কলকাতা, 24 ফেব্রুয়ারি: করোনা আক্রান্ত হলেন কসবা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের এক শিক্ষিকা। জানা গিয়েছে, গতকাল জ্বর থাকায় স্কুলে আসেননি ওই শিক্ষিকা। বিকেলের দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নিজের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট পাঠান ওই শিক্ষিকা।
অন্যান্য রাজ্যের চিত্র দেখে আশঙ্কা ছিল। স্কুল খুললে থাবা বসাতে পারে করোনা। তা সত্ত্বেও গত 12 ফেব্রুয়ারি রাজ্যের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলে। আর স্কুল খোলার 10 দিন অতিক্রান্ত হতে না হতেই সত্যি হল সেই আশঙ্কা। করোনা আক্রান্ত হলেন খাস কলকাতার একটি বয়েজ স্কুলের এক শিক্ষিকা। ঘটনাটি সামনে আসতেই তৎপর হয়েছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। ইতিমধ্যেই দপ্তরের নির্দেশে আজ সকাল থেকেই স্কুলকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ একপ্রস্থ সেরে ফেলেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বেলায় কলকাতা পৌরনিগমের তরফে আবারও একবার স্কুলকে জীবাণুমুক্ত করা হয়। আজ স্কুল জীবাণুমুক্ত করার জন্য পড়ুয়াদের ছুটি তো দেওয়াই হয়েছে। পাশাপাশি, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, গতকাল ওই শিক্ষিকা স্কুলে আসেননি। সকালে তিনি চিঠি পাঠিয়ে জানান, তাঁর জ্বর এসেছে এবং বিকেলে করোনা পজিটিভের রিপোর্ট পাঠান। অনিন্দ্যবাবু বলেন, "কীভাবে এটা হল তা ধরা মুশকিল। একজন শিক্ষিকার ধরা পড়েছে। তাঁর বাইরের এক্সপোজার আছে। পাবলিক ট্রান্সপোর্টও ব্যবহার করেন। স্কুলে এরকম হওয়ার সম্ভাবনা জিরো পার্সেন্ট। আমরা প্রতিমুহূর্তে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ করছি। তাঁরা আপাতত স্কুল বিল্ডিং জীবাণুমুক্ত করতে বলেছেন। আগামীকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকবে। আজ শুধুমাত্র স্যানিটাইজেশনের করার জন্য স্কুলের অফিস খোলা রয়েছে।"
আরও পড়ুন : দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বৈঠক
স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশে স্কুল জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত শিক্ষিকার সংস্পর্শে যে সকল পড়ুয়া এসেছিল, তাদের চিহ্নিত করে করোনা পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, আক্রান্ত শিক্ষিকা একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের শিক্ষিকা। তাই তাঁর সংস্পর্শে আসা ছাত্রদের সংখ্যা খুব বেশি হবে না। অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আরেকটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে। যে টিচারের হয়েছে তাঁর সঙ্গে যারা এক্সপোজারে এসেছিল সেই বাচ্চাদের ডেকে নিয়ে তাদের কোরোনা পরীক্ষা করানো। আমরা সেই কাজটা করছি। তাদেরকে ডেকে নিচ্ছি। তাদের মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গিয়ে আজই পরীক্ষা করাবো। আগামীকাল হয়তো রিপোর্ট পেয়ে যাব। সরকারি আধিকারিকরা এটার দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁরা সঙ্গে যাবেন। তবে, ছেলেদের যাদের ডাকলাম তাদের কারোরই কোনও উপসর্গ নেই। তবু আমরা পাঠাতে বলছি সরকারি নির্দেশ মানা ও সতর্কতা অবলম্বনের জন্য।"
ইতিমধ্যেই স্কুলে আসতে শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট ছাত্ররা। প্রধান শিক্ষক জানাচ্ছেন, অনেকেই বাইরে থেকে করোনা পরীক্ষা করিয়ে নিতে ইচ্ছুক। বাকি যারা স্কুলে আসবেন তাদের সবাইকে আজই মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গিয়ে করোনা পরীক্ষা করানো হবে। তবে, শিক্ষিকার করোনা হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে পড়ুয়ারা ৷