কলকাতা, 7 ফেব্রুয়ারি : রাজ্যপাল আসার আগে টান টান উত্তেজনা ছিল শাসক শিবিরে । বাজেট বক্তৃতায় কী বলবেন রাজ্যপাল ? রাজ্যপাল যদি রাজ্য সরকারের লিখিত ভাষণ পাঠ না করে নিজের স্বতন্ত্র ভাবনা যোগ করেন তাহলে কী হবে ? রাজ্যপালের বক্তব্যে যদি শাসকদলের সমালোচনা করা হয় ৷ তবে সেসব কিছু হল না ৷
কেন এই আশঙ্কা ? রাজ্য-রাজ্যপাল একাধিক ইশুতে সংঘাত হয়েছে । রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে CAA নিয়ে আন্দোলন সব বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্যের বিপরীত বক্তব্য শোনা গেছে রাজ্যপালের মুখে । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের সম্মুখীন হতে হয় রাজ্যপালকে । এই বিক্ষোভের পিছনে শাসকদলের হাত আছে বলে ঠারে ঠারে বুঝিয়ে দেন রাজ্যপালও । এজন্য বাজেট শুরু হওয়ার আগে একটা যুদ্ধং দেহি মনোভাব ছিল দুই শিবিরে । রাজ্যের ঠিক করে দেওয়া প্রাথমিক ভাষণ পড়তে বেঁকে বসেন রাজ্যপাল । অথচ বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণ মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষ । তাই রাজ্যপালের বক্তব্য নিয়ে শাসক শিবির যথেষ্ট চিন্তায় ছিল ।
এই আশঙ্কায় রাজ্যপালকে পালটা দিতে শাসকদলের বিধায়করা "তৈরি হয়ে এসেছিলেন" বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে। শাসকদলের মহিলা বিধায়কদের অনেকেরই ব্যাগে ছিল কালো কাপড়। বিধায়কদের সঙ্গে ছিল গো ব্যাক রাজ্যপাল স্লোগানও। বাড়ি থেকে তাঁরা প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলেন। কিন্তু বিধানসভার মধ্যে এভাবে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত হলে তা অত্যন্ত অশোভন হত । তাই দলের বিধায়কদের সংযত করতে হাল ধরেন বিধানসভার পরিষদীয় মন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ।
সকালে জরুরি তলব করে শাসকদলের সব বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে তিনি কড়া নির্দেশ দেন রাজ্যপাল যাই বলুন, শাসকদলের বিধায়করা যেন কোনও কটূক্তি না করেন । বিশেষ করে হুগলির দুই বিধায়ক বেচারাম মান্না এবং অসীমা পাত্রকে বারবার সতর্ক করেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলের অন্য সব বিধায়কদেরও কড়া নির্দেশ দেন। রাজ্যপালের সঙ্গে কোনওরকম অশালীন আচরণ করা চলবে না। বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পালকেও সতর্ক করা হয় ।
যদিও এ'সব কিছুই হয়নি । রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের দেওয়া লিখিত ভাষণ পাঠ করেন । রাজ্যপাল বলেছিলেন ইতিহাস সৃষ্টি করবেন । তিনি সংঘাত এড়ালেন, সৌজন্য দেখালেন , ইতিহাস সৃষ্টি হল না ।