ETV Bharat / city

34 বছর পর নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি, কী বলছে রাজ্যের শিক্ষামহল ?

M.Phil-এর প্রয়োজন ছিল না । মানছেন অধিকাংশই ৷ অনেকের মতে, গঠনগত পরিবর্তন হয়েছে, পাঠক্রম নতুন কিছু নয় ।

new steps in national education policy
জাতীয় শিক্ষানীতি
author img

By

Published : Jul 30, 2020, 5:09 AM IST

কলকাতা, 30 জুলাই: 34 বছর পর জাতীয় শিক্ষানীতিতে বদল এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার । গতকাল মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্কুলস্তর থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষার স্তর, খোলনলচে বদলে ফেলা হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই । আনা হয়েছে একাধিক সংস্কারমুখী পদক্ষেপ । উচ্চশিক্ষায় মাল্টিপল এন্ট্রি ও মাল্টিপল এগজ়িটের সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে মাস্টার অফ ফিলোজ়ফি অর্থাৎ M.Phil কোর্সকে । এইসব পদক্ষেপ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেল রাজ্যের শিক্ষামহলে । একদিকে শিক্ষাবিদদের একাংশ বলছেন, M.Phil-এর প্রয়োজন ছিল না । এই কোর্স তুলে দিয়ে ভালোই হয়েছে । আবার রাজ্যের অধ্যাপক মহলের একাংশের মতে, শিক্ষা ব্যবস্থা সংকুচিত করা হচ্ছে ।

জাতীয় শিক্ষানীতি করা হয়েছিল 1986 সালে । পরে 1992 সালে তা সংশোধন করা হয় । এর তিন দশক পর নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি আনল বর্তমান সরকার । জাতীয় শিক্ষানীতি গঠনে যে কমিটির সুপারিশ নেওয়া হয়েছে তার শীর্ষে ছিলেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের প্রাক্তন প্রধান কে কস্তুরিরঙ্গন । 2019 সালের 31 মে কমিটি রিপোর্ট জমা দেয় । রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছিল জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া । সেই খসড়ার উপর বহু মতামত গ্রহণের পর গতকাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে নয়া শিক্ষানীতি । উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে জাতীয় শিক্ষানীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বদল আনা হয়েছে ৷ যেমন, তিন অথবা চার বছরের স্নাতক কোর্স । একাধিক এন্ট্রি ও এগজ়িটের সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রেও একই সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । বন্ধ করা হচ্ছে M.Phil । স্নাতক, স্নাতকোত্তরের পর থাকবে P.hD । স্কুল থেকে বেরিয়ে আসা পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় এনরোলমেন্ট 2035 সালের মধ্যে 50 শতাংশ করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে । এছাড়া, গঠনগত দিক থেকে উচ্চশিক্ষায় একাধিক পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে । নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে কী বলছেন রাজের শিক্ষাবিদরা?

স্কুল ও উচ্চশিক্ষায় মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচ নিয়ে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, "এটাকে বিদেশে বলে ক্যাফেটেরিয়া অ্যাপ্রোচ । তুমি হয়তো একটা বিষয়ে মেজর করছ । পাশাপাশি আরেকটা আর্টস, ফাইন আর্টস, ভিজ়ুয়াল আর্টস... এগুলো পড়তে পার । এটা বিদেশে ছিল আমাদের দেশে আনা হচ্ছে । ভালো ব্যাপার এই জন্য যে, একে আমি শিক্ষার গণতন্ত্রীকরণ বলে মনে করি । কারণ আগেকার দিনে পড়ুয়ারা মূলত অভিভাবকদের পছন্দে পড়াশোনা করত । তাঁরা বলতেন, লাইন ধরে পড় । লাইন ধরে পড় ব্যাপারটা কলোনিয়াল হ্যাঙ্গওভার ৷ কবি হও, কিন্তু পাশাপাশি আগে ইঞ্জিনিয়ার হও । এর ফলে মানুষের মধ্যে যে নানা সম্ভাবনা আছে, একজন একইসঙ্গে ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে, গায়ক হতে পারে, ডাক্তার হতে পারে, লেখক হতে পারে, নিজের এক্তিয়ার থেকে বেরিয়ে গিয়ে নিজেকে প্রকাশ করছে । এই স্বীকৃতি ছাত্রছাত্রীদের ইচ্ছার স্বীকৃতি । তবে, জানি না দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির বিচারে এই বিষয়টা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে । কয়েক বছর পর বোঝা যাবে । "

