কলকাতা, 3 ফেব্রুয়ারি: সম্প্রতি ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল অশান্ত হয়ে উঠেছে। বাইরের রাজ্য থেকে দুষ্কৃতীরা এসে এই কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে বলে অনেকদিন ধরেই অভিযোগ আসছিল। তাছাড়াও তৃণমূল বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর দেহরক্ষীকে মারধর এবং তাঁর গাড়িকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখানো এবং তাঁকে ঘেরাও করার ঘটনায় ইতিমধ্যেই যথেষ্ট মুখ পুড়েছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের। এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee ordered Barrackpore Police)।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সমস্ত জেলার পর্যালোচনা নিয়ে পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার কাছ থেকে তিনি জানতে চান ব্যারাকপুরে এত অশান্তি কেন? অশান্তি থামাতে এবং আইনশৃঙ্খলা ঠিকঠাক রাখার জন্য পুলিশ কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ? জবাবে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, "বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া, অন্যান্য প্রক্রিয়াগুলিও চালাচ্ছে পুলিশ।" এই কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন "শুধু এফআইআর করলে হবে না। এই ঘটনাগুলি কারা ঘটাচ্ছে তার মূলে পৌঁছতে হবে প্রশাসনকে। ঘটনার নেপথ্যে কাদের ইঙ্গিতপূর্ণ যোগ রয়েছে তাও দেখতে হবে। বাইরে থেকে দুষ্কৃতীদের ব্যারাকপুরে এনে এই কাজ করানো হচ্ছে। এই বলে তিনি মনোজ ভার্মাকে নির্দেশ দেন প্রয়োজন পড়লে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এবং স্পেশাল টাস্কফোর্সের সঙ্গে বৈঠক করতে। পাশাপাশি সাহায্য নিতে পারেন সিআইডি-র। ঘটনার মূলে কারা যুক্ত রয়েছে তাদের খুঁজে বার করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে।"
আরও পড়ুন: সীমান্ত এলাকার ট্রাক টার্মিনাসের দায়িত্ব নেবে পরিবহন দফতর, জানালেন মমতা
সূত্রের খবর, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা এবং কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলের খুব তাড়াতাড়ি একটি বৈঠক হতে পারে। মূলত বাইরের কোন কোন রাজ্য থেকে এই রাজ্যে দুষ্কৃতীরা ঢুকছে তা পর্যবেক্ষণ করার কাজ করে থাকে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এবং কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের গোয়েন্দারা। এই কাজ করতে তারা সিদ্ধহস্ত। ফলে, কোন পথ দিয়ে বাইরের রাজ্যের দুষ্কৃতীরা ব্যারাকপুরে ঢুকছে, কোথায় কোথায় তারা আত্মগোপন করে রয়েছে, কাদের মদতে তারা কাজ করছে এই সকল কিছু আগাম খবর পাওয়ার জন্য এবার ব্যারাকপুর পুলিশ সাহায্য নিতে চলেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের।
চলতি সপ্তাহেই লালবাজারে হতে পারে এই বৈঠক। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ থেকে শুরু করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের আধিকারিকরা এবং ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ এবং উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। মূলত ব্যারাকপুরের সীমানা অঞ্চলগুলির উপর আরও বেশি করে নজরদারি বাড়াতে চায় পুলিশ প্রশাসন। শুধুমাত্র স্থানীয় সোর্স মারফতের উপর ভরসা করে কোনও কাজ হবে না। এই বুঝেই এবার ব্যারাকপুর সংলগ্ন ভাটপাড়া এবং কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের উপর বিশেষভাবে নজরদারি বাড়াতে চায় ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট।