মধ্যমগ্রাম, 30 জুলাই: বারাসতের নামী বিপণী সংস্থার কর্ণধারের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠতার কথা আগেই সামনে এসেছিল ৷ এবার মধ্যমগ্রামের প্রসিদ্ধ স্বর্ণ প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গেও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর যোগসূত্রের বিষয়টি ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে (Partha Chatterjee's name has been linked with famous gold traders company) ৷ যার মূলে একটি ছবি। রহস্যে ভরা সেই ছবি হাতে এসেছে ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির কাছে। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে নামী ওই স্বর্ণ বিপণী সংস্থার ভিতরে বসে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ধৃত প্রাক্তন মন্ত্রীর ঠিক সামনেই বসে রহস্যময় এক মহিলা। যাকে ওই বিপণী সংস্থা থেকে সোনার গয়না কিনতে দেখা যাচ্ছে । রহস্যময় ওই মহিলার মুখ ছবিতে দেখা না-গেলেও তিনি পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে।
আর এই ছবিই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ৷ অনেকেই স্বর্ণ প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্কের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। ইডি-র এই সংস্থা নিয়ে তদন্ত করা উচিত বলে দাবি জানিয়েছে বিরোধী শিবির। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই একের পর এক সম্পত্তির হদিশ মিলছে। ইতিমধ্যেই পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু'টি ফ্ল্যাট থেকে বিপুল নগদ টাকা, সোনাদানা সহ প্রচুর নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি আধিকারিকরা। তদন্ত করতে গিয়ে নিত্যদিনই বহু অজানা লেনদেন এবং ঘনিষ্ঠদের বিষয়ে তথ্যের সন্ধান উঠে আসছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। এমনই খবর ইডি সূত্রে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে পার্থ ঘনিষ্ঠদের ওপর নজর রাখার কাজ শুরু করেছে ইডির আধিকারিকরা। কার কার সঙ্গে বেশি মেলামেশা করতেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সেবিষয়েও খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এরইমধ্যে এবার সামনে এল মধ্যমগ্রামে নামী স্বর্ণ প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে পার্থ-র যোগ! জানা গিয়েছে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতাদের যে ছবিটি ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির হাতে এসেছে সেটি বছর খানেকের পুরনো। তখন নামী ওই সংস্থার শাখাটি ছিল মধ্যমগ্রাম দোলতলা সংলগ্ন যশোর রোডের ধারে। বর্তমানে সেটির ঠিকানা মধ্যমগ্রাম সোদপুর রোডের পাশে। ছবির সত্যতা যাচাই করতে ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি ঢুঁ মেরেছিল মধ্যমগ্রাম-সোদপুর রোডের ধারে ওই সংস্থার শাখাতে। ছবিটি যে তাঁদের সংস্থার শাখারই তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন সেখানকার দায়িত্বে থাকা এক কর্তা। যদিও সেই ছবিটি সংস্থার কোন শাখার, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন: শান্তিনিকেতনে 'অপা'-র মালিক পার্থ-অর্পিতাই, ভূমি-রাজস্ব দফতরে নথিভুক্ত দলিল প্রকাশ্যে
এদিকে, এই ঘটনায় শিক্ষক দুর্নীতির কোটি কোটি টাকার লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিরোধীরা। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি প্রত্যেকেই একযোগে শাসকদলকে নিশানা করে টাকা উদ্ধার কাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সরব হয়েছে। পাশাপাশি হাওলা কিংবা হুন্ডির মাধ্যমে দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে কি না, তারও তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা। স্বভাবতই ছবি সামনে আসতে বিড়ম্বনা আরও বেড়েছে শাসক শিবিরে । এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার চেষ্টা হলেও কোনও জবাব মেলেনি তৃণমূলের নেতৃত্বের।