কলকাতা, 29 জানুয়ারি: মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, গত 9 বছরে এরাজ্যে মোট 29 লাখ কর্মসংস্থান হয়েছে । রাজ্যে কর্মসংস্থান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবিকে বিরোধীরা বারবার কটাক্ষ করেছে ৷ অথচ সারা দেশে যখন কাজ হারানোর সংখ্যা বেড়েছে তখন রাজ্য সরকারের তরফে দাবি করা হয়, এই রাজ্যে লাখ লাখ যুবক-যুবতি কাজ পেয়েছেন । কিন্তু ভোটের মুখে রাজ্য সরকারের এই দাবি বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে ৷ আনএডেড মাদ্রাসা শিক্ষকদের অভিযোগ, গত 9 বছর ধরে তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না ৷ এই নিয়ে কলকাতার রাজপথে তাঁরা অনশন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ৷ একইভাবে সল্টলেকের রাস্তায় কাটাচ্ছেন রাজ্যের পার্শ্বশিক্ষকরা। তাঁদের আন্দোলনও 42 দিনে পড়ল । বুধবার বিক্ষোভ-অবস্থানের 41তম দিনের মাথায় তাঁদের সঙ্গে প্রথমবার শিক্ষামন্ত্রী আলোচনায় বসেন। কিন্তু, সেখানেও সদুত্তর মেলেনি । তাই এবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি তুলে 2 ফেব্রুয়ারি নবান্ন অভিযানের ডাক দিল পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চ।
হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে 18 ডিসেম্বর থেকে সল্টলেকে বিকাশ ভবনের অদূরে চলছে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের লাগাতার অবস্থান। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে আলোচনার ডাক পেয়েছিলেন তাঁরা । ডাক পেয়ে বুধবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রায় 20-25 হাজার পার্শ্বশিক্ষক জমায়েত করেন কলকাতা পৌরনিগমের পাশে। সেখান থেকে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিধানসভায় যান শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে।
আরও পড়ুন : ঠাসা কর্মসূচি নিয়ে 2 দিনের সফরে রাজ্যে আসছেন শাহ
কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ওইদিনের আলোচনা ব্যর্থ হয় বলেই জানায় পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের প্রতিনিধি দল। তারপরই এবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিলেন তাঁরা। এবিষয়ে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, "2 ফেব্রুয়ারি আমরা নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছি। কারণ শিক্ষামন্ত্রী 13 মাস আগে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পূরণের ধারকাছ দিয়েও হাঁটেননি। মুখ্যমন্ত্রী 2011 সালে মন্ত্রিসভার বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা কার্যকর করতে তিনি সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ । তাই আমরা শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চাইছি এবং 2 জানুয়ারি নবান্ন অভিযান করছি। দাবি একটাই, ভাতা প্রথার অবসান ঘটাতে বেতন কাঠামো দিতে হবে।" ওই দিন দাবি আদায়ে ফের কলকাতার রাজপথে হাজার হাজার পার্শ্বশিক্ষক নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
রাজ্য সরকারের এই ভাতা প্রথা নিয়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীও রাজ্য সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের নামে শুধু ভাতা দেওয়া হচ্ছে ৷ কেউ কোনও কিছু নিয়ে প্রতিবাদ করলেই ভাতা চালু করে দেওয়া হচ্ছে। মাসে 1 হাজার, 2 হাজার টাকা করে ভাতা দিয়ে সবার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করেছে এই সরকার। বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য সরকারের এই কর্মসংস্থান নিয়ে সরব হচ্ছে বিরোধীরা ৷ ২০২১ সালের প্রাথমিক টেটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার ৷ তবুও আগের টেট উত্তীর্ণরা এখনও চাকরি পাননি ৷ ভোটের মুখে পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়াবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ ।