ETV Bharat / city

Nonapukur Rasgulla Hub নোনাপুকুর ওয়ার্কশপে রসগোল্লা হাব, সিঁদুরে মেঘ দেখছেন শহরের ট্রামপ্রেমীরা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছানুসারে এবার শহরে গড়ে উঠবে এই রসগোল্লা হাব । উদ্দেশ্য শহরের নামী মিষ্টির দোকানগুলিকে এক ছাদের তলায় আনা । সেই মতোই 120 বছরের পুরনো ঐতিহ্যশালী নোনাপুকুর ওয়ার্কশপের অব্যবহৃত জমিতেই তৈরি করা হবে রসগোল্লা হাব (Nonapukur Tram Workshop) ৷ মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সংগঠন 'মিষ্টি উদ্যোগ'কে এই হাব তৈরির দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে (Tram Workshop to be transformed into Rasgulla Hub) ।

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By

Published : Aug 18, 2022, 10:35 PM IST

কলকাতা, 18 অগস্ট: আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস রোডে তৈরি হবে মিষ্টি হাব । জোর দেওয়া হবে বাঙালির অতিপ্রিয় রসগোল্লা বিক্রিতে । এই রসগোল্লা হাব গড়ে উঠবে নোনাপুকুর ট্রাম ওয়ার্কশপে (Nonapukur Tram Workshop) । প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল, নোনাপুকুর ওয়ার্কশপের ফাঁকা পড়ে থাকা অংশে তৈরি করা হবে এই মিষ্টি হাব । এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার (Tram Workshop to be transformed into Rasgulla Hub) ।

তবে যে ওয়ার্কশপে ট্রাম তৈরির একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত সরঞ্জাম তৈরি করে একটি আস্ত ট্রাম বানানো হয়েছে, সেখানে মিষ্টি হাবের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের ট্রামপ্রেমীরা । ধাপে ধাপে কমেছে ট্রাম । বর্তমানে দু'টি রুট ছাড়া বাকিগুলোতে জ্বলেছে লাল বাতি । একটি অতি রুগ্ন পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে পরিণত হয়েছে একসময়ের অন্যতম ব্যবহৃত পরিবহন মাধ্যম । তাই বিভিন্ন ট্রাম ডিপোয় কুটিরশিল্প এবং গয়না শিল্পের হাব গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের ।

রসগোল্লা নিয়ে বাঙালির আবেগকে মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছানুসারে এবার শহরে গড়ে উঠবে এই রসগোল্লা হাব (Nonapukur Rasgulla Hub) । উদ্দেশ্য শহরের নামী মিষ্টির দোকানগুলিকে এক ছাদের তলায় আনা । সেই মতোই 120 বছরের পুরনো ঐতিহ্যশালী নোনাপুকুর ওয়ার্কশপের অব্যবহৃত জমিতেই তৈরি করা হবে রসগোল্লা হাব ৷ মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সংগঠন 'মিষ্টি উদ্যোগ'কে এই হাব তৈরির দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ।

Etv Bharat
নোনাপুকুর ওয়ার্কশপে রসগোল্লা হাব

ওয়ার্কশপের এক আধিকারিক বলেন, "এজেসি বোস রোড লাগোয়া যে সাব স্টেশনটি রয়েছে সেখানেই গড়ে উঠবে এই হাব । নিচের তল অর্থাৎ গ্রাউন্ড ফ্লোরে সাব স্টেশনের কাজ হবে । বাকি তলগুলি অর্থাৎ প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলে হবে মিষ্টি হাব । 'মিষ্টি উদ্যোগ'-এর পক্ষ থেকে জমির প্রাথমিক ইন্সপেকশনও হয়েছে । পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের (WBSIDCL) পক্ষ থেকে একটি নকশা তৈরি করে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে । এখানে মিষ্টির দোকান করা হবে । এছাড়াও থাকবে ফুড কোর্ট ।"

ট্রাম গবেষক ও ট্রামপ্রেমী ডক্টর দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, "বিভিন্ন সময় ট্রামডিপোর জমি নানান কাজে অধিগ্রহণ করা হয়েছে । ট্রাম ডিপোতে গড়ে উঠেছে বাস স্ট্যান্ড । আবার ট্রাম ডিপোর ভেতরেই বসানো হয়েছে ইলেকট্রিক বাসের চার্জিং মেশিনও । ট্রাম ডিপোর ভেতরে শিল্প হাব গড়ে তোলার কথা আমরা আগেই জানি । তবে এবার নোনাপুকুর ওয়ার্কশপে রসগোল্লা হাব ? আসলে একটা শহর থেকে ট্রামকে চিরবিদায় দেওয়ার ফন্দি । এর আগে যে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার কিছুই বেশিদিন চলেনি । তাই এটাও চলবে না । শুধু এইভাবে ট্রাম কোম্পানির জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে।" শহরে আরও বহু জায়গা থাকা সত্ত্বেও নোনাপুকুর ওয়ার্কশপের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রসগোল্লা হাব করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ।

আরও পড়ুন : নোনাপুকুরে তৈরি হবে হাব, মিলবে 38 রকমের রসগোল্লা

শহরের আরেক ট্রামপ্রেমী রুদ্রনীল রায় চৌধুরী বলেন, "নোনাপুকুর ওয়ার্কশপে সাব স্টেশনকে সংকুচিত করে শুধুমাত্র গ্রাউন্ড ফ্লোরে রাখা হবে । এমনটা কেন হচ্ছে । বর্তমানে ট্রামের সমস্ত রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছে । তাই নোনাপুকুরে কোনও ট্রামই আসতে পারে না । তাই ট্রাম পরিবহনকে সংকুচিত করে দেওয়া হয়েছে । বর্তমানে নোনাপুকুরে ট্রামও যেমন মেরামত হয় না, তেমন সাব স্টেশনের প্রয়োজন পড়ছে না । আবার যদি ট্রেম ঠিকভাবে চালানো হয় তাহলে নোনাপুকুর স্টেশনেও আর কোনও জমি বা বিল্ডিং পরিত্যক্ত থাকবে না । আমার ভেবে আশ্চর্য লাগছে যে নোনাপুকুর ওয়ার্কশপ একটি সুরক্ষিত এলাকা হওয়া সত্ত্বেও তার ভেতরে মিষ্টি হাব হবে এবং সেখানে সাধারণ মানুষের যাতায়াত শুরু হবে ।"

অনেকেই বলছেন, বাংলার কুটিরশিল্পকে বাজার পাইয়ে দিতে ট্রামের মতো একটি হেরিটেজকে অবহেলা করা হচ্ছে ৷ নোনাপুকুরে একসময় বহু ট্রাম তৈরি হয়েছে ৷ সেখানেই এখন দোকানপাট বসবে । এর আগেও তিনটি ট্রাম ডিপোকে বিভিন্ন হাব তৈরির জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে । কালীঘাট, রাজাবাজার ও বেলগাছিয়ায় গড়ে উঠবে মিষ্টি, বস্ত্র ও সোনার গয়নার হাব ।

কলকাতা, 18 অগস্ট: আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস রোডে তৈরি হবে মিষ্টি হাব । জোর দেওয়া হবে বাঙালির অতিপ্রিয় রসগোল্লা বিক্রিতে । এই রসগোল্লা হাব গড়ে উঠবে নোনাপুকুর ট্রাম ওয়ার্কশপে (Nonapukur Tram Workshop) । প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল, নোনাপুকুর ওয়ার্কশপের ফাঁকা পড়ে থাকা অংশে তৈরি করা হবে এই মিষ্টি হাব । এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার (Tram Workshop to be transformed into Rasgulla Hub) ।

তবে যে ওয়ার্কশপে ট্রাম তৈরির একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত সরঞ্জাম তৈরি করে একটি আস্ত ট্রাম বানানো হয়েছে, সেখানে মিষ্টি হাবের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের ট্রামপ্রেমীরা । ধাপে ধাপে কমেছে ট্রাম । বর্তমানে দু'টি রুট ছাড়া বাকিগুলোতে জ্বলেছে লাল বাতি । একটি অতি রুগ্ন পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে পরিণত হয়েছে একসময়ের অন্যতম ব্যবহৃত পরিবহন মাধ্যম । তাই বিভিন্ন ট্রাম ডিপোয় কুটিরশিল্প এবং গয়না শিল্পের হাব গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের ।

রসগোল্লা নিয়ে বাঙালির আবেগকে মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছানুসারে এবার শহরে গড়ে উঠবে এই রসগোল্লা হাব (Nonapukur Rasgulla Hub) । উদ্দেশ্য শহরের নামী মিষ্টির দোকানগুলিকে এক ছাদের তলায় আনা । সেই মতোই 120 বছরের পুরনো ঐতিহ্যশালী নোনাপুকুর ওয়ার্কশপের অব্যবহৃত জমিতেই তৈরি করা হবে রসগোল্লা হাব ৷ মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সংগঠন 'মিষ্টি উদ্যোগ'কে এই হাব তৈরির দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ।

