ETV Bharat / city

ওয়ারেন্ট ছাড়া অবৈধভাবে গ্রেফতার, নারদ মামলায় সওয়াল অভিযুক্তদের আইনজীবীর - সিবিআই

"যেভাবে ওয়ারেন্ট ছাড়া অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে তা অবৈধ ৷" নারদা মামলার (Narada Case) সওয়ালে এমনই দাবি করলেন অভিযুক্তদের আইনজীবী ৷

narada-case-hearing-concluded-for-the-day
ওয়ারেন্ট ছাড়া অবৈধভাবে গ্রেফতার, নারদ মামলায় সওয়াল অভিযুক্তদের আইনজীবীর
author img

By

Published : Jun 10, 2021, 5:13 PM IST

কলকাতা, 10 জুন: আজকের মত শেষ হল নারদা মামলার (Narada Case) শুনানি । নারদা মামলা এ রাজ্য থেকে সরানোর আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই ৷ তার উপরেই সওয়াল জবাব চলছে কলকাতা হাইকোর্টের 5 বিচারপতির বেঞ্চে ।

ওয়ারেন্ট ছাড়া যে ভাবে 4 অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাকে অবৈধ বলে আজ উল্লেখ করলেন অভিযুক্তদের তরফে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা । তিনি বলেন, "বিচারপতিরা সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করার শপথ নেন । তাঁরা মানুষের ধারণা দ্বারা প্রভাবিত হন না । যদি সলিসিটর জেনারেলের বক্তব্য স্বীকার করে নেওয়া হয়, তাহলে আমরা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ব । তাহলে মনে হবে মাননীয় বিচারপতিরা যে শপথবাক্য পাঠ করেছেন, সেটা একটা কাগজ ছাড়া কিছু নয় । আমার মনে হয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা জামিনের উপর স্থগিতাদেশ দিতেন না । ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে তাঁরা জামিন স্থগিত করেছিলেন । সিবিআই অত্যন্ত সুকৌশলে তাঁদের বক্তব্য পেশ করেছিল ।"

প্রত্যুত্তরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, "এই বক্তব্যের অর্থ কী ? আপনি কি বলতে চাইছেন যে বিচারপতিরা তাঁদের গ্রহণ করা শপথ মেনে চলেন না ?" প্রশ্নের জবাবে লুথরা বলেন, "আমি বলতে চাইছি যে, নিম্ন আদালতের বিচারকরা শপথের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই নির্ভয়ে রায় দান করেছেন । যে শপথের মর্যাদা রক্ষার কথা আমরা সবসময় বলি বিশেষ বিচারক কি সেটা রক্ষা করবেন না?" তাঁর দাবি, "সিবিআই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের কোনও কারণ জানায়নি ।"

তাঁর কথায়, "মামলায় কোনও একপক্ষ জিতবে, কোনও এক পক্ষ হারবে । আদালতের নিয়ম অনুযায়ী এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা যায় । একটা রায় আপনার বিরুদ্ধে গিয়েছে বলে সেটাই মামলা স্থানান্তরের কারণ হতে পারে না ! সিবিআই সকাল 8.10-এ গ্রেফতার করেছে, কিন্তু অ্যারেস্ট মেমোতে 8:45 দেখানো হয়েছে । জনপ্রতিনিধিদের গ্রেফতার করার আগে অনুমতি নিতে হয়, এখানে গ্রেফতারের পরে তা নেওয়া হয়েছে । মদন মিত্রকে কোনওরকম নোটিশ ও ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করা হয় । নিজাম প্লেসে নিয়ে গিয়ে অ্যারেস্ট মেমো দেওয়া হয় ।" সিবিআই যে হলফনামা দিয়েছে সেখানে সাধারণ মানুষের চাপ, হুমকি , মবক্রেসি এই শব্দগুলোর কথা বারবার উল্লেখ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী লুথরা ।

আরও পড়ুন: নারদ মামলা ভিনরাজ্যে সরানো নিয়ে শুনানি শুরু কলকাতা হাইকোর্টে

তিনি আরও বলেন, " আমাদের মক্কেলদেরকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হল, অথচ অ্যারেস্ট মেমোতে গ্রেপ্তারের স্থান নিজাম প্যালেস দেখাচ্ছে কেন ? এটা সাংবিধানিক নিয়মের সঙ্গে প্রতারণা করা নয় ? এরপরেও সিবিআই নীতি-নৈতিকতার কথা বলছে, অন্যায় কাজ করে সেটাকে ন্যায্য বলে উপস্থাপন করতে চাইছে ?"

তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন," সেটা হলে কি বিক্ষোভের অধিকার অর্জন করা যায় ?" এর উত্তরে সিদ্ধার্থ লুথরা আবার বলেন, "করোনা প্রোটোকল না মেনেই মদন মিত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে । কুড়িটির বেশি গাড়ি নিয়ে সিবিআই তাঁর বাড়িতে আসে। পরোয়ানা ছাড়াই একজন ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হল ! সিবিআই-এর বক্তব্য যে তারা বিক্ষোভের কারণে 4 অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে নিতে পারেনি । আমার বক্তব্য হচ্ছে সিবিআই তাদের হেফাজতে পায়নি তার কারণ গ্রেফতারিটা ছিল অতিরঞ্জিত, আইনসংগত নয়।"

তখন বিচারপতির সৌমেন সেন আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরার প্রতি প্রশ্ন করেন,"গ্রেফতারের বৈধতা কি এই মামলার ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক ? সিবিআই-এর বক্তব্য হল যে তাঁরা বিক্ষোভের কারণে অভিযুক্তদের আদালতের সামনে পেশ করতে পারেনি ।" লুথরা তখন বলেন ,"আগে সিবিআই বলেছিল অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়ার দরকার নেই এবং আর তদন্ত দরকার নেই । হঠাৎ করে 7 মে কি দরকার পড়ল যে তাঁদের গ্রেফতার করতে হল ?"

আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে লাল ধুতি-পঞ্জাবিতে গানে-রসবোধে রঙিন মদন

এরপরই বিচারপতি হরিশ ট‍্যন্ডন বলেন, "এই প্রশ্নগুলো জামিনের সঙ্গে সংযুক্ত । আমরা জামিনের ব্যাপারে বিচার করছি না । সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা বলেছেন যে একটা বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল । যেটাকে তিনি মানুষের জমায়াতের বিক্ষোভ বলে উল্লেখ করেছেন ।"

লুথরার এ প্রসঙ্গে বক্তব্য, "তারা কাজ করতে পারছে না বলে সিবিআই মহামান্য বিচারপতিদের সামনে বলেছেন । তাদের এই অভিযোগ মিথ্যা । সিসিটিভি ফুটেজ বলছে যে, তাদের যাওয়া আসার ক্ষেত্রে কোনও বাধা সৃষ্টি হয়নি ।"

এরপরই আজকের মত শুনানি শেষ হয় । আগামী মঙ্গলবার সকালে ফের শুনানি এই মামলার ।

কলকাতা, 10 জুন: আজকের মত শেষ হল নারদা মামলার (Narada Case) শুনানি । নারদা মামলা এ রাজ্য থেকে সরানোর আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই ৷ তার উপরেই সওয়াল জবাব চলছে কলকাতা হাইকোর্টের 5 বিচারপতির বেঞ্চে ।

ওয়ারেন্ট ছাড়া যে ভাবে 4 অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাকে অবৈধ বলে আজ উল্লেখ করলেন অভিযুক্তদের তরফে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা । তিনি বলেন, "বিচারপতিরা সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করার শপথ নেন । তাঁরা মানুষের ধারণা দ্বারা প্রভাবিত হন না । যদি সলিসিটর জেনারেলের বক্তব্য স্বীকার করে নেওয়া হয়, তাহলে আমরা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ব । তাহলে মনে হবে মাননীয় বিচারপতিরা যে শপথবাক্য পাঠ করেছেন, সেটা একটা কাগজ ছাড়া কিছু নয় । আমার মনে হয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা জামিনের উপর স্থগিতাদেশ দিতেন না । ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে তাঁরা জামিন স্থগিত করেছিলেন । সিবিআই অত্যন্ত সুকৌশলে তাঁদের বক্তব্য পেশ করেছিল ।"

প্রত্যুত্তরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, "এই বক্তব্যের অর্থ কী ? আপনি কি বলতে চাইছেন যে বিচারপতিরা তাঁদের গ্রহণ করা শপথ মেনে চলেন না ?" প্রশ্নের জবাবে লুথরা বলেন, "আমি বলতে চাইছি যে, নিম্ন আদালতের বিচারকরা শপথের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই নির্ভয়ে রায় দান করেছেন । যে শপথের মর্যাদা রক্ষার কথা আমরা সবসময় বলি বিশেষ বিচারক কি সেটা রক্ষা করবেন না?" তাঁর দাবি, "সিবিআই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের কোনও কারণ জানায়নি ।"

তাঁর কথায়, "মামলায় কোনও একপক্ষ জিতবে, কোনও এক পক্ষ হারবে । আদালতের নিয়ম অনুযায়ী এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা যায় । একটা রায় আপনার বিরুদ্ধে গিয়েছে বলে সেটাই মামলা স্থানান্তরের কারণ হতে পারে না ! সিবিআই সকাল 8.10-এ গ্রেফতার করেছে, কিন্তু অ্যারেস্ট মেমোতে 8:45 দেখানো হয়েছে । জনপ্রতিনিধিদের গ্রেফতার করার আগে অনুমতি নিতে হয়, এখানে গ্রেফতারের পরে তা নেওয়া হয়েছে । মদন মিত্রকে কোনওরকম নোটিশ ও ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করা হয় । নিজাম প্লেসে নিয়ে গিয়ে অ্যারেস্ট মেমো দেওয়া হয় ।" সিবিআই যে হলফনামা দিয়েছে সেখানে সাধারণ মানুষের চাপ, হুমকি , মবক্রেসি এই শব্দগুলোর কথা বারবার উল্লেখ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী লুথরা ।

আরও পড়ুন: নারদ মামলা ভিনরাজ্যে সরানো নিয়ে শুনানি শুরু কলকাতা হাইকোর্টে

তিনি আরও বলেন, " আমাদের মক্কেলদেরকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হল, অথচ অ্যারেস্ট মেমোতে গ্রেপ্তারের স্থান নিজাম প্যালেস দেখাচ্ছে কেন ? এটা সাংবিধানিক নিয়মের সঙ্গে প্রতারণা করা নয় ? এরপরেও সিবিআই নীতি-নৈতিকতার কথা বলছে, অন্যায় কাজ করে সেটাকে ন্যায্য বলে উপস্থাপন করতে চাইছে ?"

তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন," সেটা হলে কি বিক্ষোভের অধিকার অর্জন করা যায় ?" এর উত্তরে সিদ্ধার্থ লুথরা আবার বলেন, "করোনা প্রোটোকল না মেনেই মদন মিত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে । কুড়িটির বেশি গাড়ি নিয়ে সিবিআই তাঁর বাড়িতে আসে। পরোয়ানা ছাড়াই একজন ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হল ! সিবিআই-এর বক্তব্য যে তারা বিক্ষোভের কারণে 4 অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে নিতে পারেনি । আমার বক্তব্য হচ্ছে সিবিআই তাদের হেফাজতে পায়নি তার কারণ গ্রেফতারিটা ছিল অতিরঞ্জিত, আইনসংগত নয়।"

তখন বিচারপতির সৌমেন সেন আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরার প্রতি প্রশ্ন করেন,"গ্রেফতারের বৈধতা কি এই মামলার ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক ? সিবিআই-এর বক্তব্য হল যে তাঁরা বিক্ষোভের কারণে অভিযুক্তদের আদালতের সামনে পেশ করতে পারেনি ।" লুথরা তখন বলেন ,"আগে সিবিআই বলেছিল অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়ার দরকার নেই এবং আর তদন্ত দরকার নেই । হঠাৎ করে 7 মে কি দরকার পড়ল যে তাঁদের গ্রেফতার করতে হল ?"

আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে লাল ধুতি-পঞ্জাবিতে গানে-রসবোধে রঙিন মদন

এরপরই বিচারপতি হরিশ ট‍্যন্ডন বলেন, "এই প্রশ্নগুলো জামিনের সঙ্গে সংযুক্ত । আমরা জামিনের ব্যাপারে বিচার করছি না । সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা বলেছেন যে একটা বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল । যেটাকে তিনি মানুষের জমায়াতের বিক্ষোভ বলে উল্লেখ করেছেন ।"

লুথরার এ প্রসঙ্গে বক্তব্য, "তারা কাজ করতে পারছে না বলে সিবিআই মহামান্য বিচারপতিদের সামনে বলেছেন । তাদের এই অভিযোগ মিথ্যা । সিসিটিভি ফুটেজ বলছে যে, তাদের যাওয়া আসার ক্ষেত্রে কোনও বাধা সৃষ্টি হয়নি ।"

এরপরই আজকের মত শুনানি শেষ হয় । আগামী মঙ্গলবার সকালে ফের শুনানি এই মামলার ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.