ETV Bharat / city

স্যালঁ-পার্লার খুললেও গ্রাহক মেলা নিয়ে সংশয়ে কর্মীরা - বিউটিশিয়ান তাঁরা কুন্ডু

21 মে থেকে ফের খুলছে স্যালঁ-বিউটি পার্লারগুলি ৷ তবে কোরোনার ভয়ে আদৌই কোনও গ্রাহক আসবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে কর্মীরা ৷ মার্চ মাস থেকেই বন্ধ বেতন, কীভাবে সংসার চলবে জানেন না কেউ ৷

parlours
পার্লার
author img

By

Published : May 19, 2020, 8:58 PM IST

কলকাতা, 19 মে: দীর্ঘ দুই মাস চুল-দাড়ি কাটতে না পেরে রীতিমতো ভোল বদলে গিয়েছে অনেকের ৷ লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্যালঁ-বিউটি পার্লারগুলি ৷ দীর্ঘ দুই মাস পর 21 মে থেকে ফের খুলতে চলেছে স্যালঁ-পার্লারগুলি ৷ তবে মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব ৷ কিন্তু এতদিন বন্ধ থাকায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন কর্মচারীরা ৷

ধাপে ধাপে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ করা শুরু করেছে প্রশাসন । দীর্ঘ লকডাউনের ফলে বন্ধ কাজকর্ম ও ব্যবসা । বিউটি পার্লার ও স্যালঁ বন্ধ থাকায় এই পেশার সঙ্গে যুক্ত লক্ষ লক্ষ মানুষ চূড়ান্ত আর্থিক অভাবের মধ্যে পড়েছে ৷

ফ্লোরা'স বিউটি পার্লারের কর্ণধার শর্মিলা সিং ফ্লোরা বলেন যে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই । তবে এতদিন লকডাউনে পার্লার কিংবা স্যালঁর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে কেউ একটা কথাও বলেননি কিংবা কেউ আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি । আমাদের কোনও সংগঠন নেই । তাই আমাদের কথা কে শুনবে? ’’

তিনি কর্মচারীদের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘আমার দুটি পার্লার মিলিয়ে মোট 25 জন কর্মী কাজ করে । আমি এদের সকলকেই বেতন দিচ্ছি । তবে এমন বহু পার্লার রয়েছে, যাঁরা কর্মীদের বেতন দিচ্ছেন না । পার্লার ও স্যালঁগুলি খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও সবকটি স্যালঁকেই গ্রাহক ও কর্মীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে সরকারি নির্দেশানুসারে পরিষেবা দেওয়া উচিত ৷’’

তিনি আরও যোগ করে বলেন, ‘‘পার্লার ও স্যালঁ কর্মীদের কোনও সংগঠন নেই বলে সারা রাজ্যে বা শহরে বর্তমানে কতজন কর্মী রয়েছেন, সেটা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয় । তবে পার্লার কর্মীদের স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা উচিত ৷ পাশাপাশি মেডিক্যাল সরঞ্জামগুলি কেনার জন্যও ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত ৷’’

এ এন জোন স্যালঁ অ্যান্ড অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর রমন ভরদ্বাজ বলেন, ‘‘আজ দীর্ঘ দুই মাস হতে চলল লকডাউন চলছে । এরফলে আমাদের পাঁচটি শাখাই বন্ধ রয়েছে । সবকটি শাখা ও অ্যাকাডেমি মিলিয়ে এখানে কাজ করেন প্রায় কয়েকশো কর্মী । আমরা ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত তাদের বেতন দিতে পেরেছি, তবে আর বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি । যদিও সমস্ত কর্মীরা পরিস্থিতি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হওয়ায় তাঁরাও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন । তবে মার্চ মাসের শুরু থেকে যে বেতন হয়নি, সেটা পরবর্তী সময়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ।’’

21 মে থেকে বিউটি পার্লার ও স্যালঁ খোলার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সবকটি শাখাই এতদিন ধরে বন্ধ রয়েছে । তাই পার্লারগুলিকে আগে ভালো করে পরিষ্কার ও স্যানিটাইজ করতে হবে । পাশাপাশি বিভিন্ন মেডিক্যাল সরঞ্জাম যেমন মাস্ক, টুপি, গ্লাভস ও প্রয়োজনে PPE কিটও সরবরাহ করতে হবে কর্মচারীদের । এছাড়াও সরকারের তরফ থেকে পূর্ণাঙ্গ নির্দেশিকার জন্য অপেক্ষা করতে হবে । তবে পার্লারের কর্মী ও গ্রাহকদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই পার্লারে আসা সমস্ত গ্রাহকদের তথ্য নেওয়া হবে ।’’

একটি বিউটি পার্লারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, ‘‘আমি আজ 16 বছর একই সংস্থায় কাজ করছি । আমার মতো অনেকেই আছেন, যাঁরা বহু বছর ধরে একটি সংস্থার সঙ্গেই যুক্ত রয়েছেন । কোরোনা পরিস্থিতিতে যদি সংস্থাগুলি আমাদের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে আমরা কোথায় যাব? আমরা 20 মার্চ পর্যন্ত কাজ করেছি । কিন্তু মার্চ মাস থেকেই বেতন পাচ্ছি না । আমাদের মতো বহু পার্লার কর্মীরা আজ অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন ।’’

তিনি আরও বলেন,‘‘কোরোনার কারণে সাধারণ মানুষ এখন এতটাই আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন যে পার্লারগুলো খুলে গেলেও কতজন গ্রাহক পরিষেবা নিতে আসবেন, সে বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে ।’’

বিউটিশিয়ান তাঁরা কুন্ডু বলেন, ‘‘আমি কোনও পার্লারের সঙ্গে যুক্ত নই । আমি গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দিই । আজ দুই মাস হল উপার্জন বন্ধ হয়ে গিয়েছে । বিয়েতে সাজানোর অনেকগুলো বুকিং পেয়েছিলাম । কিন্তু সবকটাই হাতছাড়া হয়ে গেল লকডাউনের কারণে । আমার উপার্জনের উপর নির্ভর করেই সংসার চলে । পার্লার খুললেও আমরা যাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দিই, কোরোনার ভয়ে গ্রাহকরা আমাদের হয়তো আর ডাকবেনই না । আমার মতো বহু মানুষ আছেন, যাঁরা বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দেন ৷ আমাদের অবস্থা খুবই শোচনীয় ।’’

লকডাউনের জেরে বিগত দুই মাসে আনুমানিক 10 কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ৷ লকডাউন উঠলেও আগের মতো ব্যবসা আর ফিরবে কিনা সেই নিয়ে সংশয়ে স্যালঁ-পার্লারকর্মীরা ৷

কলকাতা, 19 মে: দীর্ঘ দুই মাস চুল-দাড়ি কাটতে না পেরে রীতিমতো ভোল বদলে গিয়েছে অনেকের ৷ লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্যালঁ-বিউটি পার্লারগুলি ৷ দীর্ঘ দুই মাস পর 21 মে থেকে ফের খুলতে চলেছে স্যালঁ-পার্লারগুলি ৷ তবে মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব ৷ কিন্তু এতদিন বন্ধ থাকায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন কর্মচারীরা ৷

ধাপে ধাপে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ করা শুরু করেছে প্রশাসন । দীর্ঘ লকডাউনের ফলে বন্ধ কাজকর্ম ও ব্যবসা । বিউটি পার্লার ও স্যালঁ বন্ধ থাকায় এই পেশার সঙ্গে যুক্ত লক্ষ লক্ষ মানুষ চূড়ান্ত আর্থিক অভাবের মধ্যে পড়েছে ৷

ফ্লোরা'স বিউটি পার্লারের কর্ণধার শর্মিলা সিং ফ্লোরা বলেন যে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই । তবে এতদিন লকডাউনে পার্লার কিংবা স্যালঁর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে কেউ একটা কথাও বলেননি কিংবা কেউ আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি । আমাদের কোনও সংগঠন নেই । তাই আমাদের কথা কে শুনবে? ’’

তিনি কর্মচারীদের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘আমার দুটি পার্লার মিলিয়ে মোট 25 জন কর্মী কাজ করে । আমি এদের সকলকেই বেতন দিচ্ছি । তবে এমন বহু পার্লার রয়েছে, যাঁরা কর্মীদের বেতন দিচ্ছেন না । পার্লার ও স্যালঁগুলি খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও সবকটি স্যালঁকেই গ্রাহক ও কর্মীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে সরকারি নির্দেশানুসারে পরিষেবা দেওয়া উচিত ৷’’

তিনি আরও যোগ করে বলেন, ‘‘পার্লার ও স্যালঁ কর্মীদের কোনও সংগঠন নেই বলে সারা রাজ্যে বা শহরে বর্তমানে কতজন কর্মী রয়েছেন, সেটা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয় । তবে পার্লার কর্মীদের স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা উচিত ৷ পাশাপাশি মেডিক্যাল সরঞ্জামগুলি কেনার জন্যও ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত ৷’’

এ এন জোন স্যালঁ অ্যান্ড অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর রমন ভরদ্বাজ বলেন, ‘‘আজ দীর্ঘ দুই মাস হতে চলল লকডাউন চলছে । এরফলে আমাদের পাঁচটি শাখাই বন্ধ রয়েছে । সবকটি শাখা ও অ্যাকাডেমি মিলিয়ে এখানে কাজ করেন প্রায় কয়েকশো কর্মী । আমরা ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত তাদের বেতন দিতে পেরেছি, তবে আর বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি । যদিও সমস্ত কর্মীরা পরিস্থিতি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হওয়ায় তাঁরাও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন । তবে মার্চ মাসের শুরু থেকে যে বেতন হয়নি, সেটা পরবর্তী সময়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ।’’

21 মে থেকে বিউটি পার্লার ও স্যালঁ খোলার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সবকটি শাখাই এতদিন ধরে বন্ধ রয়েছে । তাই পার্লারগুলিকে আগে ভালো করে পরিষ্কার ও স্যানিটাইজ করতে হবে । পাশাপাশি বিভিন্ন মেডিক্যাল সরঞ্জাম যেমন মাস্ক, টুপি, গ্লাভস ও প্রয়োজনে PPE কিটও সরবরাহ করতে হবে কর্মচারীদের । এছাড়াও সরকারের তরফ থেকে পূর্ণাঙ্গ নির্দেশিকার জন্য অপেক্ষা করতে হবে । তবে পার্লারের কর্মী ও গ্রাহকদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই পার্লারে আসা সমস্ত গ্রাহকদের তথ্য নেওয়া হবে ।’’

একটি বিউটি পার্লারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, ‘‘আমি আজ 16 বছর একই সংস্থায় কাজ করছি । আমার মতো অনেকেই আছেন, যাঁরা বহু বছর ধরে একটি সংস্থার সঙ্গেই যুক্ত রয়েছেন । কোরোনা পরিস্থিতিতে যদি সংস্থাগুলি আমাদের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে আমরা কোথায় যাব? আমরা 20 মার্চ পর্যন্ত কাজ করেছি । কিন্তু মার্চ মাস থেকেই বেতন পাচ্ছি না । আমাদের মতো বহু পার্লার কর্মীরা আজ অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন ।’’

তিনি আরও বলেন,‘‘কোরোনার কারণে সাধারণ মানুষ এখন এতটাই আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন যে পার্লারগুলো খুলে গেলেও কতজন গ্রাহক পরিষেবা নিতে আসবেন, সে বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে ।’’

বিউটিশিয়ান তাঁরা কুন্ডু বলেন, ‘‘আমি কোনও পার্লারের সঙ্গে যুক্ত নই । আমি গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দিই । আজ দুই মাস হল উপার্জন বন্ধ হয়ে গিয়েছে । বিয়েতে সাজানোর অনেকগুলো বুকিং পেয়েছিলাম । কিন্তু সবকটাই হাতছাড়া হয়ে গেল লকডাউনের কারণে । আমার উপার্জনের উপর নির্ভর করেই সংসার চলে । পার্লার খুললেও আমরা যাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দিই, কোরোনার ভয়ে গ্রাহকরা আমাদের হয়তো আর ডাকবেনই না । আমার মতো বহু মানুষ আছেন, যাঁরা বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দেন ৷ আমাদের অবস্থা খুবই শোচনীয় ।’’

লকডাউনের জেরে বিগত দুই মাসে আনুমানিক 10 কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ৷ লকডাউন উঠলেও আগের মতো ব্যবসা আর ফিরবে কিনা সেই নিয়ে সংশয়ে স্যালঁ-পার্লারকর্মীরা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.