কলকাতা, 5 জুলাই: এবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বসেই অধ্যাপকদের খাতা দেখতে হবে । 'স্পট ইভ্যালুয়েশন ' নিয়ে এমনটাই নির্দেশিকা জারি করেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক (Controller of Examination)। এর পরেই একাংশের অধ্যাপকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত সমস্ত কলেজের অধ্যাপকদের একটি নির্ধারিত সময় বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে স্নাতকের চতুর্থ ও ষষ্ঠ সিমেস্টারের অনার্সের খাতার 'স্পট ইভ্যালুয়েশন' করতে হবে । নির্দেশিকা অনুসারে 5 থেকে 11 জুলাই পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে বসে বেলা 11টা থেকে সন্ধ্যা 7টা পর্যন্ত পরীক্ষার খাতা দেখতে হবে অধ্যাপকদের । খাতা দেখার জন্য দুটি হল বরাদ্দ করা হয়েছে । উচ্চশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, 31 অগস্টের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে ফল । এভাবে সময় বেঁধে দেওয়ার ফলে সমস্যায় পড়েছেন অধ্যাপকরা । এমনটাই অভিযোগ করছেন তাঁরা । অধ্যাপকরা বলেন, যে সময় বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে খাতা দেখতে হবে ওই সময় পাশাপাশি বাকি সেমিস্টার পরীক্ষায় নজরদারির কাজ ছাড়াও প্র্যাকটিকাল ক্লাসও নিতে হবে ।
পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি’র (ওয়েবকুটা) সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য বলেন, "অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যখন 'স্পট ইভ্যালুয়েশন' বা খাতা দেখার কাজ চলে তখন অধ্যাপকদের দিয়ে আর অন্য কোনও কাজ করানো হয় না । অধ্যাপকরা টানা খাতা দেখে সেই পর্ব শেষ করেন । অথচ একদিকে ক্লাসও নিতে হবে আবার বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে খাতাও দেখতে হবে । অধ্যাপকরা কোন কাজটা করবেন ।"
আর এক অধ্যাপক গোকুলানন্দ গোস্বামী বলেন, "এই সময় অধ্যাপকদের একসঙ্গে তিনটি কাজ করতে হবে । এছাড়াও এই সময় বাকি প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা চলবে ৷ যেজন্য অধ্যাপকদের অন্য কলেজে গিয়ে দু'দিন নজরদারি করতে হবে । তাই এরা খাতা দেখতে পারবেন না । কাজেই মুষ্টিমেয় কয়েকজন অধ্যাপক থাকবেন, তাদের উপর খাতা দেখার পুরো চাপটা পড়বে ।"
আরও পড়ুন: পিছিয়ে গেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষা
তিনি আরও বলেন, "স্পট ইভ্যালুয়েশনের একটি দিক হল, অনার্সের খাতা দেখতে গেলে রেফারেন্সের জন্য বইয়ের প্রয়োজন পরে । তাহলে কি অধ্যাপকদের ব্যাগ ভর্তি করে বই নিয়ে যাবে, না বিশ্ববিদ্যালয় বই দেবে ৷ এই বিষয়টি নির্দেশিকায় পরিষ্কার করে উল্লেখ্য করা নেই । পাশাপাশি অনার্সের খাতা একটানা এত ঘণ্টা স্পটে গিয়ে এভাবে দেখা সম্ভব নয় অনেকের ক্ষেত্রেই । অন্যদিকে কলেজে কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়াও চলবে ৷ আর তারই মধ্যে অনেক অধ্যাপক খাতা দেখতে চলে যাবেন । তাই কলেজের উপরেও বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে ।"