চার বছরের স্নাতক কোর্স নিয়ে পবিত্রবাবু বলেন, "চার বছরের স্নাতক কোর্সের ফলে যদি স্নাতকোত্তর কোর্স এক বছরের হয় তবে তা ঠিক হল না । 50 ও 60-এর দশকে আমরা দুই বছরের স্নাতক ও দুই বছরের স্নাতকোত্তর পড়েছি । আমার মতে, স্নাতকোত্তরটা দু'বছরেরই থাক । কারণ, আমরা যত পরিণত হব ততই উচ্চশিক্ষা নেওয়ার সামর্থ্য বাড়বে । "

M.Phil তুলে দেওয়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য, "M.Phil আগে ছিল না । M.Phil-টা একদম অবান্তর বলে মনে করি । আসলে যারা শিক্ষামন্ত্রকের প্রশাসক তারা আমি যে বেকার, এই ফিলিংটা যাতে ডিলেড হয় তার জন্য এক ধরনের কৌশল খাঁড়া করেছে । আমি মনে করি, স্নাতকোত্তরের পর গবেষণা করতে হবে এটা ঠিক আছে । M.Phil তুলে দেওয়ায় ভালোই হয়েছে ।"

শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, "গঠনগত পরিবর্তন করা হয়েছে, পাঠক্রমে নতুন কিছু নয় । অতীতে এইরকম ব্যবস্থা ছিল । একটা পুরনো ধারার পুনরায় প্রবর্তন মাত্র । বলা হচ্ছে, বিজ্ঞান ও কলা বিভাগের মধ্যে কোনওরকম বিভাজন থাকবে না ৷ এটাতে আমার ঘোরতর আপত্তি আছে । কারণ কলা বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের যদি বিজ্ঞানে আনা হয় তাহলে তাদের বিকাশ ভালো হবে না । আমি খুশি হতাম দেখে যদি গতানুগতিকতার আবহ থেকে বেরিয়ে একটি নতুন শিক্ষানীতি তৈরি করত । যেমন, ভারতবর্ষে এখন কর্মসংস্থান বিরাট সমস্যা । সাধারণত ছেলেমেয়েরা স্নাতকোত্তর করেও চাকরি পায় না ৷ পেলেও তাতে মূল পড়াশোনার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক থাকে না । কাজেই শিক্ষাকে কর্মমুখী করা হোক । এরকম পরিবর্তন হয়নি । তবে ভেবেছিলাম কেন্দ্রীয় সরকার হয়তো শিক্ষায় ধর্মকে প্রাধান্য দেবে । আশ্বস্ত হয়েছি দেখে যে শিক্ষানীতিতে ধর্মকে আবাহন করা হয়নি ।"

M.Phil তুলে দেওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "ভালোই হয়েছে । M.Phil, P.hD না হলে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না, কাজেই M.Phil অর্থহীন । তার চেয়ে যারা উচ্চশিক্ষায় যেতে চায়, তাদের গবেষণায় অনুপ্রাণিত করা উচিত । "

যদিও M.Phil তুলে দেওয়া নিয়ে পৃথক অবস্থান রাজ্যের অধ্যাপক মহলের একাংশের । জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন JUTA-র তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, 2020 সালের জাতীয় শিক্ষানীতি আধুনিক ভারতের নির্মাতাদের শিক্ষার আদর্শকে ত্যাগ করেছে । ভারতের গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ধারণার পরিবর্তনের চেষ্টা করেছে ৷ সংকীর্ণ, সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মান্ধ ধারণা দিয়েছে । যা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিভাজনের আদর্শ দ্বারা পলিচালিত । ভারতের শিক্ষাকে কমপক্ষে এক শতাব্দী পিছনে ফেলে দিয়েছে ।

M.Phil তুলে দেওয়া নিয়ে JUTA-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাটাকেই ভেঙে দিয়ে নিজেদের মতো করে করেছে ৷ আমরা পুরো শিক্ষানীতির বিরোধিতা করছি ।"

জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন CUTA-র বক্তব্য, এই নীতি ফেডেরাল কাঠামোর উপর আক্রমণ করে । HCEI তৈরির মাধ্যমে শিক্ষায় রাজ্যের ভূমিকাকে ক্ষুণ্ণ করে । এই নীতি উচ্চশিক্ষার বেসরকারিকরণকেও উৎসাহ দিচ্ছে ৷ এতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া পড়ুয়ারা শিক্ষাক্ষেত্র থেকে বাদ পড়ে যাবে । বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে শিক্ষকতা ও গবেষণার ভিত্তিতে ভাগ করে দেওয়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণার পরিপন্থী ৷

