ETV Bharat / city

Clamour for Partha Removal: মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত হওয়া উচিত পার্থর ? নৈতিকতার প্রশ্ন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা - নিয়োগ দুর্নীতি মামলা

মন্ত্রিসভা বা দলের পদ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) কি সরিয়ে দেওয়া উচিত ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবটাই নীতি নৈতিকতার প্রশ্ন (Clamour for Partha Removal)৷

Partha Chatterjee removal from cabinet is not about constitution but morality
মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত হওয়া উচিত পার্থর ? নৈতিকতার প্রশ্ন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
author img

By

Published : Jul 26, 2022, 6:57 PM IST

কলকাতা, 26 জুলাই: শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় (SSC Recruitment Scam) 27 ঘণ্টা জেরার পর শনিবার গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমানে শিল্প ও পরিষদীয় দফতরের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Clamour for Partha Removal)। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি । বরং গত শনিবার বা গতকাল শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে বারবার বলা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে দল । অর্থাৎ এই বক্তব্য থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট, এখনই তাঁকে দলের মহাসচিব বা অন্য কোনও পদ থেকে সরানো হবে না (Partha Chatterjee removal)। এখান থেকেই রাজনৈতিক মহলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এমন কেউ কেন গ্রেফতার হওয়ার পরেও মন্ত্রী বা দলের পদে থাকবেন ?

এ বিষয়ে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক অমল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে । প্রবীণ এই শিক্ষাবিদ শারীরিক ভাবে অসুস্থ । সে কারণেই তিনি এ বিষয়ে বেশি কথা বলতে পারেননি । তবে ফিজিয়োথেরাপির মাঝেই তিনি জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সে ভাবে কিছু নেই । প্রশ্নটা নৈতিকতার । যিনি সরকারের প্রধান, তিনি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক । অতএব এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী যদি চান, তাহলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাতে পারেন । তবে তা কতটা কার্যকরী বা নৈতিক সে বিষয়ে প্রশ্ন থাকছে ।

তাঁর এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন আরও এক প্রবীণ শিক্ষাবিদ তথা রাজনৈতিক বিশ্লেষক পবিত্র সরকার । তাঁকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "পরিষদীয় চৌহদ্দিতে কী নিয়ম আছে তা আমার ঠিক জানা নেই । তবে এখানে প্রশ্ন অবশ্যই নৈতিকতার । এখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর দল কী সিদ্ধান্ত নেবে সবচেয়ে ভালো তারাই বলতে পারবেন ।" একইসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল অতীতে কোনও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ক্ষেত্রে কি এমন নজির রয়েছে ? জবাবে পবিত্রবাবু বলেন, এ ক্ষেত্রে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে কথা না বলাই ভালো । অতীতে না দেখে এখন সরকার বা পার্থবাবু নিজে কি করতে চান সেটাই সবার আগে দেখা উচিত ।

আরও পড়ুন: এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে 28 জুলাই মহামিছিল বিজেপির

অন্যদিকে, এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভাশিস মৈত্র বলেন, দেশ বা রাজ্য সর্বত্রই এখন দুর্নীতিটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে পড়েছে । সাধারণ ভোট বাক্সে বাস্তবে এর কতটা প্রভাব রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে । কিন্তু অতীতে বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে রাজনৈতিক নেতারা এমন ঘটনা ঘটালে পদ বা মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করতেন । এ ক্ষেত্রে এটাও অনেকটা নৈতিকতার প্রশ্ন । দল কী ভাবছে কী বলছে, মুখ্যমন্ত্রী কী ভাবছেন তার উপর নির্ভরশীল ।

আমরা ইতিহাসের সরণী বেয়ে যদি একটু পিছনে চলে যাই তাহলে দেখতে পাব, মহারাষ্ট্রে 2016 সালে ফড়ণবীস সরকারের দু'নম্বর মন্ত্রী তথা বিজেপির অন্যতম হেভিওয়েট নেতা একনাথ খাড়সে । দাউদের সঙ্গে যোগাযোগ ও জমি কেলেঙ্কারির জেরে সে সময় মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়েছিল খাড়সেকে । অনেকেরই প্রশ্ন, তাঁর দলের দুই নম্বর ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তৎকালীন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস যে পদক্ষেপ করতে পেরেছিলেন, কেন সেই একই পদক্ষেপ নিতে পারছেন না এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ?

শুধু ফড়ণবীস সরকার নয়, একই ভাবে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান এনসিপি নেতা অনিল দেশমুখকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রিসভা থেকে । টুজি কেলেঙ্কারির সময় ইউপিএ টু সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল তৎকালীন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজাকে । সে সময় এম করুণানিধির মেয়ে এম কানিমোঝিকেও এই মামলার জন্য পদ থেকে সরে যেতে হয় । পরে অবশ্য আদালতে এই দু'জন ক্লিনচিট পান । এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে, দুর্নীতির ইতিহাস কিন্তু শুধু বাংলা নয় দেশেও কম হয়নি । কিন্তু রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, শুধু আইনে যে শাস্তির বিধান আছে, তার জন্য কেন অপেক্ষা ? দুর্নীতি প্রকাশ্যে এলে এবং অভিযোগ উঠলে কেন একজন রাজনীতিক পদত্যাগ করবেন না তাঁর পদ এবং মন্ত্রিত্ব থেকে ?

