কলকাতা, 29 মে : রেলমন্ত্রক শ্রমিক স্পেশাল নয়, কোরোনা স্পেশাল ট্রেন চালাচ্ছে ৷ আজ নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এভাবেই আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ভিনরাজ্য থেকে শ্রমিকদের পরীক্ষা না করিয়ে পাঠানো হচ্ছে ৷ ট্রেনে সামাজিক দূরত্বও মানা হচ্ছে না ৷ এভাবে কোরোনার সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না ৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যের সমস্ত ধর্মীয় স্থান 1 জুন থেকে খোলা থাকবে ৷ কিন্তু 10 জনের বেশি ভিড় করা যাবে না ৷’’
রাজ্যে যত পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন, তাঁদের মধ্যে 25 শতাংশ কোরোনা আক্রান্ত ৷ ফলে এরাজ্যে ক্রমে বাড়ছে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৷ এই পরিস্থিতির জন্য রেলমন্ত্রককে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ বলেন, ‘‘প্রথম দু’-তিন মাস আমরা কোরোনার সংক্রমণ আটকাতে পেরেছিলাম ৷ কিন্তু ভিনরাজ্য থেকে শ্রমিকরা আসতে শুরু করায় কোরোনার সংক্রমণ বাড়ছে ৷ ট্রেনে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না ৷ একটা আসনে অনেকে বসে আসছেন ৷ এতে কোরোনা ছড়িয়ে পড়ছে ৷’’ কেন্দ্র যদি সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলে তাহলে ধর্মীয় স্থান খুলে দেওয়ায় অসুবিধা কোথায়? প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘1 জুন থেকে রাজ্যের সমস্ত ধর্মীয় স্থান খুলে যাবে ৷ তবে 10 জনের বেশি মানুষ ভিড় করতে পারবে না ৷ নিয়ম না মানলে আইনি পদক্ষেপ করতে বাধ্য হব ৷’’
ধর্মীয় স্থানের পাশাপাশি 8 জুন থেকে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস 100 শতাংশ খুলবে ৷ পাট ও চা শিল্পের ক্ষেত্রে 100 শতাংশ কাজ শুরু হবে বলে আজ জানান মুখ্যমন্ত্রী ৷ কোরোনার সংক্রমণ রুখতে সাধারণ মানুষকে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি ৷ বলেন, ‘‘কম করে 6-8 ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন ৷ মাস্ক পরুন ৷ চোখ পর্যন্ত ঢেকে রাখুন ৷ সকালে উঠে যেভাবে চা খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে, সেভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন ৷’’
রাজ্যে লকডাউনের মধ্যে বাস পরিষেবা চালু হয়েছে ৷ এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, বাসের আসন সংখ্যার সমান যাত্রী উঠতে পারবেন ৷ অর্থাৎ যতগুলি আসন, ততজন যাত্রী ৷ কেউ দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন না ৷ গ্লাভস পরে উঠতে হবে ৷
কোরোনা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে ৷ সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সত্যতা যাচাই করে তবেই যেকোনও বিষয়ে বিশ্বাস করা উচিত ৷ জ্বর-সর্দি-কাশি বর্ষার সময়ও হয় ৷ কিন্তু ভয় না পেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ৷ কারণ ‘‘সব ভাইরাসই কোরোনা নয় ৷’’