কলকাতা, 23 জুলাই : বাড়ি থেকে বের হচ্ছে স্কুলের পোশাক পরেই । কিন্তু স্কুলে যাচ্ছে না 14-15 বছর বয়সি ছাত্রীরা । নামী স্কুলের পড়ুয়া, অভিজাত পরিবারের ওইসব কিশোরীরা কয়েক ঘণ্টার জন্য উধাও হয়ে যাচ্ছে । এই খবর পাচ্ছেন রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্যরা । "বড় কিছু" ঘটার আগে লালবাজারের দ্বারস্থ হলেন কমিশনের এক সদস্য । অনুরোধ করলেন বিষয়টিতে নজরদারি বাড়ানোর ।
সম্প্রতি কলকাতার একটি স্কুলের শৌচাগারে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে । বালিগঞ্জ এলাকার আর এক স্কুলছাত্রী হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে । প্রতিটি ক্ষেত্রেই উঠে এসেছে পরিবারের তরফে অবহেলার অভিযোগ । সেই অবহেলা থেকেই তৈরি হচ্ছে মানসিক অবসাদ । উলটো দিকে আবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্ক স্ট্রিটের একটি নামজাদা স্কুলের সামনে থেকে ধরা হয়েছে মাদক বিক্রেতাদের । পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট বলছে, ওই মাদক বিক্রেতারা স্কুল এবং ইউনিভার্সিটির পড়ুয়াদের হাতে তুলে দিতে এসেছিল ড্রাগ । অর্থাৎ একশ্রেণির স্কুল পড়ুয়া মাদকের নেশায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে । সমাজের কাছে যা যথেষ্ট চিন্তার কারণ । এরই মাঝে আবার শিশু সুরক্ষা কমিশনের নজরে ধরা পড়েছে আরও একটি বিষয় । বাড়ি থেকে স্কুলের নামে বেরিয়ে ক্লাসে থাকছে না পড়ুয়ারা ।
কোথায় যাচ্ছে তারা?
সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই পড়ুয়ারা বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে শহরের হুক্কা বার কিংবা পাবে । সাধারণভাবে স্কুলের সময়টা এই পাব কিংবা বারগুলোতে চলে “হ্যাপি আওয়ার"। অর্থাৎ ওই সময়টায় হুক্কা কিংবা বিয়ারের উপর থাকে ডিসকাউন্ট । অন্যদিকে আবার, এর আগে শহরের বেশ কয়েকটি হুক্কা বারে মাদকচক্র চালানোর অভিযোগ উঠেছিল । পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছিল কয়েকজনকে । তবে কি সেখানে মাদকের নেশায় জড়িয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা? কমিশনের চিন্তা, এই পাব এবং বারগুলোতে কেউ কিশোর-কিশোরীদের বিপথে চালনা করছে না তো !
গতকাল লালবাজারে আসেন কমিশনের অন্যতম সদস্য কবি প্রসূন ভৌমিক । তিনি দেখা করেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মার সঙ্গে । বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন । পরে ইটিভি ভারতকে প্রসূন বলেন, “ওইভাবে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাবে না । তবে আমরা বিষয়টি লক্ষ্য করেছি । স্কুলে যাওয়ার নামে বহু কিশোরী কয়েক ঘণ্টার জন্য হারিয়ে যাচ্ছে । আমরা পুলিশকে অনুরোধ করেছি এই বিষয়টি দেখার জন্য ।" এ বিষয়ে যথাযথ নজরদারি চালানো হবে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ ।