ETV Bharat / city

1945 সালের পরও নেতাজির রাশিয়ায় থাকার প্রমাণ আছে, দাবি গবেষকের - Narendra Modi

নেতাজি গবেষকদের বক্তব্য, ১৯৪৫ সালের পর নেতাজি যে রাশিয়ায় ছিলেন, তার স্বপক্ষে অনেক প্রমাণ আছে । পাশাপাশি, ভারত সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ ৷ তাঁদের দাবি, ভারতের কোনও সরকারই নেতাজি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কথা বলেনি ।

পূরবী
author img

By

Published : Jul 24, 2019, 10:50 PM IST

Updated : Jul 24, 2019, 11:32 PM IST

কলকাতা, 24 জুলাই : নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য এখনও জিইয়ে রয়েছে ৷ সেই রহস্যভেদের ক্ষেত্রে রাশিয়ার (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মত গবেষকদের ৷ কিন্তু, মস্কো ভারতকে জানিয়েছে, সেদেশের আর্কাইভে নেতাজি সংক্রান্ত কোনও নথি খুঁজে পাওয়া যায়নি ৷ যদিও নেতাজি গবেষকরা রাশিয়ার এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ ৷ তাঁদের বক্তব্য, ১৯৪৫ সালের পর নেতাজি যে রাশিয়ায় ছিলেন, তার স্বপক্ষে অনেক প্রমাণ আছে । পাশাপাশি, ভারত সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ ৷ তাঁদের দাবি, ভারতের কোনও সরকারই নেতাজি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কথা বলেনি ।

1945 সালের 22 অগাস্ট ৷ টোকিও রেডিয়ো জানায়, চারদিন আগে তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ৷ সেই ঘটনার পর প্রায় 75 বছর পার হলেও এখনও পর্যন্ত কাটেনি নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য ৷ একদল গবেষকের মতে, নেতাজি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাননি ৷ তিনি রাশিয়াতে আত্মগোপন করেছিলেন ৷ যদিও অন্য একদল গবেষকের বক্তব্য, বিমান দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয় নেতাজির ৷ কিন্তু, কোনওক্ষেত্রেই জোরালো প্রমাণ মেলেনি ৷ 1999 সালে গঠিত হয় মুখার্জি কমিশন ৷ সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, বিমান দুর্ঘটনাতে মৃত্যু হয়নি নেতাজির ৷

পরে 2015 সালের সেপ্টেম্বরে নেতাজি সংক্রান্ত ৬৪টি গোপন ফাইল প্রকাশ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৷ পরের বছর নেতাজির জন্মদিনে 100টি গোপন নথির ডিজিটাল সংস্করণ প্রকাশ করে মোদি সরকার ৷ কিন্তু, অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে তেমন কোনও তথ্য ছিল না ৷ নেতাজি গবেষকরা দাবি করেন, জাপান ও রাশিয়া সরকারের কাছে অনেক অজানা তথ্য থাকতে পারে ৷ এরপর আজ লোকসভায় বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি মুরলীধরন জানান, 2014 সাল থেকে মস্কোর কাছে নেতাজি সংক্রান্ত একাধিক তথ্য চাওয়া হয়েছিল ৷ এর মধ্যে ছিল, 1945 সালের অগাস্টের আগে বা পরে রাশিয়াতে নেতাজি ছিলেন কি না ৷ মুরলীধরন বলেন, "রাশিয়া সরকার জানিয়েছে, নেতাজি নিয়ে তাদের আর্কাইভ থেকে কোনও তথ্য তারা পাচ্ছে না ৷ ভারতের অনুরোধের পর ফের তদন্ত করেও মস্কো কোনও অতিরিক্ত নথি খুঁজে পায়নি ৷"

এই সংক্রান্ত আরও খবর : রাশিয়ায় ছিলেন নেতাজি ? মস্কোর কাছেও তথ্য নেই, জানাল কেন্দ্র

যদিও রাশিয়ার সেই ব্যাখ্যাতে সন্তুষ্ট নন নেতাজি গবেষক পূরবী রায় ৷ দীর্ঘদিন ধরে নেতাজিকে নিয়ে গবেষণা করেছেন । গেছিলেন রাশিয়াতেও । তিনি জানান, ১৯৪৬ সালের অক্টোবরে নেতাজি যে রাশিয়ায় ছিলেন সেই তথ্যপ্রমাণ পেয়েছিলেন । বলেন, "বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটা ঠিক নয় । 90-র দশকে আমি নেতাজি নিয়ে গবেষণার জন্য রাশিয়ায় গেছিলাম । তখন 1945 সালের পরেও রাশিয়ায় নেতাজির উপস্থিতির নানা তথ্যপ্রমাণ পেয়েছিলাম ।" তাঁর দাবি, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনেরাল আলেকজান্ডার কলাসনিকভ জানান, 1946 সালের অক্টোবরে একটি বৈঠকে সোভিয়েত ক্যাবিনেটের সদস্যরা নেতাজির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন ৷ আর তার রেকর্ড রয়েছে ৷ যদিও পরে মুখার্জি কমিশনের সামনে হাজির হননি মেজর জেনেরাল ৷ পূরবী বলেন, "পাওয়া গেছিল 1946 সালের একটি রেকর্ড । যেখানে স্তালিন সহ অন্যরা বসে আলোচনা করছেন যে নেতাজিকে কোথায় রাখা হবে ।"

পূরবী বলেন, "আমি রাশিয়া থেকে পাওয়া প্রমাণ 1996 সালে তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লকের সম্পাদক চিত্ত বসুর হাতে তুলে দিয়েছিলাম । উনি বলেছিলেন জ্যোতি বসুর সঙ্গে কথা বলবেন । তাঁর কাছেই কাগজগুলি রয়ে গেছিল । কয়েকদিন পরেই চিত্তবাবুর মৃত্যুসংবাদ পেলাম । রহস্যজনক মৃত্যু । কিন্তু, চিত্তবাবুর দেহের ময়নাতদন্ত হয়নি । তড়িঘড়ি একদিনের মধ্যে দাহ করে দেওয়া হয়েছিল । পরে যেটা জানতে পারলাম, ওই কাগজগুলি কংগ্রেসের হাতে চলে গেছে । বিনিময়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের কয়েকজন শীর্ষ নেতা বড় অঙ্কের টাকা পেয়েছেন । তারপর আমাকে পাঁচ বছর ধরে মিথ্যেবাদী বলা হয়েছিল ।"

Netaji Subhas Chandra Bose
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

ডিসকভারি চ্যানেলের একটি তথ্যচিত্র (সুভাষচন্দ্র বসু : দা মিস্ট্রি ) 2016 সালের 18 জুলাই প্রিমিয়ার হয় ৷ পূরবীর বক্তব্য, সেই তথ্যচিত্রে কলাসনিকভ পরিষ্কার কিছু কথা বলেছিলেন । তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নজরে আনা হয়েছিল ৷ তখন দাবি ওঠে, মেজর জেনেরালের বয়ানের ভিত্তিতে ভারত সরকার যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয় ও রহস্য সমাধানে নেতাজি সংক্রান্ত ফাইল প্রকাশের জন্য রাশিয়াকে রাজি করায় ৷ অন্যদিকে, নেতাজি গবেষক অনুজ ধর বলেন, "আজ বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী যে কথা বলছেন, তা নতুন কিছু নয় । এর আগে, কোনও সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলেনি । নরেন্দ্র মোদিও বলেননি । ফল যা হওয়ার হয়েছে । রাশিয়ার তরফে দায়সারা উত্তর পাওয়া গেছে চিরকাল ।"

নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্রকুমার বসু বলেন, "সার্বিক পদক্ষেপ নিতে হবে ৷ শুধুমাত্র রাশিয়ান আর্কাইভে কিছু নথি আছে কি না পরীক্ষা করার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে না ৷" তাঁর দাবি, নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যের উত্তর দিতে পারবে জাপান ৷ তাঁর কথায়, "2016 সালে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জাপানকে চিঠি লিখেছিলেন, জাপানের কাছে নেতাজি সংক্রান্ত পাঁচটি ফাইল রয়েছে ৷ তিনটি ফাইল এখনও জাপানের কাছে রয়েছে ৷ 1945 সালের 18 অগাস্ট নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কী হয়েছিল জাপান তা জানে ৷"

কলকাতা, 24 জুলাই : নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য এখনও জিইয়ে রয়েছে ৷ সেই রহস্যভেদের ক্ষেত্রে রাশিয়ার (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মত গবেষকদের ৷ কিন্তু, মস্কো ভারতকে জানিয়েছে, সেদেশের আর্কাইভে নেতাজি সংক্রান্ত কোনও নথি খুঁজে পাওয়া যায়নি ৷ যদিও নেতাজি গবেষকরা রাশিয়ার এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ ৷ তাঁদের বক্তব্য, ১৯৪৫ সালের পর নেতাজি যে রাশিয়ায় ছিলেন, তার স্বপক্ষে অনেক প্রমাণ আছে । পাশাপাশি, ভারত সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ ৷ তাঁদের দাবি, ভারতের কোনও সরকারই নেতাজি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কথা বলেনি ।

1945 সালের 22 অগাস্ট ৷ টোকিও রেডিয়ো জানায়, চারদিন আগে তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ৷ সেই ঘটনার পর প্রায় 75 বছর পার হলেও এখনও পর্যন্ত কাটেনি নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য ৷ একদল গবেষকের মতে, নেতাজি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাননি ৷ তিনি রাশিয়াতে আত্মগোপন করেছিলেন ৷ যদিও অন্য একদল গবেষকের বক্তব্য, বিমান দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয় নেতাজির ৷ কিন্তু, কোনওক্ষেত্রেই জোরালো প্রমাণ মেলেনি ৷ 1999 সালে গঠিত হয় মুখার্জি কমিশন ৷ সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, বিমান দুর্ঘটনাতে মৃত্যু হয়নি নেতাজির ৷

পরে 2015 সালের সেপ্টেম্বরে নেতাজি সংক্রান্ত ৬৪টি গোপন ফাইল প্রকাশ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৷ পরের বছর নেতাজির জন্মদিনে 100টি গোপন নথির ডিজিটাল সংস্করণ প্রকাশ করে মোদি সরকার ৷ কিন্তু, অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে তেমন কোনও তথ্য ছিল না ৷ নেতাজি গবেষকরা দাবি করেন, জাপান ও রাশিয়া সরকারের কাছে অনেক অজানা তথ্য থাকতে পারে ৷ এরপর আজ লোকসভায় বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি মুরলীধরন জানান, 2014 সাল থেকে মস্কোর কাছে নেতাজি সংক্রান্ত একাধিক তথ্য চাওয়া হয়েছিল ৷ এর মধ্যে ছিল, 1945 সালের অগাস্টের আগে বা পরে রাশিয়াতে নেতাজি ছিলেন কি না ৷ মুরলীধরন বলেন, "রাশিয়া সরকার জানিয়েছে, নেতাজি নিয়ে তাদের আর্কাইভ থেকে কোনও তথ্য তারা পাচ্ছে না ৷ ভারতের অনুরোধের পর ফের তদন্ত করেও মস্কো কোনও অতিরিক্ত নথি খুঁজে পায়নি ৷"

এই সংক্রান্ত আরও খবর : রাশিয়ায় ছিলেন নেতাজি ? মস্কোর কাছেও তথ্য নেই, জানাল কেন্দ্র

