ETV Bharat / city

BJP disaster in KMC election : 27 শতাংশ থেকে কমে 9 শতাংশ, পৌরভোটে বিজেপির বিপর্যয়ে উঠে আসছে একাধিক কারণ - 27 শতাংশ থেকে কমে 9 শতাংশ, পৌরভোটে বিজেপির বিপর্যয়ে উঠে আসছে একাধিক কারণ

বিজেপি সূত্রে খবর, কলকাতা পুরভোটে বিজেপি 5-10টি আসন অন্তত পাবে সেটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে রাজ্য নেতৃত্ব রিপোর্ট জমাও দিয়েছিল (State leaders of BJP expected that they will win in 5-10 wards)। কিন্তু এতটাও খারাপ ফল হয়তো কল্পনা করেননি রাজ্য বিজেপি নেতারা ৷

BJP disaster in KMC election
27 শতাংশ থেকে কমে 9 শতাংশ, পৌরভোটে বিজেপির বিপর্যয়ে উঠে আসছে একাধিক কারণ
author img

By

Published : Dec 22, 2021, 10:26 PM IST

কলকাতা, 22 ডিসেম্বর : কলকাতা পৌরভোটে বিজেপির বিপর্যয় ৷ 2015 কলকাতা পৌরভোটে ফলের নিরিখে ছিল 27 শতাংশ ভোট, কমে হল 9 শতাংশ। আসনও কমল গেরুয়া শিবিরের। মাত্র তিনেই কেন থামতে হল ? বিজেপির বিপর্যয়ে উঠে আসছে একাধিক কারণ (Several reasons rise up behind the disaster of BJP in KMC election 2021)।

বিজেপি সূত্রে খবর, কলকাতা পুরভোটে বিজেপি 5-10টি আসন অন্তত পাবে সেটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে রাজ্য নেতৃত্ব রিপোর্ট জমাও দিয়েছিল (State leaders of BJP expected that they will win in 5-10 wards)। কিন্তু এতটাও খারাপ ফল হয়তো কল্পনা করেননি রাজ্য বিজেপি নেতারা ৷ তবে ফল যে খারাপ হবে সেজন্য ভিতর-ভিতর প্রস্তুতই ছিল দলের রাজ্য নেতৃত্ব ৷ শুধু তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, গায়ের জোরে ভোট করানোর অভিযোগ নয় ৷ এই বিপর্যয়ের পিছনে নিজেদেরও একাধিক গলদ দেখছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ৷ বিপর্যয়ের প্রথম এবং প্রধান কারণ হিসেবে রাজনীতির ময়দানে না থেকে আদালতের উপরে অতি নির্ভরশীল হয়ে পড়াকেই দায়ী করছে নেতৃত্বের একাংশ ৷

পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার দিন থেকেই কার্যত আইনি লড়াইয়ে নেমে পড়েছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ৷ কখনও একসঙ্গে সব পুরসভায় ভোটের দাবি, কখনও আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে দরবার করেছে বিজেপি ৷ দলের নেতাদের একাংশ মনে করছে, মাঠে-ময়দানে নেমে রাজনৈতিক লড়াই করে তৃণমূলের মোকাবিলা করার বদলে আদালতের রায়ের উপরেই বেশি ভরসা করেছেন দলের নেতারা ৷ নীচু স্তরের কর্মীরাও আদালতের রায়ের অপেক্ষায় বসে থেকেছেন ৷

বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ আবার স্বীকারও করে নিয়েছে যে, পৌরভোটের জন্য এখন প্রস্তুতই ছিল না দল ৷ আর সেই কারণেই আদালতের দ্বারস্থ হয়ে যেনতেন প্রকারে ভোট আটকানো বা পিছিয়ে দেওয়াই ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য ৷ অথচ প্রাক 2019-পর্বে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মাঠে-ময়দানে নেমে লাগাতার আন্দোলন করেই মমতা বা তৃণমূল বিরোধী ভোটারদের আস্থা অর্জন করেছিল গেরুয়া শিবির ৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, এবার সেই রাজনৈতিক লড়াই থেকে সরে গিয়ে বিজেপি আইন আদালতে লড়াইয়ে যেভাবে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল, তা দেখে ভোটাররাও আর সম্ভবত তৃণমূলের বিরোধী শক্তি হিসেবে বিজেপির উপর আস্থা রাখতে পারেননি ৷

বিধানসভা নির্বাচনের পর তাড়াহুড়ো করে রাজ্য বিজেপি সংগঠনে যে সমস্ত রদবদল করা হয়েছিল, তাকেও ব্যর্থতার অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করছেন দলের নেতারাই ৷ বিধানসভা ভোটের পরই মেয়াদ ফুরনোর আগে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জায়গায় নিয়ে আসা হয় সুকান্ত মজুমদারকে ৷ আরও বেশ কিছু রদবদলও করা হয় ৷ দলেরই একাংশ বলছে, সংগঠনের রদবদল করতে গিয়ে গোটা বিষয়টাই তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ পরিস্থিতি এমনই যে দলের রাজ্য কমিটিতে কারা থাকবেন, তা এখনও চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি ৷

পৌরভোটের আগে কলকাতা পুরসভার 16টি বরোর দায়িত্ব 16 জন বিধায়ককে দিয়েছিল বিজেপি৷ অথচ তাঁরা কেউই কলকাতার বিধায়ক নন ৷ ফলে যে এলাকার দায়িত্ব তাঁদের দেওয়া হয়েছিল সেই এলাকার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণাই ছিল না ওই তাঁদের ৷ সংগঠনের হালও এতটাই খারাপ যে 60 শতাংশ ওয়ার্ডে ঠিক মতো প্রচারই করতে পারেননি দলের রাজ্য স্তরের নেতারা ৷ এমন কী লোক না হওয়ায় খোদ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সভাও বাতিল করে দিতে হয়েছে ৷

আরও পড়ুন : BJP State Committee: বিজেপি'র রাজ্য কমিটিতে রদবদল, আস্থা নতুন মুখে

ফলে ভোটের মুখে বিজেপি নেতারা যতই বলুন আদালত এবং রাজনৈতিক ময়দানে তাঁরা সমান্তরালভাবে লড়ছেন, বাস্তবে যে তা হয়নি তা নির্বাচনের আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ৷ এমন কী তারকা প্রচারকদের নাম প্রকাশ করা হলেও প্রচারের শেষ দিনে কলকাতা পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে হাজির করানো হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংকে ৷ দলের ইস্তেহারেও কোনও স্পষ্ট, দিশা ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে দলেরই অন্দরে ৷ আর এসব কিছু দেখে দেওয়াল লিখনটা পড়ে ফেলেছিলেন অনেকেই ৷ ফলে বিজেপির ফলে রাজ্য বিজেপির সঙ্গে যুক্ত নেতা-কর্মীরাই অবাক নন ৷

সূত্রের খবর, 142 জন প্রার্থীর মধ্যে 80 শতাংশ প্রার্থী তৃণমূলের সংগঠনের চাপে প্রচারেই বের হতে পারেননি। তাই এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছনোও সম্ভব হয়নি ৷ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "কলকাতা পৌরভোটে এই ভরাডুবির কারণ খুঁজতে ইতিমধ্যে দলের একটি আভ্যন্তরীণ কমিটি তৈরি করেছি। সেই কমিটি খুব শীঘ্রই দলকে রিপোর্ট জমা দেবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই আগামী দিনে দল সিদ্ধান্ত নেবে ৷"

কলকাতা, 22 ডিসেম্বর : কলকাতা পৌরভোটে বিজেপির বিপর্যয় ৷ 2015 কলকাতা পৌরভোটে ফলের নিরিখে ছিল 27 শতাংশ ভোট, কমে হল 9 শতাংশ। আসনও কমল গেরুয়া শিবিরের। মাত্র তিনেই কেন থামতে হল ? বিজেপির বিপর্যয়ে উঠে আসছে একাধিক কারণ (Several reasons rise up behind the disaster of BJP in KMC election 2021)।

বিজেপি সূত্রে খবর, কলকাতা পুরভোটে বিজেপি 5-10টি আসন অন্তত পাবে সেটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে রাজ্য নেতৃত্ব রিপোর্ট জমাও দিয়েছিল (State leaders of BJP expected that they will win in 5-10 wards)। কিন্তু এতটাও খারাপ ফল হয়তো কল্পনা করেননি রাজ্য বিজেপি নেতারা ৷ তবে ফল যে খারাপ হবে সেজন্য ভিতর-ভিতর প্রস্তুতই ছিল দলের রাজ্য নেতৃত্ব ৷ শুধু তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, গায়ের জোরে ভোট করানোর অভিযোগ নয় ৷ এই বিপর্যয়ের পিছনে নিজেদেরও একাধিক গলদ দেখছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ৷ বিপর্যয়ের প্রথম এবং প্রধান কারণ হিসেবে রাজনীতির ময়দানে না থেকে আদালতের উপরে অতি নির্ভরশীল হয়ে পড়াকেই দায়ী করছে নেতৃত্বের একাংশ ৷

পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার দিন থেকেই কার্যত আইনি লড়াইয়ে নেমে পড়েছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ৷ কখনও একসঙ্গে সব পুরসভায় ভোটের দাবি, কখনও আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে দরবার করেছে বিজেপি ৷ দলের নেতাদের একাংশ মনে করছে, মাঠে-ময়দানে নেমে রাজনৈতিক লড়াই করে তৃণমূলের মোকাবিলা করার বদলে আদালতের রায়ের উপরেই বেশি ভরসা করেছেন দলের নেতারা ৷ নীচু স্তরের কর্মীরাও আদালতের রায়ের অপেক্ষায় বসে থেকেছেন ৷

বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ আবার স্বীকারও করে নিয়েছে যে, পৌরভোটের জন্য এখন প্রস্তুতই ছিল না দল ৷ আর সেই কারণেই আদালতের দ্বারস্থ হয়ে যেনতেন প্রকারে ভোট আটকানো বা পিছিয়ে দেওয়াই ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য ৷ অথচ প্রাক 2019-পর্বে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মাঠে-ময়দানে নেমে লাগাতার আন্দোলন করেই মমতা বা তৃণমূল বিরোধী ভোটারদের আস্থা অর্জন করেছিল গেরুয়া শিবির ৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, এবার সেই রাজনৈতিক লড়াই থেকে সরে গিয়ে বিজেপি আইন আদালতে লড়াইয়ে যেভাবে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল, তা দেখে ভোটাররাও আর সম্ভবত তৃণমূলের বিরোধী শক্তি হিসেবে বিজেপির উপর আস্থা রাখতে পারেননি ৷

বিধানসভা নির্বাচনের পর তাড়াহুড়ো করে রাজ্য বিজেপি সংগঠনে যে সমস্ত রদবদল করা হয়েছিল, তাকেও ব্যর্থতার অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করছেন দলের নেতারাই ৷ বিধানসভা ভোটের পরই মেয়াদ ফুরনোর আগে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জায়গায় নিয়ে আসা হয় সুকান্ত মজুমদারকে ৷ আরও বেশ কিছু রদবদলও করা হয় ৷ দলেরই একাংশ বলছে, সংগঠনের রদবদল করতে গিয়ে গোটা বিষয়টাই তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ পরিস্থিতি এমনই যে দলের রাজ্য কমিটিতে কারা থাকবেন, তা এখনও চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি ৷

পৌরভোটের আগে কলকাতা পুরসভার 16টি বরোর দায়িত্ব 16 জন বিধায়ককে দিয়েছিল বিজেপি৷ অথচ তাঁরা কেউই কলকাতার বিধায়ক নন ৷ ফলে যে এলাকার দায়িত্ব তাঁদের দেওয়া হয়েছিল সেই এলাকার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণাই ছিল না ওই তাঁদের ৷ সংগঠনের হালও এতটাই খারাপ যে 60 শতাংশ ওয়ার্ডে ঠিক মতো প্রচারই করতে পারেননি দলের রাজ্য স্তরের নেতারা ৷ এমন কী লোক না হওয়ায় খোদ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সভাও বাতিল করে দিতে হয়েছে ৷

আরও পড়ুন : BJP State Committee: বিজেপি'র রাজ্য কমিটিতে রদবদল, আস্থা নতুন মুখে

ফলে ভোটের মুখে বিজেপি নেতারা যতই বলুন আদালত এবং রাজনৈতিক ময়দানে তাঁরা সমান্তরালভাবে লড়ছেন, বাস্তবে যে তা হয়নি তা নির্বাচনের আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ৷ এমন কী তারকা প্রচারকদের নাম প্রকাশ করা হলেও প্রচারের শেষ দিনে কলকাতা পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে হাজির করানো হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংকে ৷ দলের ইস্তেহারেও কোনও স্পষ্ট, দিশা ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে দলেরই অন্দরে ৷ আর এসব কিছু দেখে দেওয়াল লিখনটা পড়ে ফেলেছিলেন অনেকেই ৷ ফলে বিজেপির ফলে রাজ্য বিজেপির সঙ্গে যুক্ত নেতা-কর্মীরাই অবাক নন ৷

সূত্রের খবর, 142 জন প্রার্থীর মধ্যে 80 শতাংশ প্রার্থী তৃণমূলের সংগঠনের চাপে প্রচারেই বের হতে পারেননি। তাই এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছনোও সম্ভব হয়নি ৷ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "কলকাতা পৌরভোটে এই ভরাডুবির কারণ খুঁজতে ইতিমধ্যে দলের একটি আভ্যন্তরীণ কমিটি তৈরি করেছি। সেই কমিটি খুব শীঘ্রই দলকে রিপোর্ট জমা দেবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই আগামী দিনে দল সিদ্ধান্ত নেবে ৷"

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.