কলকাতা, 22 জুন : কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি করে দিয়েছে চোরের দল। যার জেরে, রোগীদের চিকিৎসা শুরুর আগে ওয়ার্ডে আবার অক্সিজেন সরবরাহের জন্য পাইপলাইনের ব্যবস্থা করতে হবে । এই অবস্থার মধ্যেই তিন চোরকে পাকড়াও করল পুলিশ । যার জেরে, একদিকে যেমন সব গুছিয়েও চুরির কাজ শেষ করতে পারল না চোরের দল, অন্যদিকে তেমন ক্ষতিও এড়াতে পারল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । শনিবারের এই ঘটনা কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ।
COVID-19-এর চিকিৎসার জন্য কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে টারশিয়ারি হাসপাতাল হিসাবে ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর । এখানে কোরোনার রোগীদের চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর অন্যান্য বিল্ডিং কার্যত বন্ধ হয়ে রয়েছে । কারণ, নন-COVID-19 রোগীদের এখন হাসপাতালে ভরতি নেওয়া হয় না। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মেডিকেল পড়ুয়াদের পরীক্ষার জন্য শনিবার সকালে এখানকার MCH বিল্ডিংয়ে থাকা মেডিসিনের মেল এবং ফিমেল ওয়ার্ড খোলা হয়। কিন্তু, ওয়ার্ডের দরজা খোলার পর চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের । দেখা যায়, ওয়ার্ডে যে পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়, সেই পাইপের অনেকটা অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
সূত্রের খবর, COVID-19 হাসপাতাল চালু হওয়ার পর থেকে এই ওয়ার্ড বন্ধ হয়ে রয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীরা MCH বিল্ডিংয়ের সামনের দিকে থাকেন । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক তদন্তে বুঝতে পারে, MCH বিল্ডিংয়ের পিছন দিক থেকে চোর ঢুকে ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহের পাইপলাইন কেটে ফেলেছে । কারণ, বিল্ডিংয়ে পিছনের দিকের গ্রিল এবং ধাতব তারের জাল কাটা রয়েছে । এ দিকে, কেটে ফেলা তামার এই পাইপলাইন তখনও ওয়ার্ডের মধ্যে ছিল । প্রাথমিক তদন্তে কর্তৃপক্ষ অনুমান করে, এটা একদিনের কাজ নয়। ধীরে ধীরে এ সব করা হয়েছে । তবে, যখন এই কাজ করা শুরু হয়েছে, চোর নিশ্চয়ই আবার এখানে এসে বাকি জিনিসগুলি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে । এর পর শনিবার সকাল থেকে MCH বিল্ডিংয়ের পিছন দিকে নজর রাখা হয়। চোর ধরার জন্য ওৎ পেতে থাকা হয়। অবশেষে শনিবার সন্ধে নাগাদ দেখা যায় তিনজন MCH বিল্ডিংয়ের পিছন দিক থেকে ঢোকার চেষ্টা করছে । এরপরই পুলিশ ওই তিনজনকে পাকড়াও করে ।
পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে, ওই তিনজন হল শেখ রবিউল , মহম্মদ নাসির , মহম্মদ রসুল । এর মধ্যে নাসির ও মহম্মদ রসুল দক্ষিণ 24 পরগনার ক্যানিংয়ের জীবনতলার বাসিন্দা । অন্যজন, অর্থাৎ শেখ রবিউলের বাড়ি কলেজ স্ট্রিটের কলাবাগান এলাকায় । এরা পেশায় প্রত্যেকেই নির্মাণ শ্রমিক । এর আগে হাসপাতালের বিভিন্ন কাজ তারা করে গেছে । যার কারণে হাসপাতালের সমস্ত বিষয় তারা খুঁটিনাটি জানত বলে মনে করা হচ্ছে ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য যে পাইপলাইন রয়েছে, তার প্রায় 800-850 ফুট কেটে ফেলা হয়েছে। এর ফলে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে । MCH বিল্ডিংয়ের ওই দুই ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসা শুরুর আগে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য এই পাইপলাইন বসাতে হবে। হাসপাতালে যাতে নিরাপত্তায় খামতি না থাকে, তার জন্য কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গেছে।