কলকাতা, 10 ফেব্রুয়ারি : ছোটদের স্কুল খোলার বিষয়ে চলছে ভাবনা-চিন্তা ৷ এদিন একথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata on School Reopening) ৷ জানান, পরিস্থিতি বুঝে খোলা হবে স্কুল ৷ শুরুতে রোটেশনে চলতে পারে ৷ পাশাপাশি 50 শতাংশ পড়ুয়া নিয়ে স্কুল চালুর ভাবনার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সরকারের তরফে উদ্বাস্তুদের জন্য পাট্টা প্রদান অনুষ্ঠান ছিল । সেই অনুষ্ঠান থেকেই এদিন ছোটদের আবার স্কুলমুখী হওয়ার বিষয়ে সরকারের ভাবনা-চিন্তার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । প্রসঙ্গত, গতকাল অর্থাৎ বুধবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ছোটদের স্কুলমুখী করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। মনে করা হচ্ছে, সেই মতকে গুরুত্ব দিয়েই রোটেশন পদ্ধতিতে প্রাথমিকের ছাত্রছাত্রীদের স্কুলের গন্ডিতে ফিরিয়ে আনতে চাইছে রাজ্য সরকার ।
এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির জন্য পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষালয় চালু করে তার মাধ্যমে শিক্ষাদান প্রক্রিয়া চলছে । আর ছোটদের স্কুল খোলার জন্য আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করে যদি দেখা যায় কোভিড প্রবলেমেটিক হচ্ছে না, তাহলে ছোটদের 50 শতাংশ করে ক্লাস করানো যায় কিনা সেই বিষয়টি দেখা হবে ।" অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগাভাগি করে এই ক্লাসগুলি চালু করতে চাইছে রাজ্য সরকার । সরকার মনে করছে, এই রোটেশন পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা সম্ভব ।
প্রসঙ্গত, এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর থেকেই প্রাথমিক শিক্ষাকে আবার কী করে পুরোদস্তুর ফিরিয়ে আনা যায় তাই নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিল প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ । গত কয়েকদিন ধরেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ছোটদের শিক্ষা নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করছিল । সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি স্পষ্টতই বলেছিলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিশুশিক্ষা ব্যবস্থা । দ্রুত শিশুদের আবার শিক্ষাঙ্গনের নিয়ে আসা সম্ভব না হলে তাদের জন্য বড় ক্ষতি হবে । এরপরই এদিন মুখ্যমন্ত্রী প্রাথমিক স্কুল নিয়ে ভাবনা-চিন্তার কথা জানালেন ।
বিরোধীরা বারবার দাবি করেছে, সমস্ত কিছু যখন চলছে তা হলে স্কুলও খুলে দেওয়া হোক ৷ শিক্ষার অধিকার একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে । প্রাথমিক শিক্ষা ভবিষ্যত প্রজন্মের বুনিয়াদকে দৃঢ় করে । তাই সব শ্রেণির পড়ুয়াদেরই স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করা দরকার । আপাতত অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছেলেমেয়েরা স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করছে । পঞ্চম থেকে সপ্তমের পড়ুয়াদের জন্য চলছে পাড়ায় শিক্ষালয় । বাকিরা অনলাইনেই পড়াশোনা করছে । এখানেই বিরোধিতা বিরোধীদের । তাঁদের দাবি, সকলের কাছে অনলাইন পড়াশোনার পরিকাঠামো নেই ৷ ফলে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বহু পড়ুয়া বঞ্চিত হচ্ছে বলেই অভিযোগ উঠেছে ।
মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের বক্তব্যে ইঙ্গিত স্পষ্ট, কোভিড পরিস্থিতি আয়ত্তে থাকলে প্রাথমিকের জন্যও স্কুল খুলে দেওয়া হবে খুব তাড়াতাড়ি । তাই এবার পাকাপাকিভাবে হয়তো স্কুলের অঙ্গনেই আবার ফিরবে ছোটরা ।
আরও পড়ুন : Offline Exam Protest : দুর্গাপুরে অফলাইন পরীক্ষার প্রতিবাদে কলেজের সামনে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের