কলকাতা, 15 এপ্রিল: লকডাউন সফল করতে সক্রিয় রয়েছে কলকাতা পুলিশ। নানাভাবে চলছে লকডাউন সফল করার কাজ। চলছে নাকা চেকিং, ড্রোন নজরদারি। সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্ন প্রচার তো রয়েছেই। কিন্তু তারপরও কলকাতার বাজারগুলিতে সামাজিক দূরত্ব না মেনে ভিড় হচ্ছে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এখনও অপ্রয়োজনে রাস্তায় বের হচ্ছেন কিছু মানুষ। শহরতলি কিংবা রাজ্যের জেলাগুলির চিত্র আরও করুণ। প্রতিদিনই সামাজিক দূরত্ব না মেনে রাস্তায় জনতার ভিড় করার ছবি সামনে আসছে। এই পরিস্থিতিতে আরও কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর করতে আদৌ কি সেনা নামানো উচিত? শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন মেজর জেনারেল অরুণ রায় বলেন, “পৃথিবীর এই সংকটের সময়েও পাকিস্তান প্রতিদিন সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন করছে। চলছে সিজ ফায়ার। বেশ কয়েকজন মানুষের মৃত্যুর খবরও এসেছে। তাই সীমান্ত পাহারায় ঢিলে দেবার প্রশ্ন ওঠে না। চিন সীমান্ত তো বরাবরই স্পর্শকাতর। সেখানেও সেনাবাহিনীর সক্রিয় থাকাই উচিত। লকডাউন সফল করতে গিয়ে সীমান্তে গাফিলতি কখনো কাম্য নয়।“
একথা বলার পরেও প্রাক্তন মেজর জেনারেল জানান, “এটাও ভাবতে হবে যে, দেশে আমজনতা না থাকলে আর্মির কী প্রয়োজন। লকডাউনের মাঝেও যে ছবি আপনাদের সংবাদমাধ্যমে দেখছি তা বড় উদ্বেগের। এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রতিরক্ষা দপ্তরকে। কথা বলতে হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে। তবে আমার মনে হয়, এই পরিস্থিতিতে আধাসেনা কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। যে কোনও রাজ্য সরকার চাইলেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে এ বিষয়ে আবেদন করতেই পারে। তবে সবার আগে চাই সদিচ্ছা। অনেক রাজ্যে পুলিশ কঠোর ভূমিকা নিচ্ছে। তারা ফলও পাচ্ছে। পুলিশকে পিছনে টেনে ধরে লাভ নেই। মানুষকে বাঁচাতে হলে এখন কঠোর মনোভাব দেখাতেই হবে।"
সাধারণত দেশের ভেতরে কোনও জায়গায় সেনা নামাতে হলে সেই এলাকাকে উপদ্রুত ঘোষণা করতে হয়। তাই সেনা নামানোর প্রক্রিয়া আদৌ সহজ নয় বলেও জানাচ্ছেন অরুণ রায়। তাঁর কথায়, “কোনও রাজ্য সরকার চাইবে না সংশ্লিষ্ট প্রদেশকে উপদ্রুত ঘোষণা করা হোক। উপদ্রুত ঘোষণা করা হলে রাজ্য সরকারের কাছে কোনও কেন্দ্রীয় অর্থ আসবে না। সেটি সেনাবাহিনীর মাধ্যমেই খরচ হবে।"
এ কথা বলেও প্রাক্তন মেজর জেনারেল অরুণ রায় বলেন, "তবে, এই মুহূর্তে যেভাবে কোরোনা মহামারি একটু একটু করে গ্রাস করছে দেশকে, তাতে সবটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে কেন্দ্র-রাজ্য উভয় সরকারকেই। যা করলে দেশের মানুষ সুরক্ষিত থাকেন সেটাই করতে হবে।"