কলকাতা, 30 জুলাই: 34 বছর পর জাতীয় শিক্ষানীতিতে বদল এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার । গতকাল মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্কুলস্তর থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষার স্তর, খোলনলচে বদলে ফেলা হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই । আনা হয়েছে একাধিক সংস্কারমুখী পদক্ষেপ । উচ্চশিক্ষায় মাল্টিপল এন্ট্রি ও মাল্টিপল এগজ়িটের সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে মাস্টার অফ ফিলোজ়ফি অর্থাৎ M.Phil কোর্সকে । এইসব পদক্ষেপ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেল রাজ্যের শিক্ষামহলে । একদিকে শিক্ষাবিদদের একাংশ বলছেন, M.Phil-এর প্রয়োজন ছিল না । এই কোর্স তুলে দিয়ে ভালোই হয়েছে । আবার রাজ্যের অধ্যাপক মহলের একাংশের মতে, শিক্ষা ব্যবস্থা সংকুচিত করা হচ্ছে ।

জাতীয় শিক্ষানীতি করা হয়েছিল 1986 সালে । পরে 1992 সালে তা সংশোধন করা হয় । এর তিন দশক পর নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি আনল বর্তমান সরকার । জাতীয় শিক্ষানীতি গঠনে যে কমিটির সুপারিশ নেওয়া হয়েছে তার শীর্ষে ছিলেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের প্রাক্তন প্রধান কে কস্তুরিরঙ্গন । 2019 সালের 31 মে কমিটি রিপোর্ট জমা দেয় । রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছিল জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া । সেই খসড়ার উপর বহু মতামত গ্রহণের পর গতকাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে নয়া শিক্ষানীতি । উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে জাতীয় শিক্ষানীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বদল আনা হয়েছে ৷ যেমন, তিন অথবা চার বছরের স্নাতক কোর্স । একাধিক এন্ট্রি ও এগজ়িটের সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রেও একই সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । বন্ধ করা হচ্ছে M.Phil । স্নাতক, স্নাতকোত্তরের পর থাকবে P.hD । স্কুল থেকে বেরিয়ে আসা পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় এনরোলমেন্ট 2035 সালের মধ্যে 50 শতাংশ করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে । এছাড়া, গঠনগত দিক থেকে উচ্চশিক্ষায় একাধিক পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে । নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে কী বলছেন রাজের শিক্ষাবিদরা?

স্কুল ও উচ্চশিক্ষায় মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচ নিয়ে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, "এটাকে বিদেশে বলে ক্যাফেটেরিয়া অ্যাপ্রোচ । তুমি হয়তো একটা বিষয়ে মেজর করছ । পাশাপাশি আরেকটা আর্টস, ফাইন আর্টস, ভিজ়ুয়াল আর্টস... এগুলো পড়তে পার । এটা বিদেশে ছিল আমাদের দেশে আনা হচ্ছে । ভালো ব্যাপার এই জন্য যে, একে আমি শিক্ষার গণতন্ত্রীকরণ বলে মনে করি । কারণ আগেকার দিনে পড়ুয়ারা মূলত অভিভাবকদের পছন্দে পড়াশোনা করত । তাঁরা বলতেন, লাইন ধরে পড় । লাইন ধরে পড় ব্যাপারটা কলোনিয়াল হ্যাঙ্গওভার ৷ কবি হও, কিন্তু পাশাপাশি আগে ইঞ্জিনিয়ার হও । এর ফলে মানুষের মধ্যে যে নানা সম্ভাবনা আছে, একজন একইসঙ্গে ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে, গায়ক হতে পারে, ডাক্তার হতে পারে, লেখক হতে পারে, নিজের এক্তিয়ার থেকে বেরিয়ে গিয়ে নিজেকে প্রকাশ করছে । এই স্বীকৃতি ছাত্রছাত্রীদের ইচ্ছার স্বীকৃতি । তবে, জানি না দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির বিচারে এই বিষয়টা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে । কয়েক বছর পর বোঝা যাবে । "

চার বছরের স্নাতক কোর্স নিয়ে পবিত্রবাবু বলেন, "চার বছরের স্নাতক কোর্সের ফলে যদি স্নাতকোত্তর কোর্স এক বছরের হয় তবে তা ঠিক হল না । 50 ও 60-এর দশকে আমরা দুই বছরের স্নাতক ও দুই বছরের স্নাতকোত্তর পড়েছি । আমার মতে, স্নাতকোত্তরটা দু'বছরেরই থাক । কারণ, আমরা যত পরিণত হব ততই উচ্চশিক্ষা নেওয়ার সামর্থ্য বাড়বে । "

M.Phil তুলে দেওয়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য, "M.Phil আগে ছিল না । M.Phil-টা একদম অবান্তর বলে মনে করি । আসলে যারা শিক্ষামন্ত্রকের প্রশাসক তারা আমি যে বেকার, এই ফিলিংটা যাতে ডিলেড হয় তার জন্য এক ধরনের কৌশল খাঁড়া করেছে । আমি মনে করি, স্নাতকোত্তরের পর গবেষণা করতে হবে এটা ঠিক আছে । M.Phil তুলে দেওয়ায় ভালোই হয়েছে ।"

শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, "গঠনগত পরিবর্তন করা হয়েছে, পাঠক্রমে নতুন কিছু নয় । অতীতে এইরকম ব্যবস্থা ছিল । একটা পুরনো ধারার পুনরায় প্রবর্তন মাত্র । বলা হচ্ছে, বিজ্ঞান ও কলা বিভাগের মধ্যে কোনওরকম বিভাজন থাকবে না ৷ এটাতে আমার ঘোরতর আপত্তি আছে । কারণ কলা বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের যদি বিজ্ঞানে আনা হয় তাহলে তাদের বিকাশ ভালো হবে না । আমি খুশি হতাম দেখে যদি গতানুগতিকতার আবহ থেকে বেরিয়ে একটি নতুন শিক্ষানীতি তৈরি করত । যেমন, ভারতবর্ষে এখন কর্মসংস্থান বিরাট সমস্যা । সাধারণত ছেলেমেয়েরা স্নাতকোত্তর করেও চাকরি পায় না ৷ পেলেও তাতে মূল পড়াশোনার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক থাকে না । কাজেই শিক্ষাকে কর্মমুখী করা হোক । এরকম পরিবর্তন হয়নি । তবে ভেবেছিলাম কেন্দ্রীয় সরকার হয়তো শিক্ষায় ধর্মকে প্রাধান্য দেবে । আশ্বস্ত হয়েছি দেখে যে শিক্ষানীতিতে ধর্মকে আবাহন করা হয়নি ।"

M.Phil তুলে দেওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "ভালোই হয়েছে । M.Phil, P.hD না হলে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না, কাজেই M.Phil অর্থহীন । তার চেয়ে যারা উচ্চশিক্ষায় যেতে চায়, তাদের গবেষণায় অনুপ্রাণিত করা উচিত । "

যদিও M.Phil তুলে দেওয়া নিয়ে পৃথক অবস্থান রাজ্যের অধ্যাপক মহলের একাংশের । জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন JUTA-র তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, 2020 সালের জাতীয় শিক্ষানীতি আধুনিক ভারতের নির্মাতাদের শিক্ষার আদর্শকে ত্যাগ করেছে । ভারতের গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ধারণার পরিবর্তনের চেষ্টা করেছে ৷ সংকীর্ণ, সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মান্ধ ধারণা দিয়েছে । যা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিভাজনের আদর্শ দ্বারা পলিচালিত । ভারতের শিক্ষাকে কমপক্ষে এক শতাব্দী পিছনে ফেলে দিয়েছে ।

M.Phil তুলে দেওয়া নিয়ে JUTA-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাটাকেই ভেঙে দিয়ে নিজেদের মতো করে করেছে ৷ আমরা পুরো শিক্ষানীতির বিরোধিতা করছি ।"

জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন CUTA-র বক্তব্য, এই নীতি ফেডেরাল কাঠামোর উপর আক্রমণ করে । HCEI তৈরির মাধ্যমে শিক্ষায় রাজ্যের ভূমিকাকে ক্ষুণ্ণ করে । এই নীতি উচ্চশিক্ষার বেসরকারিকরণকেও উৎসাহ দিচ্ছে ৷ এতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া পড়ুয়ারা শিক্ষাক্ষেত্র থেকে বাদ পড়ে যাবে । বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে শিক্ষকতা ও গবেষণার ভিত্তিতে ভাগ করে দেওয়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণার পরিপন্থী ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.