কলকাতা, 4 ফেব্রুয়ারি: এক নাবালিকার অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধারকে ঘিকে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল জোড়াবাগান এলাকায়। ছুটিতে ঠাকুমার বাড়িতে বেড়াতে আসা 9 বছরের বালিকাকে যৌন হেনস্থার পর খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে আসে এই ঘটনা। একটি বাড়ির সিঁড়ির কাছে ৯ বছরের বালিকার অধনগ্ন দেহ উদ্ধার হয়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ছুটিতে ওই শিশু জোড়াবাগান থানা এলাকায় তার ঠাকুরমার বাড়িতে বেড়াতে আসে। বুধবার প্রতিদিনের মতোই সে এলাকার অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলা করছিল। কিন্তু অভিযোগ, কাল বিকালের পর থেকে আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর আজ সকালে পাশের একটি বহুতলের সিঁড়ির এক কোণে উদ্ধার হয় ওই নাবালিকার দেহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শিশুটিকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তার গলায় কাটা চিহ্ন ছিল। তার সঙ্গে যে রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয়েছে, তা তার মৃতদেহ দেখেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা। ওই বালিকাকে প্রথমে যৌন হেনস্থা করা হয় এবং পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য তাকে খুন করা হয় বলে সন্দেহ স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: অবশেষে জোড়াবাগান ডাকাতির কিনারা, জড়িত ভিন রাজ্যের দল!
আজ সকালে বাসিন্দারা দেহটি ঘিরে রেখে বিক্ষোভ দেখান৷ তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় থানায় একাধিকবার খবর দেওয়া সত্বেও তারা ঘটনাস্থলে আসেনি। বৈষ্ণব লেনে দীর্ঘক্ষণ নাবালিকার দেহ আটকে রাখার পর অবশেষে ঘটনাস্থলে হাজির হন কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। যান কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান। কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে যান ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। সঙ্গে নিয়ে আসা হয় কলকাতা পুলিশের স্নিফার ডগ। মূলত জামাকাপড় এবং বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। কলকাতা পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার পর তাকে খুন করা হয়েছে। কারণ তার দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে।
কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কলকাতা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক নিজের নাম প্রকাশ না-করে জানান, ''আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ওই নাবালিকার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার অপেক্ষায় রয়েছি। এলাকায় নতুন করে যাতে উত্তেজনা না-ছড়ায়, তার জন্য পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। ওই নাবালিকার বাবার সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।''
পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে পরিচিত কোনও আততায়ীর যোগ। এর কারণ হচ্ছে ওই নাবালিকা মাঝেমধ্যেই ছুটি কাটাতে ওই এলাকায় যেত এবং এলাকার একাধিক শিশুর সঙ্গে খেলাধুলো করত। আততায়ীরা সেটা ভালো করেই জানত এবং সুযোগ বুঝে নাবালিকাকে তারা খুন করে।