কলকাতা, 25 জুন: সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে কার্নিশ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে রোগী সুজিত অধিকারীর (A Patient Goes Down in Cornice)৷ মল্লিক বাজারের বেসরকারি হাসপাতালের এই ঘটনায় উঠছে নানা প্রশ্ন ৷ আটতলা তলা থেকে ঝাঁপ মারলেন সুজিত । তাঁর বয়স 33 বছর। লেকটাউনে শ্রীভূমির বাসিন্দা তিনি । কিন্তু কীভাবে একজন রোগী জানালা খুলে কার্নিশে পৌঁছল, এর উত্তর নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছেও । হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন ।
সাংবাদিক বৈঠকে করে হাসপাতালের সিইও অভীক রায়চৌধুরী বলেন, "23 তারিখ সুজিত অধিকারী এখানে ভর্তি হন । এপিলেপ্সি ছিল তাঁর । চিকিৎসা চলছিল । তবে হাসপাতালে থাকাকালীন তার মধ্যে কোনওরকম শারীরিক অসুস্থতা দেখা যায়নি । তাঁকে অ্যান্টি এপিলেপটিক ড্রাগস দেওয়া হয়েছিল এবং তাতে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন । ফলে আজ তাকে ছুটি দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল ।"
তিনি আরও বলেন, "আজ সকাল 11টা নাগাদ আমাদের একজন নার্স দেখেন এই রোগী জানালা খুলে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে । তখন নার্স শীঘ্রই তার সামনে যায় এবং তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে । তাঁর জামার একটু অংশ ওই নার্স ধরেও ফেলেছিলেন, তবে তখন তিনি ঘুরে নার্সকে কামড়ে দেওয়ার চেষ্টা করায় সেই নার্স ভীত হয়ে যায় এবং সেই সময় বুঝে সুজিত জানালা দিয়ে লাফ দেন কার্নিশে (Mullick Bazar Hospital Patient Fell Down)। তারপর দু'ঘণ্টা তিনি প্রায়ই কার্নিশে ছিলেন ।"
কিন্তু কীভাবে রোগী জানালা পেড়িয়ে পৌঁছল আটতলার কার্নিশে ?
সিইও অভীক রায়চৌধুরী বলেন, "আমাদের জানালাগুলির লিভারের বোল্ডগুলো স্ক্রু-এর সাহায্যে বন্ধ করা থাকে ৷ কোন অসুস্থ মানুষ তো দূরের কথা, কোনও সুস্থ মানুষ ওই জানলা খুলে বেরোতে পারবে না । এক্ষেত্রে আমরা যা দেখেছি এই রোগীর বেডের পাশের যে জানলা রয়েছে, সেই জানলার লিভার দুটো বোল্ডের সাহায্যে বন্ধ ছিল না ৷ একটি বোল্ড কেঁটে নীচে পড়ে ছিল ৷ উনি পেশায় লরি চালক ছিলেন । এই সব খুঁটিনাটি কাজ তিনি জানেন । আমাদের অনুমান তিনি নিজেই এই কাজটি করেছেন । তবে কেউতো দেখেনি, তাই আমরা স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছি না । তবে ওনার মধ্যে কোনওরকম শারীরিক অসুস্থতা দেখা যায়নি । হয়তো আগেই তিনি জানালা খুলে রেখেছিলেন । আজ ওই সময় কেউ না-থাকায় ওরকম কাজ করেছে ।"
কেন জাল আনা হল না দমকলের তরফে ?
সেই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, "আমি দমকল বাহিনীকে একফোঁটাও দোষ দিতে রাজি নই । আমি দেখেছি তারা দীর্ঘ চেষ্টা করেছে । কথাটা সত্যি বলেছে যে কার্নিশে বেরোনোর পর ধরার কোনও জায়গা নেই । যদি কেউ ধরতে যেত আরও বিপদজনক হয়ে উঠতো । তাহলে আজকের ঘটনায় একজন নয়, দুজন পড়ে যেত ।" ঘটনার তদন্তের ব্যাপারে তিনি বলেন, "কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা আমরা সত্যিই ভেবে উঠতে পারছি না । এ ধরনের ঘটনা তদন্ত করার জন্য বাইরে থেকেও দরকার হলে এক্সপার্টাইজ নিয়ে আসতে পারি ।"