কলকাতা, ৩১ অগস্ট: পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আরও 14 দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল নগর দায়রা আদালত (Partha-Arpita in Jail Custody)৷ এ দিন ভার্চুয়াল শুনানিতে হাজির হয়ে পার্থ বলেন, "ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি করে আমার মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে ৷" ভার্চুয়াল নয়, সশরীরে হাজির হয়েই তিনি নিজের বক্তব্য জানাতে চান বলে জানিয়েছেন আদালতে ৷
রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা ও শিল্প মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নিরাপত্তার কারণে প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ভার্চুয়াল শুনানির অনুমতি দিয়েছিল নগর দায়রা আদালত ৷ আদালতের তরফে বলা হয়েছিল যে, পার্থকে সশরীরে আদালতে হাজিরা দেওয়ার দরকার নেই ৷ ভার্চুয়ালি হাজির হলেই হবে ৷ সেই মতোই এ দিন মামলার ভার্চুয়াল শুনানিতে হাজির হন পার্থ ৷ তবে আদালতকে তিনি জানান, "ভার্চুয়াল নয়, তিনি সশরীরে হাজির হয়েই নিজের বক্তব্য জানাতে চান ।"
উল্লেখ্য, এর আগের দিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানিতে অংশগ্রহণের নির্দেশ শোনার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অত্যন্ত হতাশার সুরে বলতে শোনা গিয়েছিল, "এঁরা আমাকে সূর্যের আলো দেখতে দিতে চায় না । সেই কারণেই এই ব্যবস্থা ।" 39 দিন ধরে হেফাজতে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায় । তার মধ্যে 26 দিন ধরে পার্থ রয়েছেন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে । এ দিন পার্থর মতোই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও সশরীরে হাজিরা দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ।
এ দিন পার্থর হয়ে তাঁর আইনজীবীরা আদালতে জামিনের আবেদন জানান । পার্থর আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলের রক্তাল্পতার সমস্যা রয়েছে । তাঁর হিমোগ্লোবিন কম, ক্রিয়েটিনিন বেশি । শ্বাসকষ্টের সমস্যার পাশাপাশি শিরদাঁড়াতেও সমস্যা রয়েছে । একইসঙ্গে পার্থর আইনজীবীরা উল্লেখ করেন, প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়ি থেকে এখনও পর্যন্ত টাকা বা এলআইসি কোনও নথিই পাওয়া যায়নি । এমনকী, তদন্তে যে ভুয়ো সংস্থার কথা শোনা যাচ্ছে, তার মালিকানা বা শেয়ারও পার্থর নামে নয় । তাহলে জামিনে আপত্তি কোথায় ?
আরও পড়ুন: যে কোনও শর্তে পার্থকে জামিন দেওয়া হোক, ভার্চুয়াল শুনানিতে দাবি আইনজীবীর
পার্থর তরফে আইনজীবী আরও জানান, তাঁর মক্কেলের বয়স 70 বছরেরও বেশি । প্রয়োজনে তাঁকে ঘরে নজরবন্দি করে রাখা হোক । এখন আর তিনি মোটেও প্রভাবশালী নন । তাঁকে প্রতিদিন 18-20টা করে নানা রকম ওষুধ খেতে হয় । যে কোনও মূল্যে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হোক । যদিও ইডির আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, অনেকগুলো ভুয়ো সংস্থা এবং সম্পত্তির নথি পাওয়া গিয়েছে । সেই সব সম্পত্তি ভুয়ো সংস্থার নামে কেনা হয়েছে । প্রায় 25টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে । সিম্বায়োসিস নামে সংস্থা কালো টাকা সাদা করে বাজারে শেয়ার ছেড়েছে । সেই শেয়ার 2.7 কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়েছে । ‘অপা ইউটিলিটি’ নামে সংস্থাটির জন্য জমি কিনতেও ভুয়ো সংস্থার নাম ব্যবহার করা হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা ইডি ।এই পরিস্থিতিতে কোনও ভাবেই জামিন মঞ্জুর করা সম্ভব নয় বলে দাবি ইডির ।
দু পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর আদালতের রায় ইডির পক্ষেই গিয়েছে ৷ জামিনের আবদন খারিজ করে দিয়ে পার্থ ও অর্পিতাকে আরও 14 দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে নগর দায়রা আদালত ৷