কলকাতা, 7 ফেব্রুয়ারি: দীর্ঘদিন অবস্থান-বিক্ষোভ করে মেটেনি দাবিদাওয়া। তাই এ বার অনশনের পথে হাঁটছে রাজ্যের পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকারা। শনিবার বিকেল 5টা থেকে অনশন শুরু করেছেন চারজন পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকা। যতক্ষণ না-পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 2011 সালে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করছেন, ততদিন পর্যন্ত অনশন চলবে বলে সাফ জানিয়ে দিলেন পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ।
গত 18 ডিসেম্বর থেকে বেতন কাঠামো ও স্থায়ীকরণের দাবিতে চলছে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের অবস্থান। আজ তাঁদের অবস্থানের 52তম দিন। শনিবার থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন তাঁরা। অনশন করছেন নদিয়ার হাবিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অমল রায়, উত্তর 24 পরগনার বীরপুর এফপি স্কুলের ওসমান আলি, পূর্ব বর্ধমানের রায়না জগৎ মাতা আঞ্চলিক বালিকা বিদ্যালয়ের মিষ্টি সামন্ত ও মশিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অরবিন্দ রায়।
দীর্ঘ 51 দিন অবস্থানের পর অনশন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, "পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের পক্ষ থেকে আমাদের যে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলছিল তার আজ 51তম দিন। এই দিনে আমরা বাধ্য হয়ে অনশনের ডাক দিলাম। আমাদের চারজন শিক্ষক-শিক্ষিকা অনশনে অংশগ্রহণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে, 2011 সালের 3 জুন পার্শ্ব শিক্ষকদের জন্য তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেই সিদ্ধান্ত কার্যকরের দাবিতেই অনশন করতে বাধ্য হলাম। যতক্ষণ না-পর্যন্ত মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, ততক্ষণ আমরা এই লড়াইয়ে আছি। অনশন চলবে।"
আরও পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাতেও মিলল না সমাধানসূত্র, বিক্ষোভ জারি পার্শ্বশিক্ষকদের
মুখ্যমন্ত্রী বাজেটে পার্শ্বশিক্ষকদের জন্য একাধিক ঘোষণা করেছেন। প্রতি বছর তিন শতাংশ হারে ভাতা বৃদ্ধি ও অবসরকালীন 3 লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেও অনশন কেন? ভগীরথবাবু বলেন, "ওটা আমাদের অবমাননা করেছেন বলে আমরা মনে করি। তিন বছর অন্তর 5 শতাংশ ভাতা বৃদ্ধি হত আমাদের। সেটা মুখ্যমন্ত্রী 2015 সালে বন্ধ করে দেন। সেটাই আবার প্রতি বছর 3 শতাংশ হারে চালু করেছেন। এতে আমাদের অবমাননা করা হচ্ছে বলে মনে করছি। উনি আমাদের সন্মান নিয়ে খেলা করছেন। শ্রমিকদের যা দিচ্ছেন, আমাদেরও তাই করছেন। তার উপর শুক্রবার পুলিশের আক্রমণের ঘটনা। এই সবকিছুই আমাদের অনশনের পথে হাঁটতে বাধ্য করেছে।"