ETV Bharat / city

Mamata Banerjee: উত্তর কলকাতার মানুষকে পুজোর উপহার মুখ্যমন্ত্রীর, খুলে গেল টালা ব্রিজ - মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রায় আড়াই বছর পর ফের খুলল টালা ব্রিজ (Tala Bridge) ৷ বৃহস্পতিবার নতুন করে তৈরি করা এই ব্রিজের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ৷

mamata-banerjee-inaugurates-reconstructed-tala-bridge
Mamata Banerjee: উত্তর কলকাতার মানুষকে পুজো উপহার মুখ্যমন্ত্রীর, খুলে গেল টালা ব্রিজ
author img

By

Published : Sep 22, 2022, 7:39 PM IST

কলকাতা, 22 সেপ্টেম্বর : উত্তর কলকাতাকে পুজোর উপহার । আড়াই বছর বাদে খুলে গেল টালা ব্রিজ (Tala Bridge) । তাও আবার পুজোর ঠিক আগেই । বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীবারে টালা ব্রিজের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) । আর উত্তর কলকাতার মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন, এটাই উত্তর কলকাতার মানুষের জন্য তাঁর পুজো উপহার ।

প্রসঙ্গত, 2018 সালের 4 সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের (Majherhat Bridge Collapse) পর রাজ্যের সব সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করার কাজে হাত দেয় রাজ্য সরকার । সেই সময় টালা সেতুরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা পূর্ত দফতরকে জানায়, সেতুটি অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে । সেতুর গায়ে একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে । তাই এই ব্রিজ ভেঙে ফেলা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই । এরপরই 2020 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিজ ভাঙার কাজ শুরু হয় । 2022 সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার টার্গেট থাকলেও করোনার জন্য অনেক কাজ পিছিয়ে যায় । অবশেষে সেপ্টেম্বরের 22-এ উদ্বোধন হল এই সেতু ।

এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee), মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মন্ত্রী শশী পাঁজা-সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিরা । এখানেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, মোট 504 কোটি টাকা ব্যয় এই সেতু তৈরি করা হয়েছে । আড়াই বছরের কম সময়ে পূর্ত দফতরের উদ্যোগে এই সেতু আগেরবারের থেকেও চওড়া আর চার লেনের হয়েছে । তবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আপাতত এই ব্রিজ থেকে ভারী গাড়ি চলবে না ।

এ দিন এই মঞ্চ থেকে সেতু সংস্কারের জন্য গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য রেলকে টাকা দিতে হচ্ছে বলে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেন । তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম রেল তার অংশের ব্রিজ ভাঙার কাজটা ফ্রিতে করে দেবে । আমাদের ব্রিজ ভাঙার জন্য টাকা দিতে হয়েছে, আবার গড়ার জন্য টাকা দিতে হয়েছে ।’’ মমতার দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, পুরনো ব্রিজ ভাঙার জন্য রেল নিয়েছে প্রায় 90 কোটি টাকা । মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙতে খরচ হয়েছিল 34 কোটি টাকা দিতে হয়েছে ।

এদিন এই অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে বিগত সময়ে তাঁর শাসনে কী কী উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে, তার একটা ফিরিস্তি দেন মুখ্যমন্ত্রী । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায়, ‘‘গত 11 বছরে আমরা বহু পরিকাঠামো নির্মাণ করেছি । মা উড়ালপুলে আমরা খরচ করেছি 445 কোটি টাকা । কামালগাজি উড়ালপুলে 100 কোটি টাকা, ভিআইপি, দক্ষিণেশ্বরে প্রচুর খরচ করা হয়েছে । রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কলকাতার জন্য সব রেল প্রকল্পগুলি পাস করিয়ে দিয়েছিলাম । আশা করছি আগামিদিনে ওইসব প্রকল্প শেষ হলে ট্রাফিক জ্যাম কমে যাবে । আগে যখন বাড়ি থেকে বিমানবন্দর যেতাম, তখন সময় লাগত 1 ঘণ্টা । এখন লাগে 20 মিনিট । রাজ্যে একাধিক এয়ারপোর্ট হচ্ছে । কপ্টার সার্ভিস চালু হয়েছে । ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়ে যাবে ।’’

রেল কলোনির মানুষদের পুনর্বাসন দিতে গিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী রেলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘এখানে শ’দেড়েক গরিব মানুষ রয়েছে । ওদের জন্য আমরা রেলের একটি খালি জমি কিনতে চাই । আপনারা যদি ওই জমি দেন, তাহলে ওখানে ওইসব লোকের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেব । তা না হলে খালের ধারে ওদের আমাকে রাখতে হবে । আর একটা কথা, দেখছি পাড়ায় হঠাৎ করে কিছু দোকান বসে যাচ্ছে । প্রশাসন কিছু করছে না । রাস্তার সবটাই যদি দখল হয়ে যায়, তাহলে চলব কী করে ? অনেক হয়েছে আর নয় ।’’

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেপুটি মেয়র তথা স্থানীয় বিধায়ক অতীন ঘোষের উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার লড়াই নিয়ে মস্করা করতে ছাড়েননি । তিনি বলেন, ‘‘সব সময় তোমার অভিযোগ থাকে আমি নাকি দক্ষিণ কলকাতার জন্য সবকিছু করি । এবার পুজো উদ্বোধন কিন্তু আমি উত্তর কলকাতা থেকেই করলাম । দুর্গা পুজোর মিছিলও আমি উত্তর কলকাতা থেকেই করেছি । কয়েকদিন আগে উত্তর কলকাতাতেই জৈন মন্দিরে আমি এসেছিলাম । অতএব উত্তর কলকাতা দক্ষিণ কলকাতা নয়, আমরা বৃহত্তর বাংলার কথা ভাবব ।’’

আরও পড়ুন : 'সুজিতবাবু', পুজোর জন্য যেন রাস্তা বন্ধ না হয় ! হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

কলকাতা, 22 সেপ্টেম্বর : উত্তর কলকাতাকে পুজোর উপহার । আড়াই বছর বাদে খুলে গেল টালা ব্রিজ (Tala Bridge) । তাও আবার পুজোর ঠিক আগেই । বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীবারে টালা ব্রিজের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) । আর উত্তর কলকাতার মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন, এটাই উত্তর কলকাতার মানুষের জন্য তাঁর পুজো উপহার ।

প্রসঙ্গত, 2018 সালের 4 সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের (Majherhat Bridge Collapse) পর রাজ্যের সব সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করার কাজে হাত দেয় রাজ্য সরকার । সেই সময় টালা সেতুরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা পূর্ত দফতরকে জানায়, সেতুটি অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে । সেতুর গায়ে একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে । তাই এই ব্রিজ ভেঙে ফেলা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই । এরপরই 2020 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিজ ভাঙার কাজ শুরু হয় । 2022 সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার টার্গেট থাকলেও করোনার জন্য অনেক কাজ পিছিয়ে যায় । অবশেষে সেপ্টেম্বরের 22-এ উদ্বোধন হল এই সেতু ।

এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee), মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মন্ত্রী শশী পাঁজা-সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিরা । এখানেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, মোট 504 কোটি টাকা ব্যয় এই সেতু তৈরি করা হয়েছে । আড়াই বছরের কম সময়ে পূর্ত দফতরের উদ্যোগে এই সেতু আগেরবারের থেকেও চওড়া আর চার লেনের হয়েছে । তবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আপাতত এই ব্রিজ থেকে ভারী গাড়ি চলবে না ।

এ দিন এই মঞ্চ থেকে সেতু সংস্কারের জন্য গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য রেলকে টাকা দিতে হচ্ছে বলে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেন । তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম রেল তার অংশের ব্রিজ ভাঙার কাজটা ফ্রিতে করে দেবে । আমাদের ব্রিজ ভাঙার জন্য টাকা দিতে হয়েছে, আবার গড়ার জন্য টাকা দিতে হয়েছে ।’’ মমতার দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, পুরনো ব্রিজ ভাঙার জন্য রেল নিয়েছে প্রায় 90 কোটি টাকা । মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙতে খরচ হয়েছিল 34 কোটি টাকা দিতে হয়েছে ।

এদিন এই অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে বিগত সময়ে তাঁর শাসনে কী কী উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে, তার একটা ফিরিস্তি দেন মুখ্যমন্ত্রী । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায়, ‘‘গত 11 বছরে আমরা বহু পরিকাঠামো নির্মাণ করেছি । মা উড়ালপুলে আমরা খরচ করেছি 445 কোটি টাকা । কামালগাজি উড়ালপুলে 100 কোটি টাকা, ভিআইপি, দক্ষিণেশ্বরে প্রচুর খরচ করা হয়েছে । রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কলকাতার জন্য সব রেল প্রকল্পগুলি পাস করিয়ে দিয়েছিলাম । আশা করছি আগামিদিনে ওইসব প্রকল্প শেষ হলে ট্রাফিক জ্যাম কমে যাবে । আগে যখন বাড়ি থেকে বিমানবন্দর যেতাম, তখন সময় লাগত 1 ঘণ্টা । এখন লাগে 20 মিনিট । রাজ্যে একাধিক এয়ারপোর্ট হচ্ছে । কপ্টার সার্ভিস চালু হয়েছে । ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়ে যাবে ।’’

রেল কলোনির মানুষদের পুনর্বাসন দিতে গিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী রেলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘এখানে শ’দেড়েক গরিব মানুষ রয়েছে । ওদের জন্য আমরা রেলের একটি খালি জমি কিনতে চাই । আপনারা যদি ওই জমি দেন, তাহলে ওখানে ওইসব লোকের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেব । তা না হলে খালের ধারে ওদের আমাকে রাখতে হবে । আর একটা কথা, দেখছি পাড়ায় হঠাৎ করে কিছু দোকান বসে যাচ্ছে । প্রশাসন কিছু করছে না । রাস্তার সবটাই যদি দখল হয়ে যায়, তাহলে চলব কী করে ? অনেক হয়েছে আর নয় ।’’

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেপুটি মেয়র তথা স্থানীয় বিধায়ক অতীন ঘোষের উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার লড়াই নিয়ে মস্করা করতে ছাড়েননি । তিনি বলেন, ‘‘সব সময় তোমার অভিযোগ থাকে আমি নাকি দক্ষিণ কলকাতার জন্য সবকিছু করি । এবার পুজো উদ্বোধন কিন্তু আমি উত্তর কলকাতা থেকেই করলাম । দুর্গা পুজোর মিছিলও আমি উত্তর কলকাতা থেকেই করেছি । কয়েকদিন আগে উত্তর কলকাতাতেই জৈন মন্দিরে আমি এসেছিলাম । অতএব উত্তর কলকাতা দক্ষিণ কলকাতা নয়, আমরা বৃহত্তর বাংলার কথা ভাবব ।’’

আরও পড়ুন : 'সুজিতবাবু', পুজোর জন্য যেন রাস্তা বন্ধ না হয় ! হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.