কলকাতা, 26 এপ্রিল : অতি সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অপরাধের ঘটনায় শিরোনামে এসেছে বেহালা । তা চড়কতলা লেনে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য থেকে হরিদেবপুরে অটোর মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিস্ফোরক রাখার ঘটনা । সবেতেই নাম এসেছে বেহালা এলাকার (Political Situation in dire at Behala) ।
এই বিষয়ে অনেকেই বলছেন, বর্তমানে বেহালার রাজনৈতিক সমীকরণটা অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে । একসময় এলাকায় প্রভাব ছিল মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের । তবে বর্তমানে ধীরে ধীরে একাধিক ঘটনা সামনে আসার মাধ্যমে তাঁর প্রভাব অনেকটাই কমেছে । তাছাড়াও এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসা থেকে শুরু করে সিবিআইয়ের তলব, এই সবকিছুতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রভাব এবং আনুগত্য অনেকটাই কমেছে বলে মনে করছেন এলাকার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা ।
এখান থেকেই যাবতীয় ঘটনার সূত্রপাত । মনে করা হচ্ছে যখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রভাব কমছে, ঠিক সেই সময়ে এলাকায় রাজনৈতিক উত্থান হচ্ছে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের । কিন্তু আচমকাই প্রভাবশালীদের জায়গায় রত্না চট্টোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্বের রাজনৈতিক উত্থানকে অনেকেই মেনে নিতে চাইছেন না । ফলে একটি অসম লড়াই পরিলক্ষিত হচ্ছে এলাকায় । অনেকের মতে, এই অসম প্রতিযোগিতার ফলেই মাথাচাড়া দিচ্ছে এলাকা দখলের লড়াই ৷ এলাকা কার দখলে থাকবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চলছে ঠান্ডা যুদ্ধ । যদিও এই বিষয়ে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা করা সম্ভব হয়নি । একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি ।
এলাকার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অনুমান, এই অসম লড়াই এবং ঠান্ডা যুদ্ধের ফলে এলাকায় দিনের পর দিন বাড়ছে অশান্তি । বাড়ছে সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য । সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেহালা চরকতলা লেনে সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য তারই একটি উদাহরণ, বলে মনে করছেন এলাকার বিশিষ্টজনেরা । শুধু রাজনৈতিক সমীকরণ নয়, পাশাপাশি পুলিশি ব্যবস্থা অনেকটা ভেঙেছে বলে অভিযোগ । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেহালা থানার একজন পুলিশ আধিকারিক জানান, এই এলাকায় বেহালা থানা, বেহালা মহিলা থানা, হরিদেবপুর থানা, পর্ণশ্রী থানা, ঠাকুরপুকুর থানা এলাকাগুলির রাজ্য পুলিশ আর কলকাতা পুলিশের সংযোগস্থল এলাকা । এর পরেই পড়ছে ডায়মন্ডহারবার জেলা পুলিশ এলাকা ।
অভিযোগ, বেহালার মধ্যে একাধিক বহিরাগতরা হামেশাই ঢুকে তাণ্ডব চালায় । তাঁরা মূলত ঢোকে আমতলা, ডায়মন্ড হারবার-সহ দক্ষিণ 24 পরগনার এলাকা থেকে । অভিযোগ, কোনওরকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, কোনও প্রকারের নাকা চেকিংয়ের বন্দোবস্ত করা হয় না এই এলাকায় । ফলে বেহালা থেকে ঠাকুরপুকুর এবং হরিদেবপুর এলাকায় অনায়াসে বহিরাগতরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে দক্ষিণ 24 পরগনার দিক থেকে বেরিয়ে যেতে পারে ।
আরও পড়ুন : TMC Inner Clash at Behala : মেলাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত বেহালার চড়কতলা, আটক 9