Etv Bharat
নোনাপুকুর ওয়ার্কশপে রসগোল্লা হাব

ওয়ার্কশপের এক আধিকারিক বলেন, "এজেসি বোস রোড লাগোয়া যে সাব স্টেশনটি রয়েছে সেখানেই গড়ে উঠবে এই হাব । নিচের তল অর্থাৎ গ্রাউন্ড ফ্লোরে সাব স্টেশনের কাজ হবে । বাকি তলগুলি অর্থাৎ প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলে হবে মিষ্টি হাব । 'মিষ্টি উদ্যোগ'-এর পক্ষ থেকে জমির প্রাথমিক ইন্সপেকশনও হয়েছে । পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের (WBSIDCL) পক্ষ থেকে একটি নকশা তৈরি করে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে । এখানে মিষ্টির দোকান করা হবে । এছাড়াও থাকবে ফুড কোর্ট ।"

ট্রাম গবেষক ও ট্রামপ্রেমী ডক্টর দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, "বিভিন্ন সময় ট্রামডিপোর জমি নানান কাজে অধিগ্রহণ করা হয়েছে । ট্রাম ডিপোতে গড়ে উঠেছে বাস স্ট্যান্ড । আবার ট্রাম ডিপোর ভেতরেই বসানো হয়েছে ইলেকট্রিক বাসের চার্জিং মেশিনও । ট্রাম ডিপোর ভেতরে শিল্প হাব গড়ে তোলার কথা আমরা আগেই জানি । তবে এবার নোনাপুকুর ওয়ার্কশপে রসগোল্লা হাব ? আসলে একটা শহর থেকে ট্রামকে চিরবিদায় দেওয়ার ফন্দি । এর আগে যে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার কিছুই বেশিদিন চলেনি । তাই এটাও চলবে না । শুধু এইভাবে ট্রাম কোম্পানির জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে।" শহরে আরও বহু জায়গা থাকা সত্ত্বেও নোনাপুকুর ওয়ার্কশপের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রসগোল্লা হাব করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ।

আরও পড়ুন : নোনাপুকুরে তৈরি হবে হাব, মিলবে 38 রকমের রসগোল্লা

শহরের আরেক ট্রামপ্রেমী রুদ্রনীল রায় চৌধুরী বলেন, "নোনাপুকুর ওয়ার্কশপে সাব স্টেশনকে সংকুচিত করে শুধুমাত্র গ্রাউন্ড ফ্লোরে রাখা হবে । এমনটা কেন হচ্ছে । বর্তমানে ট্রামের সমস্ত রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছে । তাই নোনাপুকুরে কোনও ট্রামই আসতে পারে না । তাই ট্রাম পরিবহনকে সংকুচিত করে দেওয়া হয়েছে । বর্তমানে নোনাপুকুরে ট্রামও যেমন মেরামত হয় না, তেমন সাব স্টেশনের প্রয়োজন পড়ছে না । আবার যদি ট্রেম ঠিকভাবে চালানো হয় তাহলে নোনাপুকুর স্টেশনেও আর কোনও জমি বা বিল্ডিং পরিত্যক্ত থাকবে না । আমার ভেবে আশ্চর্য লাগছে যে নোনাপুকুর ওয়ার্কশপ একটি সুরক্ষিত এলাকা হওয়া সত্ত্বেও তার ভেতরে মিষ্টি হাব হবে এবং সেখানে সাধারণ মানুষের যাতায়াত শুরু হবে ।"

অনেকেই বলছেন, বাংলার কুটিরশিল্পকে বাজার পাইয়ে দিতে ট্রামের মতো একটি হেরিটেজকে অবহেলা করা হচ্ছে ৷ নোনাপুকুরে একসময় বহু ট্রাম তৈরি হয়েছে ৷ সেখানেই এখন দোকানপাট বসবে । এর আগেও তিনটি ট্রাম ডিপোকে বিভিন্ন হাব তৈরির জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে । কালীঘাট, রাজাবাজার ও বেলগাছিয়ায় গড়ে উঠবে মিষ্টি, বস্ত্র ও সোনার গয়নার হাব ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.