কলকাতা, 26 জুলাই: শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় (SSC Recruitment Scam) 27 ঘণ্টা জেরার পর শনিবার গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমানে শিল্প ও পরিষদীয় দফতরের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Clamour for Partha Removal)। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি । বরং গত শনিবার বা গতকাল শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে বারবার বলা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে দল । অর্থাৎ এই বক্তব্য থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট, এখনই তাঁকে দলের মহাসচিব বা অন্য কোনও পদ থেকে সরানো হবে না (Partha Chatterjee removal)। এখান থেকেই রাজনৈতিক মহলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এমন কেউ কেন গ্রেফতার হওয়ার পরেও মন্ত্রী বা দলের পদে থাকবেন ?

এ বিষয়ে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক অমল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে । প্রবীণ এই শিক্ষাবিদ শারীরিক ভাবে অসুস্থ । সে কারণেই তিনি এ বিষয়ে বেশি কথা বলতে পারেননি । তবে ফিজিয়োথেরাপির মাঝেই তিনি জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সে ভাবে কিছু নেই । প্রশ্নটা নৈতিকতার । যিনি সরকারের প্রধান, তিনি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক । অতএব এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী যদি চান, তাহলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাতে পারেন । তবে তা কতটা কার্যকরী বা নৈতিক সে বিষয়ে প্রশ্ন থাকছে ।

তাঁর এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন আরও এক প্রবীণ শিক্ষাবিদ তথা রাজনৈতিক বিশ্লেষক পবিত্র সরকার । তাঁকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "পরিষদীয় চৌহদ্দিতে কী নিয়ম আছে তা আমার ঠিক জানা নেই । তবে এখানে প্রশ্ন অবশ্যই নৈতিকতার । এখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর দল কী সিদ্ধান্ত নেবে সবচেয়ে ভালো তারাই বলতে পারবেন ।" একইসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল অতীতে কোনও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ক্ষেত্রে কি এমন নজির রয়েছে ? জবাবে পবিত্রবাবু বলেন, এ ক্ষেত্রে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে কথা না বলাই ভালো । অতীতে না দেখে এখন সরকার বা পার্থবাবু নিজে কি করতে চান সেটাই সবার আগে দেখা উচিত ।

আরও পড়ুন: এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে 28 জুলাই মহামিছিল বিজেপির

অন্যদিকে, এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভাশিস মৈত্র বলেন, দেশ বা রাজ্য সর্বত্রই এখন দুর্নীতিটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে পড়েছে । সাধারণ ভোট বাক্সে বাস্তবে এর কতটা প্রভাব রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে । কিন্তু অতীতে বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে রাজনৈতিক নেতারা এমন ঘটনা ঘটালে পদ বা মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করতেন । এ ক্ষেত্রে এটাও অনেকটা নৈতিকতার প্রশ্ন । দল কী ভাবছে কী বলছে, মুখ্যমন্ত্রী কী ভাবছেন তার উপর নির্ভরশীল ।

আমরা ইতিহাসের সরণী বেয়ে যদি একটু পিছনে চলে যাই তাহলে দেখতে পাব, মহারাষ্ট্রে 2016 সালে ফড়ণবীস সরকারের দু'নম্বর মন্ত্রী তথা বিজেপির অন্যতম হেভিওয়েট নেতা একনাথ খাড়সে । দাউদের সঙ্গে যোগাযোগ ও জমি কেলেঙ্কারির জেরে সে সময় মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়েছিল খাড়সেকে । অনেকেরই প্রশ্ন, তাঁর দলের দুই নম্বর ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তৎকালীন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস যে পদক্ষেপ করতে পেরেছিলেন, কেন সেই একই পদক্ষেপ নিতে পারছেন না এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ?

শুধু ফড়ণবীস সরকার নয়, একই ভাবে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান এনসিপি নেতা অনিল দেশমুখকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রিসভা থেকে । টুজি কেলেঙ্কারির সময় ইউপিএ টু সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল তৎকালীন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজাকে । সে সময় এম করুণানিধির মেয়ে এম কানিমোঝিকেও এই মামলার জন্য পদ থেকে সরে যেতে হয় । পরে অবশ্য আদালতে এই দু'জন ক্লিনচিট পান । এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে, দুর্নীতির ইতিহাস কিন্তু শুধু বাংলা নয় দেশেও কম হয়নি । কিন্তু রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, শুধু আইনে যে শাস্তির বিধান আছে, তার জন্য কেন অপেক্ষা ? দুর্নীতি প্রকাশ্যে এলে এবং অভিযোগ উঠলে কেন একজন রাজনীতিক পদত্যাগ করবেন না তাঁর পদ এবং মন্ত্রিত্ব থেকে ?

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.