কলকাতা, 12 সেপ্টেম্বর: দু'বছরের অতিমারি কাটিয়ে ফের টাকার বিনিময়ে ফটো তোলার প্রক্রিয়া শুরু হল কুমোরটুলিতে (Photography in Kumartuli) । 50-100 টাকার টিকিট কেটে অফুরান ছবি তোলার সুযোগ পাচ্ছেন চিত্রগ্রাহকরা । কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সমিতি সূত্রে খবর, বিগত বছরগুলির তুলনায় এবছর ফটোগ্রাফারের সংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে । সোমবার পর্যন্ত প্রায় কুড়ি হাজার জনকে টিকিটের বিনিময়ে ফটো তোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে । লকডাউনের আগেও যা 5-6 হাজারে সীমাবদ্ধ ছিল ।
ফটো তুলতে মূলত দুই ধরনের টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে (Two types of tickets for taking photos at Kumartuli) । টানা 15 দিনের জন্য কুমোরটুলি ছবি তুলতে 50 টাকার টিকিট । আর গোটা মরশুমের জন্য অফুরান ছবি তুলতে 100 টাকা টিকিট কাটতে হচ্ছে চিত্রগ্রাহকদের । কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক বাবু পাল বলেন, "আমরা ইতিমধ্যে 20 হাজার জনকে টিকিট দিয়েছি । আশা করছি সংখ্যাটা আরও বাড়বে ।"
কোভিডের আগে তো সংখ্যাটা পাঁচ-ছয় হাজারেই সীমাবদ্ধ ছিল । হটাৎ করে সংখ্যাটা বৃদ্ধির কারণ কী?
সূত্রের খবর, আগে মোবাইলে ভিডিয়োকারীদের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা ছিল না । কিন্ত এখন ডিএসএলআরের পাশাপাশি দামী মোবাইলেও ভ্লগিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয় । তাই যারা মোবাইল প্রতিমার ছবি তোলার পাশাপাশি ভিডিয়ো করছে, তাদেরও টিকিট কাটতে হচ্ছে । আর এই মোবাইল ভ্লগারদের সংখ্যাটা দিনে দিনে বাড়ছে ।
ফটোগ্রাফারদের কাছে টিকিট বিক্রির টাকা কোন কাজে ব্যবহার হয়?
এই প্রশ্নের উত্তরে বাবু পাল বলেন, "কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সমিতির অধীন যে সমস্ত শিল্পী বা শ্রমিকরা রয়েছেন তাদের চিকিৎসার কাজেই ব্যবহার করা হবে সমস্ত টাকা ।" মূলত, চক্ষু পরীক্ষা-সহ একাধিক শারীরিক সমস্যার চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় এই টাকা। মরশুমে বহু কারিগর জেলা থেকে আসেন । প্রতিমা সরাতে বা গাড়িতে তোলা-নামানোর সময় অনেকে চোট পান । সেই চোট সারানোর কাজে খরচ করা হয় এই টাকা । এছাড়া বছরভর শিল্পী ও তাঁর পরিবারদের নানান সুযোগ-সুবিধার জন্যও ব্যবহৃত হয়ে থাকে এই অর্থ।
আরও পড়ুন: কুমোরটুলি থেকে রেকর্ড সংখ্যক দুর্গা প্রতিমার বিদেশযাত্রা এবার
কুমোরটুলিতে নানা কাজে দর্শকরা আসেন । কেউ ঘুরতে আসেন তো, কেউ প্রতিমার বরাত দিতে । কেউবা ভিডিয়ো-ছবি তোলার জন্য । নিজস্ব ব্লগিং বা ভ্লগিংয়ের জন্য । তাদের মধ্যে যাদবপুরের বাসিন্দা রোহন দাস টিকিটের বিনিময়ে ছবি তোলার সুযোগকে সাধুবাদ জানান । তিনি বলেন, "আমরা ছবি তুলি, ভিডিয়ো করি, সেগুলো কোনও কোনও কাজে লাগে । যারা এখানে আসতে পারেন না, সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের কুমোরটুলিকে দেখার সুযোগ করে দিই । তাতে আমাদেরও আয় হয় । ঠিক তেমনই টিকিটের টাকায় শিল্পীদের চিকিৎসা হয় । এই দু'য়ের মেলবন্ধনেই কুমোরটুলি । এটাই ভালোলাগা ।"