কলকাতা, 31 মে : মঙ্গলবার রাজ্যে এসে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব । এর পাল্টা জবাব দিলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন (MP Santunu Sen Slams Railway Minister Ashwini Vaishnaw)। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ বলেন, "রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের জন্য আমার করুণা হচ্ছে । তিনি পশ্চিমবঙ্গে এসে নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহের হয়ে ঢোল পেটাচ্ছেন । অথচ প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাঁকে বিশ্বাস করেন না । তার পেছনেও পেগাসাস স্পাইওয়ার লাগিয়ে দিয়েছিলেন ।"
শান্তনু সেন জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে উপদেশ দেওয়ার পরিবর্তে যেন রেলমন্ত্রী তাঁর নিজের মন্ত্রকের দিকে মনোনিবেশ করেন । তিনি বলেন, "ভারতীয় রেলওয়ে, যা দেশের লাইফলাইন, তা পুরোপুরি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে ।" তৃণমূল সাংসদের কথায়, প্ল্যাটফর্ম থেকে শুরু করে কোচ এমনকি রেলওয়ে স্টেশন, সবকিছুই বেসরকারী শিল্পপতিদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে । টিকিটের দাম বাড়ছে । বর্তমান সরকারের অধীনে প্রবীণ নাগরিক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ছাড় বাতিল করা হয়েছে রেলে । তাদের মুখে এ ধরনের বড় বড় কথা মানায় না ।
তৃণমূল নেতা দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলেন তখন জিনিসগুলি সম্পূর্ণ আলাদা ছিল । তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিকিটের দাম না বাড়িয়ে রেলকে একটি সমান্তরাল শিল্প হিসাবে চালিয়েছিলেন । তিনি আইটিআই কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ খোলেন । তিনি 'ইজ্জত স্কিম' চালু করেছিলেন, যেখানে একজন দিনে 100 কিলোমিটার যেতে পারে মাত্র 25 টাকায় ।"
এদিন বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও একহাত নিলেন শান্তনু সেন । তিনি বলেন, "বিশ্বাসঘাতকতায় শুভেন্দু অধিকারী এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় মীরজাফর ।" তার অভিযোগ, শুভেন্দু তার নিজের রাজনৈতিক মা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন । আইনের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করতে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়ে অমিত শাহের তোতাপাখি হয়েছেন । শান্তনু সেন বিরোধী দলনেতাকে মনে করিয়ে দিলেন যে তিনি সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনে তাঁর নিজের ওয়ার্ডে হেরে গিয়েছেন এবং বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে জেতার জন্য বিদ্যুত বিভ্রাট এবং গোপন কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছে ।
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh : মুখর দিলীপকে মৌন হতে নির্দেশ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে আনা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগের জবাব দিয়েছেন শান্তনু সেন । তিনি বলেন, "নাম বদল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের থেকে ভালো কেউ করতে পারে না । ইন্দিরা আবাস যোজনাকে নাম বদল করে মোদি সরকার নিজেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা করেছে ।" একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, কেন উত্তরপ্রদেশে আবাস যোজনার নাম নিয়ে তাঁর কোনও সমস্যা নেই? বাংলায় নাম বদল হলেই যত সমস্যা ।