কলকাতা, 20 নভেম্বর: দীর্ঘ আটমাস ধরে বন্ধ রয়েছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে থাকা রবীন্দ্রভারতী মিউজ়িয়াম । এতদিন বন্ধ থাকায় স্বাভাবিকভাবেই রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেশ কিছু সংরক্ষিত শিল্প কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । রবীন্দ্রভারতী মিউজ়িয়াম সূত্রে জানা গেছে, সেই ক্ষতি এমন নয় যে তা পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে না । কিন্তু, সেই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজন মিউজ়িয়াম পুনরায় খোলার । তাই নভেম্বরের শেষেই যাতে তা খোলা যায় সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে ।
চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে গিরীশ পার্কের কাছে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে অবস্থিত রবীন্দ্রভারতী মিউজ়িয়াম । এই মিউজ়িয়ামে ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় নবজাগরণের তথ্যাবলি রয়েছে ৷ রয়েছে বাংলা এবং পাশ্চাত্য পেন্টিংয়ের দু'টি গ্যালারি । এ ছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন ও কর্মজীবন নিয়ে রয়েছে গ্যালারি । পাশাপাশি, মিউজ়িয়ামে আছে চিন গ্যালারি, জাপান গ্যালারি, US গ্যালারি এবং হাঙ্গারি গ্যালারি । এই গ্যালারিগুলিতে ওই সব দেশের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পর্ক ও দর্শনের সঙ্গে সম্পর্কিত সামগ্রী রয়েছে ।
চলতি বছর মার্চ মাসের শেষ থেকে বন্ধ রয়েছে রবীন্দ্রভারতী মিউজ়িয়াম । দীর্ঘ আটমাস কোনও রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া অনেক সংগ্রহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আশঙ্কায় রয়েছে মিউজ়িয়াম কর্তৃপক্ষ । তাই দ্রুত মিউজ়িয়াম খুলে সংরক্ষিত শিল্প ও নির্দেশনগুলির পরিচর্যার কাজ শুরু করতে চাইছেন তাঁরা । এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রভারতী মিউজ়িয়াম কমিটির এক সদস্য বলেন, "আমাদের আলোচনা চলছে । তবে, কোনও নির্দিষ্ট দিন এখনও স্থির হয়নি । আমরা চাইছি যত দ্রুত সম্ভব খুলতে । কিন্তু, আমাদের তো হেরিটেজ বিল্ডিং । তাই একটু মেইনটেনেন্স না করে খোলাটা মুশকিল । এতদিন মিউজ়িয়াম কোনওদিন বন্ধ থাকে না । প্রায় সাত-আট মাস বন্ধ ছিল । এয়ার কন্ডিশনিং চলেনি, দরজা-জানালা বন্ধ ছিল । তাই আমাদের জিনিসগুলো চেক করতে হবে । দেখা যাক কতদূর এগোয় । আমরা চাইছি তাড়াতাড়ি খুলতে ।"
জানা গেছে, সংগৃহীত জিনিসের প্রায় 98 শতাংশ ঠিক অবস্থায় রয়েছে । তার কারণ, লকডাউন চললেও তার মধ্যে ও পরবর্তীকালে মিউজ়িয়ামের কয়েকজন আধিকারিক গিয়ে ততটা সম্ভব সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করতেন । তবে, প্রফেশনাল মানুষদের দিয়ে পরিচর্যা করা সম্ভব হয়নি । সবমিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ 2 শতাংশ ছাড়াবে না বলেই মনে করছে কর্তৃপক্ষ । তবে, এতদিন বন্ধ থাকা ও পরিচর্যার অভাবে কিছু পেন্টিংয়ে ফানগাস জন্মে থাকতে পারে । তবে, তা পরিষ্কার করে পেন্টিংগুলিকে ফের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা অসম্ভব নয় । ইতিমধ্যেই মিউজ়িয়ামের তরফে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে মিউজ়িয়াম খোলার স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP)। পাশাপাশি, খুব শীঘ্রই হবে মিউজ়িয়াম কমিটির বৈঠক । তারপরেই নভেম্বরের শেষে মিউজ়িয়াম খোলা হবে কি না তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে ।