কলকাতা, 18 জুলাই : কলকাতা বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার ভুতুড়ে বিল অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবি জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান । রাজ্য সরকারকে CESC-র বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন বাম পরিষদীয় দল নেতা সুজন চক্রবর্তী । রাজ্য সরকার যদি যথাযথ ব্যবস্থা না নেয় তাহলে বিরোধীরা বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যের দুই বিরোধী দলনেতা।
চলতি মাসে CESC বা কলকাতা বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা সিংহভাগ মানুষের কাছে অদ্ভুত বিল পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ । বাদ যাননি রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীও । কয়েকদিন আগে তার বাড়িতে দ্বিগুণ বিল পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় । এই নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন, "CESC কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের থেকে বিদ্যুতের চড়া মাশুল আদায় করছে । এমনিতেই গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুতের মূল্য সবচেয়ে বেশি । তার উপর এই একচেটিয়া ব্যবসার মাধ্যমে মানুষকে নিঃস্ব করে দিচ্ছে । মানুষ বিপদের মধ্যে রয়েছে । বহু মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছেন । তার মধ্যে সরকার বিদ্যুতের বিলের মাধ্যমে মানুষকে শোষণ করছে । রহস্যময় কারণে রাজ্য সরকার CESC-র বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না । মানুষের পাশে নেই শাসকদল ।" পাশাপাশি CESC-কে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, "অবিলম্বে এই বিল প্রত্যাহার করা হোক । না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে শহরে ।"
বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, "মানুষ বিপদে রয়েছে । সরকারের ঘনিষ্ঠ CESC কর্তৃপক্ষ ভূতুড়ে বিল পাঠাচ্ছে । কলকাতা বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাই হোক বা রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ, সকলেই মানুষকে শোষণ করছে । একাধিকবার বিধানসভাতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে শাসকদলের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছে । কিন্তু নীরব থেকেছে সরকার । দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ বিক্রি হয় পশ্চিমবঙ্গে । রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার চেয়ে কলকাতা বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার বিদ্যুতের দাম অনেক বেশি ।" তাঁর দাবি, "অবিলম্বে 200 ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের বিলে ছাড় দিতে হবে । ভূতুড়ে বিল ছিঁড়ে ফেলতে হবে । কোনওরকম ইনস্টলমেন্টে ইলেকট্রিক বিল মেটানোর প্রশ্নই নেই । কারও বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাবে না । সরকার দায়িত্ব পালন করতে না পারলে ক্ষোভ আরও বাড়বে । কোরোনার সুযোগে মানুষকে লুট করার চেষ্টা করছে সরকার ।"
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে ওষুধের দাম । বিপদে পড়েছে সাধারণ মানুষ । পরিবহনের খরচও বেড়েছে । এই অবস্থায় বিদ্যুতের বিল মেটাতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠবে বলে মনে করছেন বিরোধী দলের নেতারা ।