ETV Bharat / city

Mamata's Decision on Ukraine Returnees : ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপেই রয়েছে আশার আলো, মত মমতা-অনুগামীদের

author img

By

Published : Apr 29, 2022, 7:54 PM IST

যুদ্ধের জেরে সারা দেশের বহু পড়ুয়াকে ইউক্রেন থেকে ফিরে আসতে হয়েছে ৷ ফলে অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়েছে তাঁদের ভবিষ্যৎ ৷ এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের ওই পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ যা নিয়ে প্রশংসা করছেন অনেকে (Mamata Loyalists Feel Decision on Ukraine Returnees Commendable) ৷

followers of mamata banerjee feel her decision for ukraine return students is commendable
Mamata's Decision on Ukraine Return Students : ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপেই রয়েছে আশার আলো, মত মমতা-অনুগামীদের

কলকাতা, 29 এপ্রিল : যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন (Russia-Ukraine War) প্রায় তিন মাস হল শুধু গুলি, মৃত্যু, লাশ দেখছে । জীবন সেখানে দুঃসহ । যুদ্ধের দগদগে ক্ষত সরিয়ে কবে আবার স্বাভাবিক হবে ইউক্রেন, তা কেউ জানেন না । আর সেখানে ডাক্তারি পড়তে গিয়ে জীবনের অনেকগুলো বছর কাটিয়ে ফেলেছিলেন এই রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা । হঠাৎ যুদ্ধ তাঁদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডে জল ঢেলে দেয় । ফিরে আসতে হয় বাংলায় । দেশে ফিরেও তাঁরা ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিয়তার মধ্যে ছিলেন ৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়াল পশ্চিমবঙ্গ সরকার । তাঁদের ভবিষ্যতের পথে আবার আশার আলো দেখাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Bengal CM Mamata Banerjee) সরকার ।

সমস্যাটা কিন্তু একমাত্র বাংলার নয় । ভারতবর্ষের প্রত্যেক রাজ্য কমবেশি এক রোগে ভুক্তভোগী ৷ সবচেয়ে বড় কথা ইউক্রেন ফেরত মেডিক্যালের ছাত্রছাত্রীদের এ রাজ্যের মেডিক্যাল পাঠ্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করতে গেলে প্রয়োজন ছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের (National Medical Council) ছাড়পত্রের ।

রাজ্য সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের দায়িত্ব নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছ থেকে শুধু ছাড়পত্র চেয়েছিল । কাউন্সিল অবশ্য রাজ্যকে সেই ছাড়পত্র দেয়নি । তার পরেও ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনা যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, সেই বিষয়ে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার ৷ আর সেই উদ্য়োগ দেশের অন্য রাজ্যগুলির কাছেও অনুসরণযোগ্য বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।

কী করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ?

পশ্চিমবঙ্গে ইউক্রেন ফেরত মোট মেডিক্যাল ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা 412 জন । এদের মধ্যে তিনজন ছিলেন ডেন্টাল কোর্সের পড়ুয়া । এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ছিল দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রী । এদের অধিকাংশই আর ইউক্রেনে পড়াশোনার জন্য ফেরত যেতে চান না । তাহলে এঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে ? কেন্দ্র এঁদের দায়িত্ব নেবে না, রাজ্যকেও সাহায্য করবে না ।

এই অবস্থায় উপায় বাতলে দিলেন মমতা । দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের ইউক্রেনে থাকা মেডিক্যাল কলেজগুলোতে অনলাইনে পড়াশোনার পাশাপাশি, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্র্যাকটিক্যালের সুযোগ করে দিলেন তিনি । প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের দিলেন নতুন করে রাজ্যের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ । চতুর্থ এবং পঞ্চম বছরের ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের একটা বড় অংশেরই প্রয়োজনে ইন্টার্নশিপ । তাঁদের ক্ষেত্রেও ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করল রাজ্যই ।

এখন যখন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতে রাজি নয়, সেই সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন বলে মনে করছেন অনেকে । একই সঙ্গে একাংশের মত, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি অন্য ও বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর জন্য বার্তা দিলেন যে কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী না হয়ে বসে থেকে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের ব্যবস্থা করুন ।

এদিন এই প্রসঙ্গে নারী শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী ড. শশী পাঁজা বলেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ইউক্রেন ফেরত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যা করলেন, তা গোটা দেশে আদর্শ হয়ে থাকবে । চাইলেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi) এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতে পারতেন । এটা তাঁর দায়িত্বও বটে । কিন্তু তাঁর সরকার যেভাবে এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, তার বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন এক ঝলক স্বচ্ছ অক্সিজেন ।’’

পশ্চিমবঙ্গের আরেক চিকিৎসক নেতা তথা আইএমএ-র সদস্য নির্মল মাজি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কথা রেখেছেন । কিন্তু ইউক্রেনে আটকে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের ফিরিয়ে নিয়ে আসা থেকে তাঁদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার দায়িত্ব অবশ্যই ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের । ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অনন্য নজির তৈরি করলেন, আগামিদিনে গোটা দেশ তাকে অনুসরণ করবে । বাংলায় একটা প্রবাদ আছে না, বাংলা আজ যা ভাবে, ভারত আগামিকাল তা ভাবে ৷’’

আরও পড়ুন : Mamata on Ukraine Return Students : কথা রাখলেন মমতা, ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াল রাজ্য

কলকাতা, 29 এপ্রিল : যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন (Russia-Ukraine War) প্রায় তিন মাস হল শুধু গুলি, মৃত্যু, লাশ দেখছে । জীবন সেখানে দুঃসহ । যুদ্ধের দগদগে ক্ষত সরিয়ে কবে আবার স্বাভাবিক হবে ইউক্রেন, তা কেউ জানেন না । আর সেখানে ডাক্তারি পড়তে গিয়ে জীবনের অনেকগুলো বছর কাটিয়ে ফেলেছিলেন এই রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা । হঠাৎ যুদ্ধ তাঁদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডে জল ঢেলে দেয় । ফিরে আসতে হয় বাংলায় । দেশে ফিরেও তাঁরা ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিয়তার মধ্যে ছিলেন ৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়াল পশ্চিমবঙ্গ সরকার । তাঁদের ভবিষ্যতের পথে আবার আশার আলো দেখাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Bengal CM Mamata Banerjee) সরকার ।

সমস্যাটা কিন্তু একমাত্র বাংলার নয় । ভারতবর্ষের প্রত্যেক রাজ্য কমবেশি এক রোগে ভুক্তভোগী ৷ সবচেয়ে বড় কথা ইউক্রেন ফেরত মেডিক্যালের ছাত্রছাত্রীদের এ রাজ্যের মেডিক্যাল পাঠ্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করতে গেলে প্রয়োজন ছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের (National Medical Council) ছাড়পত্রের ।

রাজ্য সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের দায়িত্ব নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছ থেকে শুধু ছাড়পত্র চেয়েছিল । কাউন্সিল অবশ্য রাজ্যকে সেই ছাড়পত্র দেয়নি । তার পরেও ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনা যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, সেই বিষয়ে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার ৷ আর সেই উদ্য়োগ দেশের অন্য রাজ্যগুলির কাছেও অনুসরণযোগ্য বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।

কী করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ?

পশ্চিমবঙ্গে ইউক্রেন ফেরত মোট মেডিক্যাল ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা 412 জন । এদের মধ্যে তিনজন ছিলেন ডেন্টাল কোর্সের পড়ুয়া । এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ছিল দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রী । এদের অধিকাংশই আর ইউক্রেনে পড়াশোনার জন্য ফেরত যেতে চান না । তাহলে এঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে ? কেন্দ্র এঁদের দায়িত্ব নেবে না, রাজ্যকেও সাহায্য করবে না ।

এই অবস্থায় উপায় বাতলে দিলেন মমতা । দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের ইউক্রেনে থাকা মেডিক্যাল কলেজগুলোতে অনলাইনে পড়াশোনার পাশাপাশি, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্র্যাকটিক্যালের সুযোগ করে দিলেন তিনি । প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের দিলেন নতুন করে রাজ্যের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ । চতুর্থ এবং পঞ্চম বছরের ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের একটা বড় অংশেরই প্রয়োজনে ইন্টার্নশিপ । তাঁদের ক্ষেত্রেও ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করল রাজ্যই ।

এখন যখন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতে রাজি নয়, সেই সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন বলে মনে করছেন অনেকে । একই সঙ্গে একাংশের মত, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি অন্য ও বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর জন্য বার্তা দিলেন যে কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী না হয়ে বসে থেকে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের ব্যবস্থা করুন ।

এদিন এই প্রসঙ্গে নারী শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী ড. শশী পাঁজা বলেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ইউক্রেন ফেরত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যা করলেন, তা গোটা দেশে আদর্শ হয়ে থাকবে । চাইলেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi) এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতে পারতেন । এটা তাঁর দায়িত্বও বটে । কিন্তু তাঁর সরকার যেভাবে এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, তার বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন এক ঝলক স্বচ্ছ অক্সিজেন ।’’

পশ্চিমবঙ্গের আরেক চিকিৎসক নেতা তথা আইএমএ-র সদস্য নির্মল মাজি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কথা রেখেছেন । কিন্তু ইউক্রেনে আটকে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের ফিরিয়ে নিয়ে আসা থেকে তাঁদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার দায়িত্ব অবশ্যই ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের । ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অনন্য নজির তৈরি করলেন, আগামিদিনে গোটা দেশ তাকে অনুসরণ করবে । বাংলায় একটা প্রবাদ আছে না, বাংলা আজ যা ভাবে, ভারত আগামিকাল তা ভাবে ৷’’

আরও পড়ুন : Mamata on Ukraine Return Students : কথা রাখলেন মমতা, ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াল রাজ্য

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.