যদিও রাশিয়ার সেই ব্যাখ্যাতে সন্তুষ্ট নন নেতাজি গবেষক পূরবী রায় ৷ দীর্ঘদিন ধরে নেতাজিকে নিয়ে গবেষণা করেছেন । গেছিলেন রাশিয়াতেও । তিনি জানান, ১৯৪৬ সালের অক্টোবরে নেতাজি যে রাশিয়ায় ছিলেন সেই তথ্যপ্রমাণ পেয়েছিলেন । বলেন, "বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটা ঠিক নয় । 90-র দশকে আমি নেতাজি নিয়ে গবেষণার জন্য রাশিয়ায় গেছিলাম । তখন 1945 সালের পরেও রাশিয়ায় নেতাজির উপস্থিতির নানা তথ্যপ্রমাণ পেয়েছিলাম ।" তাঁর দাবি, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনেরাল আলেকজান্ডার কলাসনিকভ জানান, 1946 সালের অক্টোবরে একটি বৈঠকে সোভিয়েত ক্যাবিনেটের সদস্যরা নেতাজির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন ৷ আর তার রেকর্ড রয়েছে ৷ যদিও পরে মুখার্জি কমিশনের সামনে হাজির হননি মেজর জেনেরাল ৷ পূরবী বলেন, "পাওয়া গেছিল 1946 সালের একটি রেকর্ড । যেখানে স্তালিন সহ অন্যরা বসে আলোচনা করছেন যে নেতাজিকে কোথায় রাখা হবে ।"

পূরবী বলেন, "আমি রাশিয়া থেকে পাওয়া প্রমাণ 1996 সালে তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লকের সম্পাদক চিত্ত বসুর হাতে তুলে দিয়েছিলাম । উনি বলেছিলেন জ্যোতি বসুর সঙ্গে কথা বলবেন । তাঁর কাছেই কাগজগুলি রয়ে গেছিল । কয়েকদিন পরেই চিত্তবাবুর মৃত্যুসংবাদ পেলাম । রহস্যজনক মৃত্যু । কিন্তু, চিত্তবাবুর দেহের ময়নাতদন্ত হয়নি । তড়িঘড়ি একদিনের মধ্যে দাহ করে দেওয়া হয়েছিল । পরে যেটা জানতে পারলাম, ওই কাগজগুলি কংগ্রেসের হাতে চলে গেছে । বিনিময়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের কয়েকজন শীর্ষ নেতা বড় অঙ্কের টাকা পেয়েছেন । তারপর আমাকে পাঁচ বছর ধরে মিথ্যেবাদী বলা হয়েছিল ।"

Netaji Subhas Chandra Bose
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

ডিসকভারি চ্যানেলের একটি তথ্যচিত্র (সুভাষচন্দ্র বসু : দা মিস্ট্রি ) 2016 সালের 18 জুলাই প্রিমিয়ার হয় ৷ পূরবীর বক্তব্য, সেই তথ্যচিত্রে কলাসনিকভ পরিষ্কার কিছু কথা বলেছিলেন । তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নজরে আনা হয়েছিল ৷ তখন দাবি ওঠে, মেজর জেনেরালের বয়ানের ভিত্তিতে ভারত সরকার যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয় ও রহস্য সমাধানে নেতাজি সংক্রান্ত ফাইল প্রকাশের জন্য রাশিয়াকে রাজি করায় ৷ অন্যদিকে, নেতাজি গবেষক অনুজ ধর বলেন, "আজ বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী যে কথা বলছেন, তা নতুন কিছু নয় । এর আগে, কোনও সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলেনি । নরেন্দ্র মোদিও বলেননি । ফল যা হওয়ার হয়েছে । রাশিয়ার তরফে দায়সারা উত্তর পাওয়া গেছে চিরকাল ।"

নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্রকুমার বসু বলেন, "সার্বিক পদক্ষেপ নিতে হবে ৷ শুধুমাত্র রাশিয়ান আর্কাইভে কিছু নথি আছে কি না পরীক্ষা করার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে না ৷" তাঁর দাবি, নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যের উত্তর দিতে পারবে জাপান ৷ তাঁর কথায়, "2016 সালে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জাপানকে চিঠি লিখেছিলেন, জাপানের কাছে নেতাজি সংক্রান্ত পাঁচটি ফাইল রয়েছে ৷ তিনটি ফাইল এখনও জাপানের কাছে রয়েছে ৷ 1945 সালের 18 অগাস্ট নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কী হয়েছিল জাপান তা জানে ৷"

Intro:কলকাতা, 24 জুলাই: রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, সেদেশের আর্কাইভে নেতাজি সংক্রান্ত কোনও নথি খুঁজে পাওয়া যায়নি ৷ আজ সংসদে দাঁড়িয়ে একথা জানান বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি মুরলীধরন ৷ যদিও প্রথিতযশা নেতাজি গবেষকরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য মানতে নারাজ। ইটিভি ভারতকে তাদের কেউ জানালেন, ১৯৪৫ এর পর নেতাজির রাশিয়ায় থাকার প্রমাণ আছে। কারও যাবি, কোনও সরকারই নেতাজি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কথা বলেনি। Body:নেতাজিকে নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন পূরবী রায়। তথ্য খুঁজে বার করতে গিয়েছিলেন রাশিয়াতেও। তার দাবি, সে সময় ১৯৪৬ সালের অক্টোবর মাসেও রাশিয়ায় নেতাজির উপস্থিতির তথ্যপ্রমাণ পেয়েছিলেন। আজ পূরবী ইটিভি ভারতকে বলেন, “ বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটা ঠিক নয়। 90 দশকে আমি রাশিয়ায় নেতাজি নিয়ে গবেষণার জন্য গিয়েছিলাম। তখন 1945 সালের পরেও রাশিয়ায় নেতাজির উপস্থিতির নানা তথ্য প্রমাণ পাই।" এরপর এই বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন পূরবী। তিনি বলেন, “ আমি রাশিয়া থেকে পাওয়া প্রমাণ ১৯৯৬ সালে তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লকের সম্পাদক চিত্র বসুর হাতে তুলে দিয়েছিলাম। উনি বলেছিলেন জ্যোতি বসুর সঙ্গে কথা বলবেন। ওনার কাছেই কাগজগুলো রয়ে গিয়েছিল। তার কয়েকদিন পরেই চিত্ত বসুর মৃত্যু সংবাদ পেলাম। রহস্যজনক মৃত্যু। কিন্তু চিত্ত বাবুর দেহের কোন ময়না তদন্ত হয়নি। তড়িঘড়ি নিয়ে এসে একদিনের মধ্যে দাহ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে যেটা জানতে পারলাম, ওই কাগজগুলো কংগ্রেসের হাতে চলে গেছে। তার বিনিময়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের কয়েকজন শীর্ষ নেতা বড় অঙ্কের টাকা পেয়েছেন। তারপর আমাকে পাঁচ বছর ধরে মিথ্যেবাদী বলা হয়েছিল। পরে নেতাজিকে নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি হয়। সেই ডকুমেন্টারিতে রাশিয়ায় আমার সঙ্গে যিনি কাজ করেছিলেন, তিনি পরিষ্কার কিছু কথা বলেছিলেন। রাশিয়ান সেই ভদ্রলোকের কাছ থেকেই প্রমাণ পেয়েছিলাম। পাওয়া গিয়েছিল 1946 সালের একটি রেকর্ড। যেখানে স্তালিন সহ অন্যরা বসে আলোচনা করছেন যে নেতাজিকে কোথায় রাখা হবে।" Conclusion:অন্যদিকে আরেক নেতাজি গবেষক অনুজ ধর বলেন, “ আজ বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী যে কথা বলছেন, তা নতুন কিছু নয়। এর আগে কোন সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলেনি। নরেন্দ্র মোদিও বলেননি। ফল যা হওয়ার হয়েছে। রাশিয়ার তরফের দায়সারা উত্তর পাওয়া গেছে চিরকাল।"
Last Updated : Jul 24, 2019, 11:32 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.