হয় গুলি ৷ স্থানীয়ভাবে তৈরি হয় বলে এই আগ্নেয়াস্ত্রের দাম অনেকটা কম ৷ ফলে ‘মাল’ বিক্রিও হয় খুব সহজে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.