কলকাতা, 25 জানুয়ারি : গত 12 জানুয়ারি থেকে সল্টলেকে চলছে মাদ্রাসা শিক্ষকদের লাগাতার অবস্থান। অবস্থান চলাকালীন শুরু হওয়া অনশনেরও আজ দশম দিন। দাবি আদায় তো দূরস্থান, এখনও আলোচনার ডাক আসেনি রাজ্য সরকারের তরফে। এরই মধ্যে একে একে একাধিক অনশনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বর্তমানে তিনজন হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুই শিক্ষিকার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকায় দেওয়া হচ্ছে অক্সিজেন।
হাইকোর্টের অনুমতিক্রমে শিক্ষকদের বেতন ও ছাত্র-ছাত্রীদের যাবতীয় সরকারি সুবিধার দাবিতে সল্টলেকে সিটি সেন্টারের অদূরে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি অনুমোদিত আন-এডেড মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকার লাগাতার অবস্থানের আজ 14 তম দিন, অনশনের দশম দিন। অনশন শুরুর পর থেকেই অসুস্থ হতে থাকেন অনশনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। একজন শিক্ষক এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করে কিছুটা সুস্থ করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় সংগঠনের তরফে। তারপর 20 জানুয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়েন মুর্শিদাবাদ জেলার দুই শিক্ষিকা সোনিয়া পারভিন ও জর্জিয়া জোহানা। তাঁদের বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সেদিন।
গতকাল থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে ওই দুই শিক্ষিকার। আরও একজন অনশনকারী শিক্ষক, হুগলির শেখ আশরাফুল অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি বলে জানাচ্ছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। তাঁরা জানান, গতকাল ক্রমশ শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে ওই দুই শিক্ষিকার। শ্বাসকষ্ট, শরীরে খিঁচুনির মতো উপসর্গ দেখা যায়। এমনকী, কষ্টে ছটফট করতেও দেখা যায় জর্জিয়া জোহানা নামের ওই শিক্ষিকাকে। গতকাল থেকেই ওই দুই শিক্ষিকাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
আজ সকালেই ওই দুই শিক্ষিকাকে নীলরতন বা এসএসকেএম হাসপাতালে ট্রান্সফার করতে বলা হয়েছে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালের তরফে। এবিষয়ে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শেখ জাভেদ মিয়াঁদাদ বলেন, "আমাদের দুই শিক্ষিকার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিক্ষিকাদের গুরুতর অবস্থার কথা ভেবে এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করেছেন। হাসপাতাল বলছে আমাদের অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হবে৷ কিন্তু অন্য হাসপাতালে ভরতির দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। আমরা হাসপাতালকে বলেছি তাদেরই এই দায়িত্ব নিতে হবে। তারা ভরতির করানোর রিস্ক নিতে রাজি নয়। তাই আমাদের দুই শিক্ষিকা আপাতত বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালেই ভরতি রয়েছেন।"
আরও পড়ুন : "একটা ছবিই হাজারটা শব্দ বলে দেয়", মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ শুভেন্দুর
এসবের মধ্যেও চলছে রাজ্যের সরকারি অনুমোদিত আন-এডেড মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনশন-অবস্থান। বর্তমানে তাঁদের মধ্যে 12 জন অনশন করছেন। শেখ জাভেদ মিয়াঁদাদ বলেন, "মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা। আমাদের দুইজন শিক্ষিকা হাসপাতালে ভরতি আছেন। মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মাদ্রাসা বোর্ডের পূর্ণমন্ত্রী। তাও আমাদের এখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে রেখেছেন। শিক্ষিকাদের কোনও রূপ পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না। মাননীয়া আমাদের কাছে কী চাইছেন? তিনি কি চান যে ওই দুই শিক্ষিকা অনশন করতে করতে মারা যাক? উনি কী সংখ্যালঘু শিক্ষকদের মৃতদেহ দেখতে চাইছেন? আমরা চাই ওরা আমাদের সঙ্গে বসে একটা সমাধানে বসুক। আমরা আলোচনার টেবিল চাই। আলোচনায় বসতে চাই।"