কলকাতা, 19 সেপ্টেম্বর : কৃষকরা আলুর দাম পাচ্ছেন না । অথচ খুচরো এবং পাইকারি বাজারে আলুর দাম নিয়মিত ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে । সারা ভারত কিষাণ সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি আগামীকাল রাজ্যের সমস্ত জেলার কৃষক নেতৃত্বকে নিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠকের ডাক দিয়েছে । চলতি মাসের 25 তারিখ রাজ্যের কৃষকরা বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছেন ।
কিষাণ সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির কথায়, কৃষকরা আলু বিক্রি করে কিলো প্রতি 11 টাকা থেকে 12 টাকায় । সেই আলু বাজারে বিক্রি হয় কিলো প্রতি 34 টাকা থেকে 36 টাকায় । আগামীকাল বিপন্ন কৃষকদের নিয়ে সারা ভারত কিষান সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি জরুরিকালীন বৈঠক করবে ।
মূলত মধ্যস্বত্বভোগী, হিমঘর মালিক এবং কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আলুর কালোবাজারির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন কিষান সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক কার্তিক পাল। রাজ্যের বাজারে আকাশছোঁয়া আলুর দাম । কিলো প্রতি 34 টাকা, 35 টাকা এবং 36 টাকার আলু কয়েকদিনের মধ্যেই 50 টাকা প্রতি কিলোয় গিয়ে পৌঁছবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কৃষকরা । কৃষকরা দাম পেল না । কালোবাজারির সঙ্গে জড়িতরা মুনাফা নিয়ে চলে যায় । রাজ্য সরকার 25 টাকা প্রতি কিলো দরে আলু বিক্রির কথা বললেও, কেউ কারও কথা শুনছে না ।
কার্তিক পাল বলেন, "সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই রাজ্যের বাজারগুলিতে । কৃষকরা এক কিলো আলু বিক্রি করে 25 পয়সা লাভ করে । রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা, মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা, এবং দালালদের অর্থনৈতিক লেনদেনের জন্যে আলুর এমন চড়া দাম । কয়েকদিনের মধ্যেই 50 থেকে 60 টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হবে ।"
আরও পড়ুন : "বিভ্রান্ত হবেন না" কৃষকদের উদ্দেশে বার্তা প্রধানমন্ত্রীর
রাজ্যের সমস্ত কৃষি বিপণন ব্যবস্থা কর্পোরেটের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেন কৃষক সংগঠনের নেতা কার্তিক পাল । তিনি বলেন, "চুক্তি চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা । কৃষকের আত্মহত্যাও দেশ জুড়ে বাড়ছে । যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারা দাবি করে কৃষকের আত্মহত্যা হয়নি । আসলে কৃষকদের চিত্রটা সম্পূর্ণ আলাদা ।" কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন কৃষি বিল সমগ্র কৃষি ব্যবস্থাকে কর্পোরেটের হাতে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন কার্তিক পাল । দেশের অর্থনীতির সঙ্গে কৃষকরা জড়িত। কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে অর্থনীতি মুখ থুবরে পড়বে। আপাতত আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রাজ্যের সবক'টি কৃষক সভাকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে আগামী কাল বসবে সারা ভারত কিষাণ সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের প্রস্তাবিত কৃষি বিলগুলিকে কৃষক স্বার্থের পরিপন্থী বলে জানিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন হরসিমরত কউর বাদল । কৃষি বিলগুলির বিরোধিতা শুরু করেছে, রাজ্যের কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি । এই পরিস্থিতিতে গতকাল ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে হয় নরেন্দ্র মোদিকে । কৃষকদের ভুল পথে চালিত না হওয়ার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । তিনি বলেন, "কৃষি বিলের বিষয়ে ভুল বার্তা ছড়ানো হচ্ছে । বলা হচ্ছে কৃষকরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবেন না । কিন্তু যাঁরা এই ভুল বার্তা ছড়াচ্ছেন, তাঁরা জানেন না ভারতের কৃষকরা কতটা সচেতন ।"